বিহার
জেল থেকেই জাল নোটের ব্যবসা চালাচ্ছে অপরাধীরা
জেলে বন্দি হলেই যে কুখ্যাত অপরাধীদের রমরমা আদতে কমে না, তার একাধিক প্রমাণ মিলেছে বিহারে। এ বার তার নবতম সংযোজন, বিহারের জেল থেকেই বহাল তবিয়তে চলা জাল টাকার ব্যবসা। আগে যে সব অপরাধীরা বিভিন্ন মাদক পাচারের ব্যবসা করত, তারাই এখন কম ঝুঁকির, জাল টাকার ব্যবসা করছে। এমনকী, অনেক সময়ে বাহকরা তাদের জাল টাকা সংগ্রহ করছে জেলের গেট থেকেই। সম্প্রতি বিহারের ভোজপুর জেলায় জাল টাকা-সহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার পরে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য বিহার পুলিশের হাতে এসেছে।
কয়েক দিন আগে ভোজপুর জেলার বিহিয়া থানা এলাকা থেকে বছর ষাটের দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এক জনের নাম ভদ্রি সিংহ এবং অন্য জন শশীভূষণ। তাদের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকার জাল পাঁচশো টাকার নোট উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ভদ্রির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আরও প্রায় ২১ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। দুই ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, এই জাল টাকার চক্র জেলে বসেই বেশ কয়েক মাস ধরে চালাচ্ছে জনৈক পিন্টু সিংহ। ভোজপুর জেলায় একাধিক খুন, তোলাবাজি এবং অপহরণ কাণ্ডে অভিযুক্ত পিন্টু চার বছর ধরে আরা জেলে বন্দি। পিন্টুর বিরুদ্ধে গাঁজা-সহ অন্যান্য মাদক চোরাকারবারের অভিযোগও রয়েছে। পুলিশকে ভদ্রি জানিয়েছে, জেলে বসে গাঁজার চোরাকারবারই করত পিন্টু। কিন্তু বছরখানেক ধরে জাল নোটের ব্যবসা শুরু করেছে। তার প্রধান কারণ, এই ব্যবসায় ঝুঁকি কম। টাকাও কম বিনিয়োগ করতে হয়। ভদ্রির কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, মাঝেমধ্যে জেলেই পিন্টুর সঙ্গে দেখা করতে যেত ভদ্রি। সেখানে পিন্টু ভদ্রির হাতে ২৫ কিংবা ৫০ হাজার টাকার জাল নোট গুঁজে দিত। এ বার ভদ্রির দায়িত্ব ওই জাল নোট পূর্ব নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় পৌঁছে দেওয়া।
ভোজপুর জেলার পুলিশ সুপার এম আর নায়েক বলছেন, “ভদ্রি, শশীভূষণের মতো বয়স্ক ব্যক্তিদের দলে নেওয়ার মূল কারণই হল, এদের উপরে পুলিশের সন্দেহ প্রথমেই পড়ে না। তাই সহজেই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এরা জাল নোট এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দিতে পারে।” নায়েক জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে শশীভূষণ আরা জেলেই বন্দি ছিল। সে সময়েই পিন্টুর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে শশীভূষণের। জেল থেকে বেরিয়ে শশীভূষণ পিন্টুর ব্যবসার প্রধান এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করে দেয়।
শশীভূষণ এবং ভদ্রির কাছ থেকে এই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানার পরে পুলিশ আরা জেলে গিয়ে পিন্টুর সেল-এ তল্লাশি চালায়। যদিও সেখানে কোনও আপত্তিকর জিনিসপত্র পুলিশ পায়নি। তবে রাজ্যে নিযুক্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কর্তাদের সন্দেহ, আইএসআই এজেন্টরা এ দেশে জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিহারের কুখ্যাত অপরাধীদেরই বেছে নিচ্ছে। কারণ, দুবাই বা নেপালে তৈরি জাল নোটের বেশির ভাগটাই ভারতে ঢোকে বিহার-নেপাল সীমান্ত দিয়ে। তাই এখানকার অপরাধীদের এই ব্যবসায় যুক্ত করতে পারলে আখেরে তাদের লাভ।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরে বিহারে জাল নোট আটকের পরিমাণ বাড়ছে। চলতি বছরের এপ্রিল অবধি বিহারে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার জাল নোট আটক হয়েছিল। ২০০৯ এবং ২০১০ সালে যথাক্রমে ৭.৯৩ লক্ষ ও ৮.৭৮ লক্ষ টাকার জাল নোট আটক করা হয়েছিল।
Previous Story Desh Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.