|
|
|
|
নথিভুক্ত ক্লাব ৪৮টি, খেলে মাত্র ৯টি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
রাত জেগে কোপা আমেরিকা কিংবা ইউরো কাপ দেখায় ব্যাপক উৎসাহ। ভোর রাতে খেলা দেখতে ঘড়িতে অ্যালার্ম দিতে ভোলে না কেউ। খেলার পর তা নিয়ে চলে তুমুল তর্ক, আলোচনা। এরই সঙ্গে স্থানীয় লিগ খেলার জন্য মাঠে নামলেই তো হয়! না, তাতে আগ্রহ নেই কারও।
অনীহা শুধু ফুটবল খেলায়। নিজের ক্লাব তৈরি করতে আগ্রহী নয় কেউ। ফলে অন্তত ৪৮টি রেজিস্টার্ড ক্লাবের মধ্যে নবদ্বীপ ফুটবল লিগ খেলছে ৮-৯টি ক্লাব। সম্প্রতি চারটি দল নিয়ে কোনও রকমে শেষ হয়েছে সাবজুনিয়র ফুটবল লিগ। ৯টি দল নিয়ে চলছে জুনিয়র ডিভিশন লিগ। দ্বিতীয় ডিভিশনে ৬টি এবং প্রথম ডিভিশনে নাম নথিভুক্ত করেছে ৮টি দল। নবদ্বীপ ফুটবলের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে নবদ্বীপ ফুটবল লিগ বন্ধ হয়ে যাবে।
এর মধ্যে ২০০২ থেকে নবদ্বীপের নদিয়া ক্লাব বাইরে থেকে প্রশিক্ষক এনে নিজেদের মাঠে ফুটবল কোচিং ক্যাম্প চালাচ্ছিল। এই মরসুম থেকে তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন? নদিয়া ক্লাবের সম্পাদক এবং নবদ্বীপ আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার প্রাক্তন সম্পাদক গোবিন্দ বাগ বলেন, “ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে সারা বছর ধরে যাদের তৈরি করেছিলাম তাঁদের বেশি টাকা দিয়ে কৃষ্ণনগরের ক্লাবগুলি নিয়ে যাচ্ছে। নবদ্বীপের ক্লাব অত টাকা দিতে পারছে না। তা হলে শিবির করে লাভ কি! তাই এ বার থেকে শিবির কম। আমাদের দলের সিনিয়র খেলোয়াড়েরা ছোটদের প্রশিক্ষণ দেবেন।”
নবদ্বীপ আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সহ সম্পাদক লাল্টু ভুঁইয়া বলেন, “সাব-জুনিয়র অথবা জুনিয়র যে কোনও একটা লিগ না খেললে প্রথম ডিভিশন লিগ খেলা যায় না। তাই নিয়ম রক্ষার্থে দলগুলি নাম নথিভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে বড় জোড় ১০টি ক্লাব ফুটবল খেলে। বাকিগুলি ভলি লিগ খেলেই নিয়ম রক্ষা করছে। রেজিস্ট্রেশন রাখতে কোনও একটা লিগ খেলতেই হয়। সেক্ষেত্রে ভলি লিগ খেলা সবচেয়ে সস্তা এবং কম ঝামেলার।” তিনি বলেন, “৮-১০ বছর আগেও নবদ্বীপ লিগে ১০০-১৫০ ছেলে দলবদল করত। এ বার সেখানে সব মিলিয়ে মাত্র ১৬ জন দলবদল করেছে।” নবদ্বীপের আটটি ফুটবল মাঠের মধ্যে কোনওটি খেলার উপযুক্ত নয়।
নবদ্বীপ উদয়ন সংঘের কোচ মনোজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সাব-জুনিয়র, জুনিয়র দলগুলি খেলোয়াড় যোগানের সাপোর্ট লাইন। সেই ছোটদের দলই কেউ তৈরি করছেন না। ফলে এখন বড়দের দলটা খেলা ছেড়ে দিলেই সব থেমে যাবে। আর ফুটবলার খুঁজে পাওয়া যাবে না। তা ছাড়া অভিভাবকেরাও চাইছেন না যে ছেলেরা ফুটবল খেলুক।” ক্লাবকর্তারা জানান, এখানে কোনও পরিকাঠামো নেই। যদি কেউ ফুটবল খেলতে চায় সে কি ভাবে খেলা শিখবে তার হদিস নেই। লাল্টুবাবু বলেন, “এতদিন পর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে দরবার করে একটা ফুটবল শিবিরের অনুমোদন করাতে পেরেছি। চলতি মরসুমে শীঘ্রই সেখানে সাব-জুনিয়র এবং জুনিয়দের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে।” প্রশ্ন একটাই, আধুনিক ফুটবলের সঙ্গে পাল্লা দিতে ওই শিবির যথেষ্ট তো? |
|
|
|
|
|