|
|
|
|
সুব্রতর শাস্তি তুলে ফিরতি ম্যাচ খেলতে দেওয়ার অনুরোধ |
রতন চক্রবর্তী • কলকাতা |
লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়া সুব্রত পাল বা দেবব্রত রায় নন, ২০১৪ বিশ্বকাপের স্বপ্ন কার্যত ভঙ্গ হওয়ার জন্য কাতারের রেফারি বানজারআল দোসারি-র ‘পক্ষপাতিত্ব’-র দিকেই আঙুল তুলছে ভারতীয় শিবির। “দু’টো লাল কার্ডই অপ্রয়োজনীয় ও অনৈতিক। যাঁরা আমাদের ম্যাচ দেখেছে তারা দেখেছে কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল,” আবু ধাবিতে রবিবার দুপুরে ফোনে ধরা হলে বলে দিলেন ক্ষুব্ধ আর্মান্দো কোলাসো।
কিছুক্ষণ পরেই দুবাই হয়ে ভারতে ফিরবেন। তাড়া ছিল বিমান ধরার। তার মধ্যেই আল আইন থেকে ফোনে কথা বলছিলেন ভারতীয় কোচ। “নয় জন হওয়ার আগে আমরা সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে সমান তালে খেলছিলাম। সুব্রতর লাল কার্ড দেখাটা আমাদের প্রচুর ক্ষতি করে দিল। ও শুধু ভাল গোলকিপারই নয়, রক্ষণ জমাট বাঁধানোর কাজটাও করে পিছন থেকে চেঁচিয়ে নির্দেশ দিয়ে।” রেফারির বিরুদ্ধে কোলাসো তোপ দাগলেও শনিবার আমিরশাহির কাছে প্রাক বিশ্বকাপ ম্যাচে ০-৩ হারার পর ভারতীয় শিবিরে যা নিয়ে সবথেকে আলোচনা হচ্ছে সেটা অবশ্য বলেননি জাতীয় কোচ। শিবিরের বেশিরভাগ ফুটবলারেরই মত, দিন কয়েক আগে কাতারের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয়ের মাশুল দিতে হয়েছে তাঁদের। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে ম্যাচে কেন মধ্যপ্রাচ্যেরই কোনও দেশের রেফারিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।
ফিফার নিয়ম মেনে খেলা শেষ হওয়ার দু’ঘণ্টার মধ্যে ম্যাচ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জমা না দিলেও ফেডারেশন অবশ্য এএফসি এবং ফিফার দ্বারস্থ হচ্ছে। অভিযোগ জানাতে চলেছে রেফারিং নিয়ে। এআইএফএফ সচিব কুশল দাস বলে দিয়েছেন, “অভিযোগ জানিয়ে ম্যাচের ফল বদলাবে না জানি। তবে আমরা ফিফা আর এএফসিকে ভবিষ্যতে যাতে এ রকম রেফারিং না হয় সেটা দেখার জন্য চিঠি দিচ্ছি। ম্যাচের সিডি দেখারও অনুরোধ করব।” আমিরশাহির বিরুদ্ধে ফিরতি ম্যাচ দিল্লিতে ২৮ জুলাই। অম্বেডকর স্টেডিয়ামে। রাতের খবর, এএফসি-তে পাঠানো ফেডারেশনের চিঠিতে সুব্রতর লালকার্ড ‘উইথড্র’ করে দিল্লির ম্যাচে খেলতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কোলাসো অবশ্য বললেন, “দিল্লিতে শনিবারের ফল হয়তো উল্টোবে। কিন্তু তিন গোলের ব্যবধান মুছে পরের রাউন্ডে যাওয়া কঠিন।” বারবার বললেন, “সুব্রতর জায়গায় নেমে করণজিৎ দারুণ খেলেছে। নয় জনে ছেলেরা যা খেলেছে তাতে আমি গর্বিত।”
কোলাসো ফোন ধরলেও লাল কার্ড দেখা দুই বঙ্গসন্তান অবশ্য ফোন ধরেননি। ই-মেলে যোগাযোগ করা হলে সুব্রত লিখে পাঠান, ‘ব্যস্ত আছি।’ জানা গেল, লাল কার্ড দেখার জন্য দিল্লির ম্যাচের বাইরে চলে যেতে হওয়ায় মুষড়ে পড়েছেন গত চার বছর ধারাবাহিক দুর্দান্ত খেলা জাতীয় দলের গোলকিপার সুব্রত। শনিবারের ম্যাচটি ছিল সুব্রতর ভারতের জার্সি গায়ে ৪৯তম ম্যাচ। দিল্লির ম্যাচটি খেলতে পারলে ‘হাফ সেঞ্চুরি’ করতেন সোদপুরের মিষ্টু। শনিবার ম্যাচের পরই সুব্রত যোগাযোগ করেছিলেন কলকাতায় তাঁর কোচ দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। দেবাশিস এ দিন বলছিলেন, “সুব্রত আমাকে বলল, ম্যাচের দু’মিনিটের মধ্যেই কাতারের রেফারি এসে বলে গিয়েছিল, তোমাকে আমি চিনি। তুমি কিন্তু কার্ড দেখবে। অনেকেই দেখছি লাল কার্ড দেখায় সুব্রতর সমালোচনা করেছে। তারা ইউটিউব-এ বারবার দেখুক, সুব্রতর হাঁটু আমিরশাহির ফুটবলারের গায়ে লেগেছিল কি না?”
ক্ষুব্ধ প্রাক্তন জাতীয় গোলকিপার দেবাশিস যোগ করেন, “বিপক্ষের কোনও প্লেয়ার যদি ডেড বল সিচুয়েশনেও গোলকিপারের দিকে ছুটে আসে ধাক্কা দিতে, তা হলে গোলকিপার কী করবে? দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে মার খাবে? সুব্রতকে লাল কার্ড দেখানোটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।” শিবির সূত্রে ভারতীয় দলের জন্য আরও একটা খারাপ খবর, সুনীল ছেত্রীর গোড়ালিতে সামান্য চোট লেগেছে। তবে তিনি সম্ভবত ফিরতি ম্যাচ খেলবেন। |
|
|
|
|
|