|
|
|
|
রাতপাহারায় বল্লম-বাঁশি দিল পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
চুরি ঠেকাতে না পেরে বাসিন্দাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিল পুলিশ। বল্লম, লাঠি, টর্চ তুলে দিয়ে রাত পাহারার উপদেশ দিচ্ছেন অসহায় বালুরঘাট থানার আইসি। বাসিন্দারাও ঘর সামলাতে হাতে তুলে নিয়েছেন পুলিশের দেওয়া বাঁশি, বল্লম। বালুরঘাট থানার অদূরে চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এ ঘটনায় শহর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতের আরএসপি প্রধান উত্তম মোহান্ত বলেন, “এলাকাতেই রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। লাগাতার চুরির ঘটনায় দুষ্কৃতীরা অধরাই থেকে গিয়েছে। তাই রাতপাহারায় নামতে হয়েছে” চোর ধরতে সশস্ত্র রাত পাহারায় নেমে বর্ষার রাতে নাকাল বাসিন্দারা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ণপাত্র বালুরঘাট থানার এই ভুমিকাকে ভাল চোখে দেখছেন। তিনি বলেন, “সরকারি নির্দেশেই রয়েছে বাসিন্দাদের আরজিপার্টি তৈরিতে উৎসাহ দেওয়ার কথা। রাতপাহারার সরঞ্জামের অর্থ পুলিশ বাজেটে বরাদ্দ থাকে। এতে পুলিশ-বাসিন্দা সম্পর্ক ভাল হয়।”
গত তিন মাসে চকভৃগু এলাকায় অন্তত ২২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ মাসে ১০টি চুরি হওয়ায় বাসিন্দাদের রাতের ঘুম উবে গিয়েছে। হোমগার্ড সজল পাইন, ঠিকাদার সমীর রায়, রঙমিস্ত্রি তুষার রায়ের বাড়ি-সহ দুটি ছাত্রাবাসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরি হয় চকভৃগুর শিমুলতালি এলাকার কয়েকটি দোকানে। সবক্ষেত্রেই দুষ্কৃতীরা টিন বা বাড়ির গ্রিল কেটে ঢুকে চুরি করেছে। বাসিন্দাদের যুক্তি, তাঁরা কেউই টের পাচ্ছেন না। সম্ভবত ঘুমের স্প্রে জাতীয় কিছু ছড়িয়ে দুষ্কৃতীরা কাজ হাসিল করে পালাচ্ছে। এ ভাবে শুধু আলমারি, বাক্স থেকেই নয়, ঘুমন্ত বধূর গলা থেকে সোনার হারও চুরি হয়েছে। স্টেশন লাগোয়া চকভৃগু এলাকায় রাতের কলকাতা থেকে দুষ্কৃতীরা ঢুকছে। চুরি করে ভোরের ট্রেনে তাঁরা ফিরে যাচ্ছে। একটি ক্ষেত্রেও কেন দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ছে না? পুলিশ জানায়, বালুরঘাট থানার নাইট পেট্রোলে ২টি জিপ বের হয়। বালুরঘাট শহর সহ চকভৃগু পুলিশ ফাঁড়ির কর্মীরা হেঁটে এলাকায় ঘোরেন। চোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ তুষার রায়, সমীর রায়েরা বলেন, “স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সহযোগিতা ছাড়া এই ঘটনা হতে পারে না। প্রতিটি চুরির পরেই এলাকার পুলিশ ফাঁড়িতে জানানো হয়। লিখিত অভিযোগ করা হয়। কিন্তু কাজ হয় না।” বালুরঘাট বণিক সভার সভাপতি গৌড়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শহরে একের পর এক দোকান ও মন্দিরে চুরির ঘটনায় পুলিশ কোনও কিনারা করতে পারেনি। জুনের প্রথমে ব্যবসায়ী পরিতোষ দে খুনে মূল অভিযুক্তকেও পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। এক প্রহরী খুনেও অভিযুক্তদের হদিস করতে পারেনি বালুরঘাট থানা।” কয়েকদিন আগে চকভৃগুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দারা বালুরঘাট থানায় স্মারকলিপি দিয়ে চুরি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান। এর পরে কয়েকদিন টহল বাড়িয়েও চোর ধরতে না পারায় অসহায় থানার আইসি শান্তনু কোয়ার আরজি পার্টি গড়ার পরামর্শ দেন। আইসি বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চেয়েছেন। তাই তাঁদের হাতে রাত পাহারার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে।” |
|
|
|
|
|