সিপিএম নেতাকে মারধর, বাঁকুড়ায় অভিযুক্ত তৃণমূল
ড়াই মাস গ্রামছাড়া থাকার পরে বাড়িতে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মারধর করা হল সিপিএমের এক প্রবীণ নেতাকে। আক্রান্ত হলেন তাঁর স্ত্রী এবং ছেলেও। রবিবার সকালে বাঁকুড়ার তালড্যাংরা থানার ধবাজোড় গ্রামের এই ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রজা বলেন, “মারপিটের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে। দু’পক্ষই তাদের কয়েক জন জখম হয়েছেন বলে দাবি করেছে। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।” সিপিএমের স্থানীয় পাঁচমুড়া লোকাল কমিটির সদস্য শিবরাম সিংহ মহাপাত্র ও তাঁর ছোট ছেলে সৌরীনকে গুরুতর জখম অবস্থায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
বাঁকুড়া মেডিক্যালে জখম সিপিএম নেতা। নিজস্ব চিত্র
সিপিএমের অভিযোগ, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ তৃণমূলের জনা তিরিশেক লোক শিবরামবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়। বিপদ বুঝে তাঁরা গ্রিলের দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। হাসপাতালে শুয়ে শিবরামবাবু বলেন, “ওরা গ্রিলের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে আমাকে টাঙ্গি, লাঠি, রড দিয়ে পেটায়। টাঙ্গির কোপ আমার কপালে লাগে। আমাকে বাঁচাতে আসায় ছেলে আর স্ত্রীকেও মারধর করে তৃণমূলের গুন্ডারা।” সৌরীনের বুক, পিঠ ও হাতে আঘাত লেগেছে। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের হুমকিতে বাবা আড়াই মাস ধরে গ্রামছাড়া ছিলেন। এ দিনই সকাল ৮টায় বাড়ি ফিরেছিলেন। খবর পেয়ে তৃণমূলের লোকজন বাবাকে খুন করতে এসেছিল।” তালড্যাংরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি মনসারাম লায়েকের অবশ্য দাবি, “শিবরামবাবুর সঙ্গে গ্রামের কয়েক জনের এ দিন বিবাদ বাধে। তার জেরে তিনি ও তাঁর ছেলে আমাদের দলের কর্মীদের লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুড়লে দু’জন জখম হন। তাঁদের তালড্যাংরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। শুনেছি, এর প্রতিবাদে গ্রামবাসীদের একাংশ তাঁদের ওপর হামলা চালায়।”
তালড্যাংরার পাঁচমুড়া পঞ্চায়েত এলাকা উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই। খুন হয়েছেন সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক অজিত লোহার। ভাঙচুরও হয়েছে দলের একটি অফিসে। তালড্যাংরার সিপিএম বিধায়ক মনোরঞ্জন পাত্র এ দিন হাসপাতালে শিবরামবাবুকে দেখতে যান। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের হুমকিতে শিবরামবাবুর চাষ বন্ধ। তাঁর বড় ছেলে, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সৌমেনও গ্রামছাড়া। ওদের ডিমপোনার চাষ এবং দুধ বিক্রি করাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গায়ের জোরে। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতেই তিনি গ্রামে ফিরেছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী তাঁদের উপরে হামলা চালাল।”
তাঁর আরও দাবি, “আমার এলাকার প্রায় দেড়শো জন সিপিএম কর্মী ও নেতা তৃণমূলের হুমকিতে ঘরছাড়া। তাঁদের চাষবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোরঞ্জনবাবু নিজে ও তাঁর ভাই জিতেন পাত্রও সপরিবার বেশ কয়েক মাস ধরে ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের কটাক্ষ, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজাতে বলছেন, অথচ, বাস্তবে তাঁর দলের কর্মীরা উল্টো কাজ করছেন।” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেছেন, “তালড্যাংরার ঘটনায় আমাদের দলের কর্মীরা যুক্ত কি না, তা জানি না। তবে দলনেত্রী কর্মীদের সংযত হতে বলেছেন। যারা তা মানছে না, তাদের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”
First Page Purulia Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.