চালের অভাবে গোঘাটের বহু স্কুলে বন্ধ মিড-ডে
লতি মাসের গোড়ায় মিড ডে মিলের চাল নিয়ে অশান্তি হয়েছিল গোঘাট-২ ব্লকের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতে। তার পর থেকে চাল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে ব্লক প্রশাসন। এর ফলে, ওই পঞ্চায়েত এলাকার শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র মিলিয়ে ৭৬টি স্কুলের বেশির ভাগেই মিড ডে মিল প্রকল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাকি স্কুলগুলিতে যে টুকু চাল জমা রয়েছে তা দিয়েই কোনও মতে চালানো হচ্ছে প্রকল্পটি। তবে ওই সব স্কুলও জানিয়েছে, দ্রুত চাল সরবরাহ স্বাভাবিক না-হলে প্রকল্পটি বন্ধ করে দিতে হবে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্কুল চাল সরবরাহের আর্জি জানিয়েছে পঞ্চায়েত এবং ব্লক অফিসে।
গত ৪ জুলাই দুপুরে ব্লক প্রশাসনের মনোনীত জয়দেব পাত্র আরামবাগ খাদ্য সরবরাহ দফতরের গুদাম থেকে লরিতে ২৪২ বস্তা চাল নিয়ে বেঙ্গাই পঞ্চায়েত অফিসে হাজির হন। প্রধান সিপিএমের শোভা রায়ের তত্ত্বাবধানে চাল নামানোর সময়ে দেখা যায় ২ বস্তা চাল ভিজে, ৩ বস্তা চাল খারাপ। প্রধান চাল ফেরত পাঠানোর জন্য বিডিওকে ফোন করার চেষ্টা করেন। ততক্ষণে গ্রামে রটে যায় পচা এবং পোকা ধরা চাল পঞ্চায়েতে সরবরাহ করা হয়েছে। অভিযোগ, এর পরে তৃণমূলের নেতৃত্বে কয়েক জন গ্রামবাসী জয়দেববাবুকে প্রায় দেড় ঘণ্টা একটি গাছে বেঁধে রাখেন। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। পুরো চাল ফেরত পাঠানো হয়। ব্লক প্রশাসনের অভিযোগের ভিত্তিতে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে তৃণমূল নেতা চঞ্চল পান-সহ চার জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এর পরেই ওই পঞ্চায়েত এলাকার স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ব্লক প্রশাসন। সেই সময়ে চঞ্চলবাবু দাবি করেছিলেন, “দলগত ভাবে সে দিন বিক্ষোভ দেখানো হয়নি। গ্রামবাসীরাই খারাপ চাল পঞ্চায়েতের গুদামে ঢুকতে বাধা দেয়। জয়দেববাবু যাতে পালিয়ে না যান, সে জন্যই তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল।”
এখন অবশ্য প্রকল্পটি যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে ব্যাপারে তৃণমূল নেতৃত্ব ভাল চাল সরবরাহের দাবিতে পঞ্চায়েত এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “৪ জুলাইয়ের ওই ঘটনার পরে চাল সরবরাহ করা যাচ্ছে না। চাল নিয়ে রাজনীতি ঠিক নয়। চাল পরীক্ষা করার জন্য বিশেষজ্ঞেরা আছেন। অবাঞ্ছিত লোকজন যাতে চাল পরীক্ষা না করেন, তার ব্যবস্থা করুক সরকার। চাল সরবরাহকারীরা আতঙ্কে রয়েছেন। মিড ডে মিল নিয়ে সঙ্কটের কথা ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”
বিডিও অনির্বাণ সোম বলেন, “বেঙ্গাই পঞ্চায়েত এলাকায় মিড ডে মিলের চাল সরবরাহ নিয়ে সমস্যার কথা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। চালের গুণমান খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই চাল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। সেই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলগুলি তিন মাসের চালের বরাদ্দ একবারে পায়। বেঙ্গাইয়ের কিছু স্কুলে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের বরাদ্দ চাল কিছু বেঁচে গিয়েছে। ফলে, সেই সব স্কুল এখনও প্রকল্পটি চালাতে পারছে। পরবর্তী তিন মাসের চাল পৌঁছে গিয়েছে আরামবাগ খাদ্য সরবরাহ দফতরের গুদামে। সেই চালই মহকুমার পঞ্চায়েতগুলিতে পৌঁছনোর কথা। স্কুলগুলি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের গুদাম থেকে তা সংগ্রহ করবে। কিন্তু বেঙ্গাই পঞ্চায়েত এলাকায় অচলাবস্থা না কাটায় চাল তোলা যাচ্ছে না।প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ মনে করেন, তিন মাসের বরাদ্দ এক সঙ্গে না দিয়ে প্রতি মাসে দেওয়া হলে চাল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে।
Previous Story South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.