|
|
|
|
অনাস্থার ভোটে হার |
ঝালদা পুরসভায় ক্ষমতাচ্যুত বামফ্রন্ট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝালদা |
ঝালদা পুরসভার ক্ষমতা হারাল বামফ্রন্ট।
শুক্রবার পুরসভায় কংগ্রেসের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটিতে অনাস্থার পক্ষে বেশি ভোট পড়ায় পদত্যাগ করেছেন ঝালদার সিপিএম পুরপ্রধান পঙ্কজকুমার মণ্ডল। পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক তাপসকুমার গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গোপন ব্যালটে ভোটাভুটি হয়েছে। মোট ১২ জন সদস্যের মধ্যে অনাস্থার পক্ষে ভোট দিয়েছেন সাত জন কাউন্সিলর।
মোট ১২ সদস্যের ঝালদা পুরসভায় সিপিএমের তিন, ফরওয়ার্ড ব্লকের দুই, সিপিএম সমর্থিত নির্দল এক, কংগ্রেসের তিন এবং তিন জন নির্দল কাউন্সিলর রয়েছেন। সিপিএম, ফব এবং সিপিএম সমর্থিত নির্দলএই ছ’জন প্রতিনিধিকে নিয়ে পুরোবর্ড গঠন করে বামফ্রন্ট। কিন্তু পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে উন্নয়ন করায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে গত ৮ জুন কংগ্রেসের তিন কাউন্সিলর প্রশাসনের কাছে অনাস্থার চিঠি দেন। চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয় পুরপ্রধানকেও। ৪ জুলাই আস্থা ভোটের দিন ঠিক করেছিল প্রশাসন। কিন্তু ওই দিন সিপিএম এক জন এবং ফব-র দুই কাউন্সিলর অনুপস্থিত থাকায় ভোটাভুটির আগেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন পুরপ্রধান।
কিন্তু প্রশাসন পঙ্কজবাবুর ইস্তফা গ্রহণ করেনি। পুরুলিয়ার (পশ্চিম) মহকুমাশাসক শম্পা ধর জানিয়েছিলেন, বিধি অনুযায়ী পুরপ্রধানকেই বৈঠক ডেকে আস্থা-অনাস্থার বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই অনুযায়ী শুক্রবার, ২২ জুলাই কংগ্রেসের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির দিন ধার্য করেন পুরপ্রধান। ওই দিন অবশ্য ১২ জন কাউন্সিলরই উপস্থিত ছিলেন। হাত তুলে ধ্বনি ভোট হবে না গোপন ব্যালটে ভোট হবে, তা নির্বাহী আধিকারিক জানতে চাইলে সদস্যেরা দ্বিতীয় প্রস্তাবের পক্ষেই মত দেন। গোপন ব্যালটে ভোট শেষে দেখা যায়, অনাস্থার পক্ষে ৭টি ভোট পড়েছে।
পুরবোর্ডে বামফ্রন্টের ৬ জন সদস্য থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের পক্ষে ৫টি ভোট পড়া নিয়ে ঝালদা পুর-শহরে কিছুটা আলোড়ন তৈরি হয়েছে। কে বামফ্রন্টের বিপক্ষে ভোট দিল, এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বাম শিবিরে। কোন সদস্য বিপক্ষে ভোট দিলেন, তা জানতে চাওয়ায় হতাশ সুরে পঙ্কজবাবু বলেন, “সেটা কী করে বলব! গোপন ব্যালটে ভোট হয়েছে। আমাদের পক্ষে একটি ভোট কম পড়ায় আমি পদত্যাগ করেছি।” একই ভাবে পুরসভার বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের প্রদীপ কর্মকারের বক্তব্য, “কে আমাদের পক্ষে ভোট দিলেন, তা আমাদের জানার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা অনাস্থা এনেছিলাম পুরসভা কাজ করতে পারছিল না বলে। আমাদের প্রস্তাবের যৌক্তিকতা বুঝে কেউ আমাদের পক্ষে ভোট দিয়ে থাকতে পারেন।”
পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক বলেন, “অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটির রিপোর্ট প্রশাসনকে দেব। প্রশাসনের নির্দেশ পাওয়ার পরেই নতুন পুরপ্রধান নির্বাচন হবে।” |
|
|
|
|
|