|
|
|
|
সিপিএমের পাশে তৃণমূল |
বাড়িতে অস্ত্রশস্ত্র পেয়েও শিক্ষককে ছেড়ে দিল পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষিতে ব্যতিক্রমী ঘটনা, সন্দেহ নেই।
বাড়িতে অস্ত্র রাখার অভিযোগে ধৃত বামপন্থী শিক্ষক-নেতাকে ছাড়াতে সিপিএমের সঙ্গে একযোগে রাস্তায় নামল তৃণমূল। সঙ্গে কাটোয়ার কদমপুকুর সিনিয়র হাইমাদ্রাসার পড়ুয়া এবং শিক্ষকেরা। প্রথমে রাজ্য সড়ক অবরোধ, পরে বাস ভাড়া করে সোজা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ। বুধবার দুপুরে পুলিশ শেখ মহম্মদ আবু সিদ্দিকি নামে ওই শিক্ষককে ছেড়ে দেয়। তবে তাঁর ভাই, পেশায় হাতুড়ে আরশেদ নবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পুলিশের এই ভূমিকায় কংগ্রেস স্পষ্টতই খুশি নয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাটোয়ায় সিপিএমের শ্রীখণ্ড-২ শাখা সংগঠনের সদস্য আবু সিদ্দিকির বাড়ি স্থানীয় গাঙ্গুলিডাঙা গ্রামে। শ্রীখণ্ড পঞ্চায়েত কংগ্রেসের দখলে থাকলেও সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই ওই এলাকায় তৃণমূলের শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছে। সিপিএমের একাংশ ভিতরে ভিতরে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকে গিয়েছে বলেও খবর। মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিশ গাঙ্গুলিডাঙায় সিদ্দিকির বাড়িতে হানা দিয়ে আটটি বোমা ও একটি মাস্কেট পায়। সিদ্দিকি ও নবিকে ধরা হয়। কিন্তু ইংরেজি শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে এ দিন সকাল ৭টা থেকে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে হাইমাদ্রাসার পড়ুয়ারা। সঙ্গে গাঙ্গুলিডাঙার বাসিন্দাদের একাংশ। কিছুক্ষণের মধ্যে স্থানীয় সিপিএম এবং তৃণমূল সমর্থকেরাও পথে নামেন। বর্ধমান, কাটোয়া, বোলপুর, গুসকরা যাওয়ার বহু বাস আটকে যায়। |
|
ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আবু সিদ্দিকি। বুধবার কাটোয়ায়। অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় |
বেলা ১০টা নাগাদ পুলিশ গেলে অবরোধকারীরা দাবি করেন, ষড়যন্ত্র করে শিক্ষককে ফাঁসানো হয়েছে। পুলিশ তাঁদের আলোচনার জন্য থানায় ডাকে। খানিক বাদে একটি বাসে শ’দেড়েক পড়ুয়াকে নিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক ও স্থানীয় শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকারা থানায় যান। পিছনে যান দুই দলের নেতারা। হাইমাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মহম্মদ জাকিরউদ্দিন অভিযোগ করেন, “আবু সিদ্দিকির কাছে দুষ্কৃতীরা টাকা দাবি করেছিল। তিনি তা না দেওয়াতেই তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।” সরাসরি কারও নাম না করলেও সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সদস্য কমল ঠাকুরের দাবি, “রাজনৈতিক কারণেই আমাদের শিক্ষক-নেতাকে ফাঁসানো হয়েছে।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলা সহ-সভাপতি কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় বলেন, “হতে পারেন উনি সিপিএম নেতা, ওঁকে অন্যায় ভাবে ধরা হয়েছে বলেই আমরা প্রতিবাদ করেছি।” এসডিপিও (কাটোয়া) জ্যোতির্ময় রায়ের উপস্থিতিতে দীর্ঘ বৈঠকের পরে তদন্তের কাজে সহযোগিতার লিখিত প্রতিশ্রুতি নিয়ে পুলিশ সিদ্দিকিকে ছেড়ে দেয়। তাঁর কথায়, “এ রকম কেন হল, বুঝলাম না।” কাঞ্চনবাবুর মতে, “ওঁকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশ মেনে নিল, তারা ভুল লোককে গ্রেফতার করেছিল।” যদিও শ্রীখণ্ড পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান দীপক মজুমদারের দাবি, “পুলিশ রাজনৈতিক চাপের কাছে মাথা নত করল।” এসডিপিও বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমাদের ধারণা, বোমা-বন্দুক রাখার পিছনে শিক্ষকের হাত ছিল না, ছিল তাঁর ভাইয়ের। তাই ওঁকে ছাড়া হয়েছে।” |
|
|
|
|
|