পুরসভায় ভাইস চেয়ারম্যানের পদ না ছাড়ায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জোট বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। রবিবার দুপুরে তৃণমূলের কয়েকশো কর্মী সমর্থক রায়গঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতকতা ও স্বেচ্ছাচারিতার’ অভিযোগ তুলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক পথসভাও করা হয়। পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলার অন্যতম নেতা তিলক চৌধুরী বলেন, “রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে ভোটে লড়েছি। ভোটেও জয়ী হয়েছি। কিন্তু কংগ্রেস আমাদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েনি। গত বিধানসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে জোট বিরোধী কাজ চালিয়েছে। এ বারে আমরা পুরসভায় বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব।”
উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির সদস্য তিলকবাবু জানিয়ে দেন, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁরা একক ভাবে লড়াই করবেন। সে ভাবেই দলের কর্মীদের প্রস্তুত হতে তিনি নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে উত্তর দিনাজপুর জেলায় কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংগঠন মজবুত করে একলা চলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেসের বিশ্বাসঘাতকতার কথা সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে।” |
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “তৃণমূলের আন্দোলনকে আমরা কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না। আসন সমঝোতার সময় তৃণমূল আমাদের কাছে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ দাবি করেনি। তা ছাড়া আমাদের বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান জয়ী হওয়ায় ওই পদ আমাদের পক্ষে ছাড়া সম্ভব ছিল না। তৃণমূল চাইলে চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের একটি পদ নিতে পারে।” এই বিষয়ে তিলকবাবুর বক্তব্য, “কংগ্রেসকে আমাদের দয়া করে কোনও পদ ছাড়তে হবে না। আমরা বিরোধী আসনে বসে অনিয়মের প্রতিবাদে ও উন্নয়নের দাবিতে আন্দোলন
চালিয়ে যাব।”
এ বারের রায়গঞ্জ পুরসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট গড়ে লড়াই করে। ২৫টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ১৭টি, তৃণমূল ৫টি আসন পায়। সিপিএম, সোসালিস্ট ও নির্দল ১টি করে আসনে জয়ী হয়। ফল প্রকাশের পর কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে তৃণমূল পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের পদ দাবি করে। কিন্তু ওই দাবি না মেনে মোহিতবাবু চেয়ারম্যান পদে শপথ নেওয়ার পরে বিগত বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রণজকুমার দাসকেই পুনরায় ওই পদের জন্য নির্বাচিত করেন। তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম সরকার বলেন, “তৃণমূল ভাইস চেয়ারম্যানের পদ পেলে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পুরসভার উন্নয়নের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ আনতে পারতাম।” জেলা কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “পুরসভা সরকারি নিয়মেই বরাদ্দ পাবে।” |