|
|
|
|
বিতর্কিত নির্মাণে বৈধতার ছাড়পত্র |
দেবাশিস দাশ • হাওড়া |
‘অবৈধ’ নির্মাণকে বৈধতার ছাড়পত্র দেওয়ার অভিযোগ ফের উঠল হাওড়া পুরসভার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, এ বার হাওড়ার মেয়র ও বিরোধী দলনেতার যৌথ উদ্যোগে বৈধতা পেয়েছে ২১০ কাঠার একটি শপিং মল, যেটিকে কয়েক মাস আগে পুরসভাই অবৈধ ঘোষণা করেছিল। পুর-অধিবেশনে এই নিয়ে লিখিত প্রশ্ন তুলেছিলেন সম্প্রতি কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ওই বিরোধী দলনেতাও। অভিযোগ, ওই মলের পিছনের অংশে চারতলার ছাদের উচ্চতা অনুমোদিত নকশার থেকে ৩.৪০ মিটার বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া, বাড়িটির ছাদের সামনের ও পাশের পাঁচিল বা আলসে ৪ ফুটের পরিবর্তে ১৫ ফুট উঁচু করা হয়েছে।
কিন্তু অভিযোগ, মলটিকে বৈধতা দিতে সব চেয়ে বেশি উদ্যোগী হন যিনি, তিনি পুরসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ রায়চৌধুরী। সেই বৈধতা দিতে যে নথি পুরসভা তৈরি করেছে, তাতে অরুণবাবুর নাম করে এই তদ্বিরের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
|
|
হাওড়ার সেই শপিং মল। ছবি: রণজিৎ নন্দী। |
গত ৩১ মে-র অধিবেশনে ওই মলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরে ১৫ জুন অরুণবাবুকে মল-কর্তৃপক্ষ একটি চিঠি লেখেন। তাতে তাঁরা পুরসভা যাতে জরিমানা নিয়ে অবৈধ অংশকে বৈধ করে দেয়, তা দেখার জন্য অরুণবাবুকে আবেদন করেন। অভিযোগ, অরুণবাবু ওই চিঠির উপরেই মেয়রকে লিখিত ভাবে মলটি বৈধ করে দেওয়ার অনুরোধ জানান। আর এর পরেই গত ২১ জুলাই মেয়র পারিষদের সভার ১৩ নম্বর আলোচ্যসূচিতে মলের বিষয়টি রাখা হয়। তাতে অরুণবাবুর ‘অনুরোধ’-এর বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। ওই সভায় জরিমানা নিয়ে মলটিকে বৈধ করার প্রস্তাব গৃহীত হয় বলে অভিযোগ।
কিন্তু বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরসভায় বেআইনি কাজকে বাধা না দিয়ে আইনি করার জন্য খোদ বিরোধী দলনেতার অনুরোধ করার কারণ কী?
অরুণবাবুর জবাব, “হাওড়ায় অনেক বেআইনি বাড়ি হচ্ছে। এই মলটি হলে দু’হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। সরকার ও পুরসভার কর বাবদ আয় বাড়বে। তাই নকশার ওই সামান্য বিচ্যুতি মেনে নেওয়া যায়।”
জগৎ ব্যানার্জি ঘাট রোডে ওই শপিং মলের কাজ শুরু হয় ২০০৭-এ। ২০০৮-এ মলটির একটি অংশ ভেঙে পড়লে কিছু দিন কাজ বন্ধ থাকে। গত বছর মলটির নির্মাণকাজ নিয়ে পুর-কমিশনারকে অভিযোগ জানান এক স্থানীয় বাসিন্দা। ঘটনাস্থল দেখে এক সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার তাঁর রিপোর্টে নকশার বিচ্যুতির উল্লেখও করেন। পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “হাওড়া পুর-আইন অনুযায়ী ১ থেকে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে যে কোনও শপিং মলের উচ্চতা ১১.৫ মিটারের বেশি হওয়ার কথা নয়।”
পুরসভার নকশা থেকে এত বড় বিচ্যুতির পরেও অবৈধ নির্মাণকে বৈধতা দেওয়া হল কেন?এই প্রশ্নে দায় এড়িয়ে মেয়র মমতা জয়সোয়ালের জবাব, “ওখানে খুব বেশি বেআইনি কাজ হয়নি। তা ছাড়া, জায়গাটি বিরোধী দলনেতাও দেখে এসেছেন। এর বেশি আমি কোনও মন্তব্য করব না।” |
|
|
|
|
|