|
|
|
|
উন্নয়নের বৈঠকে ডাক নেই, ক্ষুব্ধ সভাধিপতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মন্ত্রীরা আসছেন। জেলার উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক হচ্ছে। সংশিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা সেখানে থাকছেন। কিন্তু ডাক পাচ্ছেন না জেলা পরিষদের সভাধিপতিই। এতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএম সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, “উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠকে জেলা পরিষদের প্রতিনিধি থাকছেন না। এতে কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশ কিছু পঞ্চায়েতে কাজ করার পরিবেশ নেই। বৈঠকে ডাকলে পুরো বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করা যেত। তা হলে উন্নয়নের কাজ করতেও সুবিধে হত।” জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, যে সব পঞ্চায়েতে কাজের পরিবেশ নেই, প্রধানরা অফিসে যেতে পারছেন না, তার একটি তালিকা শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠাবেন সভাধিপতি। পাশাপাশি, উন্নয়ন-সংক্রান্ত বৈঠকে জেলা পরিষদের প্রতিনিধিত্ব না থাকার বিষয়টিও জানাবেন তিনি। রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের নতুন সরকারের একের পর এক মন্ত্রী জেলায় এসেছেন। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহল সফরে এসেছেন। এসেছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পূর্তমন্ত্রী সুব্রত বক্সী, ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। জঙ্গলমহলে এসে নানা উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন মন্ত্রীরা। হচ্ছে উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক। কিন্তু সভাধিপতিকে কোনও বৈঠকেই ডাকা হচ্ছে না। ব্যতিক্রম শুধু বিদ্যুৎ দফতরের সাম্প্রতিক একটি বৈঠক। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদার পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত ছিলেন সভাধিপতি অন্তরাদেবী। তবে কি সিপিএমের সভাধিপতি হওয়াতেই ‘ব্রাত্য’ থাকছেন অন্তরাদেবী? সিপিএম নেতৃত্বের মতে, বাম সরকারের আমলে ‘আমরা-ওরা’র অভিযোগ তুলত তৃণমূল। এখন তো তৃণমূলের সরকারই বিভাজন, পক্ষপাতিত্ব দেখাচ্ছে! বিধানসভা ভোটের পর থেকেই জেলার বেশ কিছু পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। রাজ্যে তৃণমূলের সরকার, আর অধিকাংশ পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলেএই বৈপরীত্যের জেরেই সঙ্কট। যেমন, কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তড়িৎ খাটুয়া দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া। কোথাও কোথাও আবার জোর করে সিপিএম প্রধানদের ইস্তফা দেওয়ানোর অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বাস্তব্যে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, প্রায় দু’মাস হল রাজ্যে নতুন সরকার এলেও পশ্চিম মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত-জট কাটেনি। সভাধিপতি বলেন, “জেলার ১৬টি পঞ্চায়েতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হচ্ছে না। সমস্যার কথা কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়েছে।” গ্রামোন্নয়নে পঞ্চায়েতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বভাবতই পঞ্চায়েতে অচলাবস্থায় উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। জেলা পরিষদের এক আধিকারিকের কথায়, “এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দফতরের স্থায়ী সমিতির বৈঠক হয়েছে। কিন্তু বৈঠকের সিদ্ধান্ত তো কার্যকর করতে হবে। পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা থাকলে তা হবে কী করে? ফলে গ্রামোন্নয়নের জন্য আগে পঞ্চায়েতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।” উন্নয়ন-সংক্রান্ত সরকারি বৈঠকে জেলা পরিষদের প্রতিনিধিত্ব থাকলে উন্নয়নের কাজ আরও দ্রুত করা সম্ভব বলেই মনে করছেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা না হওয়ায় ক্ষোভ জমছে। |
|
|
|
|
|