|
|
|
|
আগুনে পুড়ে ছাই হাওড়ার দু’টি কারখানা, আতঙ্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দু’টি পৃথক অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে গেল হাওড়ার দু’টি কারখানা। রবিবার সকালে ওই দুই অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। তবে কারখানা দু’টি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ উত্তর হাওড়ার ঘুসুড়ির জে এন মুখার্জি রোডের একটি রাসায়নিক কারখানায় আগুন লাগে। দমকলের ৭টি ইঞ্জিন গিয়ে ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে আগুন নেভায়। এ দিকে সকাল ছ’টা নাগাদ শালিমারের স্বর্ণময়ী রোডের একটি রং কারখানায় আগুন লাগে। ওই কারখানার কর্মীরা তখন ভিতরে থাকলেও প্রথমে কিছুই বুঝতে পারেননি তাঁরা। কারখানা-সংলগ্ন আবাসনের বাসিন্দারা ধোঁয়া ও আগুন দেখে কর্মীদের সতর্ক করেন। আবাসনের বাসিন্দা উমা মণ্ডল বলেন, “জানলা দিয়ে ধোঁয়া বেরোতে দেখে চিৎকার করি। পরে সবাই মিলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি।” |
|
ধোঁয়ায় ঢেকেছে রঙের কারখানা। রবিবার, শালিমারে। নিজস্ব চিত্র |
স্থানীয়দের অভিযোগ, শালিমারের ওই রং কারখানায় পৌঁছতে দেরি করে দমকল। তাঁরা জানান, আগুন লাগার আধ ঘণ্টা পরে দমকলের ৫টি ইঞ্জিন পৌঁছয়। তারও কিছু পরে যায় আরও ছ’টি ইঞ্জিন। স্থানীয় সূত্রের খবর, ততক্ষণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আবাসনের কয়েকটি বাড়ির বাতানুকূল যন্ত্রে আগুন লেগে যায়। এর পরে কারখানার ভিতর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শুনে বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।
দমকল জানায়, এ দিন আগুনের মোকাবিলায় জল নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। প্রথম পাঁচটি ইঞ্জিনের জল ফুরিয়ে গেলে কারখানা-সংলগ্ন বি ই কলেজের ভিতরে পাম্প বসিয়ে জল আনা হয়। আবাসনের পিছন দিকের পাঁচিল ভেঙে একটি পুকুর থেকেও জল আনে দমকল। অবশেষে প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
দমকল-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শালিমারের ওই কারখানায় ‘হাইড্রলিক পাম্প’ থাকলেও তার চাপ খুবই কম ছিল। ভূগর্ভস্থ জলাধারের অবস্থাও খুব খারাপ। ছিল না অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থাও। যদিও ওই সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের নিজস্ব অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থার সাহায্যেই প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হয়।
রং কারখানার পাশে আবাসন তৈরি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দমকলের ডেপুটি ডিরেক্টর বিভাস গুহ বলেন, “রাসায়নিক কারখানার পাশে পুরসভা কী ভাবে আবাসন তৈরির ছাড়পত্র দিল, বুঝতে পারছি না। আবাসন তৈরির সময়েও দমকলের অনুমতি নেওয়া হয়নি।” একই অভিযোগ করে মধ্য হাওড়ার বিধায়ক এবং রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “কারখানার পাশের ওই আবাসন বেআইনি। গোটা দক্ষিণ হাওড়ায় বেআইনি বাড়ি ও ফ্ল্যাটে ভতির্র্। পুকুর বুজিয়েও ফ্ল্যাট হচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, সব জেনেও পুরসভা নির্বিকার। সকাল দশটা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাওড়ার মেয়র মমতা জয়সোয়াল বেআইনি নির্মাণের প্রসঙ্গে বলেন, “ওই আবাসন কী ভাবে ছাড়পত্র পেল, খোঁজ নিচ্ছি।” |
|
|
|
|
|