জমির দখলকে ঘিরে খুন হলেন একজন। পাল্টা মারধরে জখম হন তিনজন। রবিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির গোপালগঞ্জ পঞ্চায়েতের সানকিজান এলাকায়। নিহতের নাম মধুসূদন অধিকারী (৫২)। আহত সুবর্ণ অধিকারী মধুসূদনবাবুর জ্ঞাতি। পারিবারিক বিবাদ হলেও এই ঘটনায় রাজনীতির রং লেগেছে। মধুসূদনবাবুকে দলের সক্রিয় কর্মী বলে দাবি করে কুলতলির তৃণমূল নেতা গোপাল মাঝির অভিযোগ, “সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই মধুসূদনবাবুকে খুন করেছে।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বলেন, “যে কোনও খুনের ঘটনাই নিন্দনীয়। তবে পারিবারিক স্তরে জমির দখল নিয়েই এই খুনের ঘটনা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।” ঘটনার প্রতিবাদে আজ, সোমবার ১২ ঘণ্টার কুলতলি বন্ধ ডেকেছে তৃণমূল। পিছিয়ে নেই সিপিএম এবং এসইউসি-ও। খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে দু’দলের তরফেই আজ ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামেরই একটি জমির দখল নিয়ে মধুসূদন ও সুবর্ণবাবুর পরিবারের বিবাদ দীর্ঘদিনের। তা আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে। জমিটি বর্তমানে মধুসূদনবাবুদের দখলে ছিল। ওই প্রৌঢ় এ বার তাতে চাষও করেছেন। এ দিন চাষের কাজেই ওই জমিতে গেলে সুবর্ণবাবু-সহ তাঁর কিছু আত্মীয়-পরিজন লাঠি, চপার নিয়ে মধুসূদনবাবুর উপরে হামলা চালান বলে অভিযোগ। তাঁর চিৎকারে পরিবারের লোকজন চলে আসেন। দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। মধুসূদনবাবুকে চপার দিয়ে কোপানো হয়। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। সুবর্ণবাবুকে মধুসূদনবাবুর পক্ষের লোকজন মারতে মারতে উল্টো দিকের মাধবপুর গ্রামে নিয়ে চলে যান। মধুসূদনবাবুর ভাই বাসুদেব ও সুভাষও চপারের ঘায়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রথমে জামতলা গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে কলকাতার এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সুপার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা জানান, অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে। এরকমও শোনা গিয়েছে যে সুবর্ণবাবুকে খুন করা হয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত তাঁর দেহের কোনও সন্ধার পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ না হলেও পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
|
উত্তর ২৪ পরগনার শিল্পাঞ্চলে বিধানসভা ভোটে দলের বিশ্রী হারের কারণ জেলা নেতৃত্বকে বিশদ ভাবে খুঁজে বার করার পরামর্শ দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। লোকসভা এবং বিধানসভা, পরপর দুই নির্বাচনেই জেলা থেকে কেন ভুল রিপোর্ট এল, তা নিয়েও জেলা নেতৃত্বকে ‘সতর্ক’ করেছেন তিনি। বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের কারণ পর্যালোচনার জন্য বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির দু’দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিমানবাবু। দলীয় সূত্রের খবর, রবিবার জবাবি ভাষণে রাজ্য সম্পাদক বলেন, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিধানসভায় একটিও আসন না-পাওয়া তাঁদের কাছে খুবই ‘উদ্বেগে’র বিষয়। শ্রমিক শ্রেণির দল বলে যে সিপিএম পরিচিত, তারাই কেন এ ভাবে শ্রমিক সমর্থন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল, তার কারণ গভীরে গিয়ে খুঁজে বার করার কথা বলেন বিমানবাবু। লোকসভা ভোটের সময় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্ব দলের সম্ভাব্য ফল সম্পর্কে যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, তা একেবারেই মেলেনি। জেলার ৫টি লোকসভা আসনেই জেতে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটের আগে এবং ভোটগ্রহণের পরে দু’দফায় যা রিপোর্ট জেলা থেকে এসেছিল, তা-ও বাস্তবে ফলাফলের সঙ্গে মেলেনি। উত্তর ২৪ পরগনার মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলায় ৩৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ৪টিতে জেতে বামফ্রন্ট। মানুষের মন বুঝতে দলীয় নেতৃত্ব কেন বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘আন্তরিক ভাবে’ জনতার সঙ্গে সংযোগ পুনঃস্থাপনের পরামর্শ দেন বিমানবাবু। বীজপুর থেকে বিধাননগর পর্যন্ত জেলার শিল্পাঞ্চলের সব আসনেই কেন বড় ব্যবধানে হারতে হল, তার কারণ পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খুঁজে দেখার কথা বলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম দেব। ঠিক হয়েছে, ৩০ অক্টোবর থেকে জেলায় নিচু তলার সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
|
খানা-খন্দে ভরা বেহাল রাস্তা। বর্ষায় চলার অযোগ্য। এমনিতেই যে কোনও যান-বাহনে চেপে ওই রাস্তায় যাতায়াত করতে গেলে যাত্রীদের কোমর ব্যাথা হয়ে যায়। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, বহুবার জানানো সত্ত্বেও এক খাবলা পিচ পড়েনি এই রাস্তায়। অথচ পর্যটন শিল্পের অন্যতম পীঠস্থান সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য ক্যানিং হেড়োভাঙা থেকে গোলাবাড়ি যাওয়ার এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে। প্রতিদিন কয়েকশো গাড়ি নিত্য এই পথে যাতায়াত করে। চলে কয়েকটি রুটের বাস, অটো, রিকশা চলে। একটু বেশি বৃষ্টি হলেই রাস্তা হয়ে ওঠে দুর্গম। বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বেহাল রাস্তার জন্য। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। এই পথের এক অটো চালকের কথায়, এরকম খানা-খন্দে ভরা রাস্তায় অটো চালানো দুর্বিষহ। তবে রাস্তা খারাপ হলেও যাত্রী স্বার্থেই অটো চালাতে বাধ্য হই। সুন্দরবন ভ্রমণ সংস্থাগুলিও জানিয়েছে, মাতলা নদী মজে যাওয়ায় ক্যানিং ডক ঘাটে লঞ্চ আসতে পারে না। সেই কারণে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের গোলাবাড়ি ফেরিঘাট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য তাঁদের ব্যবসাও মার খাচ্ছে বলে দাবি করেন সংস্থাগুলির মালিকেরা। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা অর্ণব রায় বলেন, “সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছি। আমরা আশাবাদী উনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।” ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “এই রাস্তাটি পূর্ত দফতর এবং সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের যৌথ দায়িত্বে রয়েছে। এই বিষয়ে দুই দফতরের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। পূর্ত দফতর অবিলম্বে এই রাস্তা সারানোর কাজ শুরু করবে।
|
ইছামতী নদীর চর থেকে দুই অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকালে স্বরূপনগরের কাবিলপুর গ্রামের ধারে ইছামতীতে দেহ দু’টি ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ পৌঁছনো আগেই দেহ দু’টি চরে এসে আটকে যায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই যুবকই কালো হাফ প্যান্ট পরে ছিলেন। এক জনের গায়ে খয়েরি এবং অন্য জনের গায়ে সাদা গেঞ্জি ছিল। এক যুবকের পা শরীর থেকে কাটা ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, দু’তিন দিন আগে বছর ত্রিশের ওই দুই যুবককে অন্যত্র খুন করে দেহ নদীতে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা। নিহতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
|
ডাম্পারের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হল চালকের। শনিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে দেগঙ্গার কাউকেপাড়ার কাছে। মৃতের নাম কৃষ্ণ দেবনাথ (৩২)। বাড়ি হাড়োয়ার হাদিপুর গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাম্পারটি জ্যাকের সাহায্যে তুলে সারানো হচ্ছিল। কৃষ্ণবাবু গাড়ির নীচে ছিলেন। জ্যাকটি কোনও ভাবে সরে গেলে চাপা পড়ে যান কৃষ্ণবাবু। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। |