|
|
|
|
লড়াই চালিয়ে যাবেন পরেশ,
প্রকাশ্যেই আলফার ‘শহিদ দিবস’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
এক দিকে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানের অঙ্গীকার, অন্য দিকে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও বাসে টাইম বোমা। এই বৈপরীত্যের মধ্যে দিয়েই আজ অসমে ‘পালিত’ হল আলফার ‘শহিদ দিবস’। সভাপতি অরবিন্দ রাজখোয়া, সহ-সভাপতি প্রদীপ গগৈ, বিদেশ সচিব শশধর চৌধুরি, অর্থ সচিব চিত্রবন হাজরিকা, রাজনৈতিক উপদেষ্টা ভীমকান্ত বুঢ়াগোহাই, সহকারী সেনাধ্যক্ষ রাজু বরুয়া, সংস্কৃতি সচিব প্রণতি ডেকা-সহ কেন্দ্রীয় কমিটির সাত সদস্যই এখন মুক্ত। তাই আজ কাকোপথার শিবিরে আলফার শহিদ দিবসে রীতিমতো কুচকাওয়াজ ও অনুষ্ঠানের সমারোহ।
সাড়ে ১২ হাজার তরুণের রক্তের বিনিময়েও অসমের এক ইঞ্চি মাটি ‘স্বাধীন’ করতে পারেননি রাজখোয়ারা। সেই সত্য উপলব্ধি করে রাজখোয়া আজ বলেন, “নিরস্ত্র গণতান্ত্রিক আন্দোলন সশস্ত্র সংগ্রামের থেকে অনেক বেশি কঠিন। প্রতি পদে ষড়যন্ত্র, উস্কানি, অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা প্রবল। তাই মেপে পা ফেলতে হবে।” এ বারের শহিদ দিবসে লুকিয়ে নয়, প্রকাশ্যে আম জনতা ও প্রশাসনকে সাক্ষী রেখে পতাকা ওড়ালেন আলফা নেতারা। রাজখোয়া বলেন, “সম্মিলিত জাতীয় অধিবেশনে, অসমের মানুষ ও বিশিষ্টজনেরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা মেনে নিয়েই গত সাত মাস ধরে শান্তি প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। তারই ফলে আজ অসমের মানুষের সঙ্গে মুক্তভাবে মত বিনিময় করতে পারছি আমরা। এই সৌহার্দ্য স্থাপনে অনেক দাম দিতে হয়েছে।”
রাজখোয়ার মতে, ১০৬ বার ভারতের সংবিধান সংশোধন করা হলেও অসমের স্বাধীন অস্তিত্ব কোনও গুরুত্ব পায়নি। পরবর্তী সংশোধনীতেও অসমের অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত হবে সেই ভরসা নেই।
তবে, ভারত সরকার যখন নিজে থেকে আলফা সঙ্গে আলোচনা করে অসমের অস্তিত্ব ও বৈশিষ্ট্য রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তখন সংঘর্ষ শেষ করে শান্তির পথে আস্থা রাখা উচিত। কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী পি সি হালদারও গুয়াহাটি এসে জানিয়েছেন, আগামী মাসেই আলফার সঙ্গে কেন্দ্রের শান্তি আলোচনা শুরু হবে।
কিন্তু, সভাপতি সন্ত্রাস শেষ করার পক্ষে মত দিলেও ‘বিদ্রোহী’ ও ‘সংগ্রামপন্থী’ সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়া শান্তির পথে হাঁটতে নারাজ। তিনি সাফ বলছেন, ‘শত্রু শিবিরে আশ্রয় নিয়ে শান্তি বা আপসের কথা বলার কোনও অধিকার রাজখোয়ার নেই। সাড়ে ১২ হাজার শহিদ স্বাধীন অসমের জন্য রক্ত ঝরিয়েছেন। তাঁদের রক্তকে সম্মান দিতে লড়াই জারি থাকবে।”
যুদ্ধ জারি রাখার হুঙ্কার দেওয়ার সঙ্গেই, টিহু থানার সামনে কাল রাতে গ্রেনেড ফাটায় পরেশপন্থী আলফা জঙ্গিরা। এরপর, আজ ভোরে ডিব্রুগড়ের চাবুয়া চারিয়ালিতে ফের গ্রেনেড ফাটানো হয়। ক্ষতিগ্রস্থ হয় কয়েকটি দোকান। সব থেকে বড় বিপদ এড়ায় ধুবুরি। আজ সকালে ধুবুরি-কোচবিহার রোডে একটি বাস থেকে ২ কিলো ওজনের টাইম বোমা উদ্ধার করা হয়। নিরাপদ জায়গায় সেটিকে ফাটান বোমা বিশেষজ্ঞরা। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ জানান, অসমের বেশ কিছু মন্ত্রী ও বিধায়ককে নিশানা করেছে জঙ্গিরা। স্বাধীনতা দিবসের আগে, পরেশপন্থীরা অসমে বড় ধরনের সন্ত্রাসের ছক কষছে। |
|
|
|
|
|