|
|
|
|
মশারির ফাঁসে হারাচ্ছে পদ্মার ইলিশ |
অনল আবেদিন • লালগোলা |
শারির জালে পদ্মায় ফেঁসেছে ইলিশ!
বষার্র কয়েক মাস ছাড়া এমনিতেই তাদের দেখা মেলে কদাচিৎ। স্রোতের বিরুদ্ধে ডিম ছেড়ে পদ্মায় ভেসে চলা রূপোলি সেই ইলিশ ‘খোকা’ বয়সেই এখন বাঁধা পড়ছে মশারির ফাঁসে। কখনও বা নিছকই তার ডিম। ফলে মুর্শিদাবাদের লালগোলার কাছে পদ্মায় সমূলেই হারিয়ে যেতে বসেছে ইলিশ।
শুধু ইলিশই নয়, রুই, কাতলা, পাবদা, ট্যাংরার পোনারাও এখন বিরল ওই এলাকায়। আতঙ্কে তাই স্থানীয় মৎসজীবীরা। মৎস্যমন্ত্রী আবু হেনার দ্বারস্থ হয়েছেন। এ ব্যাপারে লালগোলা পদ্মা ফিসারমেনস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের পক্ষে জানানো হয়েছে, গ্রামের ছোট ব্যবসায়ীরা ভোর রাতে সস্তার ওই জাল ফেলে ওই ইলিশ নিধনে নেমেছে। সুতি থেকে রানিনগর, সাতটি থানা এলাকা দিয়ে প্রবাহিত ৫২ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মার কয়েক হাজার মৎস্যজীবী পরিবারের জীবন-জীবিকাও এর ফলে বিপন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। মৎস্যমন্ত্রী বলেন, “অভিযোগ গুরুতর। বিভাগীয় আধিকারিকদের বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলেছি।”
ওই সংস্থার পক্ষে গোপাল হালদার বলেন, “সমবায় সমিতি প্রতি বছর সরকারের কাছ থেকে নাম মাত্র টাকায় পদ্মানদীর ৫২ কিলোমিটার এলাকা লিজ নেয়। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীরা ছোট মৎস্যজীবীদের সাব-লিজ দেয়। ওই সাব লিজের মালিকরা সমবায় সমিতির মৎস্যজীবী সদস্যদের বঞ্চিত করে নিজেরাই মজুর নিয়োগ করে মশারির জাল দিয়ে মাছের পোনা ও ডিম তুলে নেয়।” |
|
এই জালেই ধরা পড়ছে ইলিশ। ছবি: গৌতম প্রামাণিক। |
কিন্তু ও ভাবে মাছ ধরা হচ্ছে কেন? মৎস্যজীবীরা জানান, সাব-লিজ নেওয়া মাছ-চাষিদের অবস্থা বিশেষ ভাল নয়। কোনওক্রমে দিন গুজরান। বড় জাল কেনার আর্থিক সংস্থান নেই তাদের। কিছুটা নিরুপায় হয়েই তারা মশারি জালের ভরসাতেই মাছ ধরেন।
ফলে দরিদ্র মৎসজীবীরা পদ্মা থেকে জীবিকা সংগ্রহ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে ইলিশের মতো অন্য প্রজাতির মাছও পদ্মা থেকে অবলুপ্ত হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। ওই সম্ভবনা আটকাতে রাজ্যের মৎস্য দফতর থেকে কয়েক বছর আগে নদী-নালার মাছ ধরার বিষয়ে নিদির্ষ্ট কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়।
রাজ্য মৎস্য দফতরের অতিরিক্ত অধিকর্তা কিশোর ধাড়া বলেন, “১২ মিলিমিটারের কম ফাঁক রয়েছে এমন জাল দিয়ে নদীতে বছরের কোনও সময়ই মাছ ধরা যাবে না। ১৫ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর, এই সময়ে মাছের বংশ বিস্তার হয়। সে সময়ে ২৫ মিলিমিটারের কম ফাঁক রয়েছে এমন জাল দিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ।”
তিনি বলেন, “তবুও পদ্মায় অবৈধ ভাবে মশারির জাল দিয়ে মাছের ডিম ও পোনা ধরা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।” |
|
|
|
|
|