|
|
|
|
আহত সাত ভাতারে |
ট্রাকের ধাক্কায় মৃত পাঁচ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ভাতার |
গঙ্গাস্নান সেরে ফেরার সময়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দুই মহিলা-সহ পাঁচ জনের। বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ বর্ধমান-কাটোয়া রাস্তায় ভাতারের মোল্লাপাড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। কাটোয়ায় গঙ্গাস্নান সেরে ম্যাটাডরে চড়ে ফিরছিলেন ওই যাত্রীরা। একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে সেটির।
পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম সুজন হাজরা (৩০), মৌ হাজরা (১৩), যমুনা হাজরা (৬৭), চিন্ময় হাজরা (১৪) ও ম্যাটাডরের চালক রওফুল ইসলাম (২৫)। প্রথম চার জনের বাড়ি ভাতারের কর্জনা গ্রামে। রওফুলের বাড়ি বর্ধমানের খেতিয়ার তেঁতরাল গ্রামে। এই দুর্ঘটনায় সাত জন গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পাঁচ জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও দু’জনকে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কর্জনা গ্রামে ৪ অগস্ট থেকে মনসা পুজো হয়। এই পুজো শুরুর আগে গ্রামের মানুষের গঙ্গাস্নানে যাওয়ার রীতি রয়েছে। এ দিন অবশ্য সেই স্নানে যাওয়ার ব্যাপারে আগে থেকে কোনও পরিকল্পনা ছিল না। ম্যাটাডরের মালিক, দুর্ঘটনায় নিহত সুজনের বাবা নেপাল হাজরা জানান, গ্রামের বাসিন্দা তথা বনকাপাশি পঞ্চায়েতের কর্মী বনমালী হাজরা তাঁর বাড়িতে গভীর নলকূপ বসানোর কাজ করছেন। নেপালবাবু বলেন, “কাটোয়া থেকে সেই নলকূপের যন্ত্রপাতি কেনার জন্য তিনি আমার ছেলের ম্যাটাডরটি ভাড়া নেন। ম্যাটাডর কাটোয়া যাচ্ছে শুনে তাঁর পরিবার-সহ গ্রামের কয়েক জন গঙ্গাস্নানে যাওয়ার জন্য তাতে চড়ে বসেন। ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে।” |
|
দুর্ঘটনার পরে। বুধবার ছবিটি তুলেছেন উদিত সিংহ। |
বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তালগোল পাকানো ম্যাটাডর ও ট্রাকটি পড়ে রয়েছে রাস্তার পাশের নয়ানজুলিতে। ক্রেন দিয়ে সেগুলিকে সরিয়ে ফেলার কাজ চলছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় কুলনগর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জীব দত্ত বলেন, “একটি কাটোয়া-বর্ধমান রুটের বাসকে পাশ কাটাতে গিয়ে ট্রাকটি রাস্তার উল্টো দিকে চলে যায়। তখনই সেটি গিয়ে ম্যাটাডরটিকে ধাক্কা মারে।” ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পাঁচ জনের। জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান এলাকার বাসিন্দারা।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বনমালীবাবুর মা যমুনাদেবী ও ছেলে চিন্ময়ের। বনমালীবাবু ও তাঁর ভাই বোধন গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আহত পাঁচ জনেরই মাথায় আঘাত লেগেছে। ৭২ ঘণ্টার আগে তাঁদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। দুর্ঘটনায় জখম প্রবীর হাজরা বলেন, “খুব ভোরে আমরা স্নানে গিয়েছিলাম। তাই ফেরার সময়ে প্রায় সকলেই ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলান। আচমকা প্রচণ্ড ধাক্কায় ছিটকে পড়ি।” জখমদের প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ মাজির অভিযোগ, “ ঘটনার ঘণ্টাখানেক পরে আহতদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার পরেও কোনও চিকিৎসা শুরু না করে তাঁদের জরুরি বিভাগের ট্রলির উপরেই শুইয়ে রাখা হয়। শেষে গ্রামের মানুষ চেঁচামেচি শুরু করলে চিকিৎসকেরা নড়ে বসেন।” পুলিশ জানায়, ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক। |
|
|
|
|
|