|
|
|
|
গাজিয়াবাদে খুন গলসির যুবক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গলসি |
রহস্যজনক ভাবে গাজিয়াবাদে খুন হয়ে গেলেন গলসির এক আদি বাসিন্দা। বিজয়নগর থানা এলাকায় শনিবার গভীর রাতে। বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। নিহত চাঁদ মণ্ডল (৩৭) পেশায় এমব্রয়ডারি শিল্পী। রাতেই এই খবর পৌঁছয় গলসির বন্দুটিয়া গ্রামে। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের স্ত্রী মায়া। রবিবার সকালে মোবাইলে ঘটনার বিবরণ জানালেন তিনি। বিজয়নগর থানার চক সাবেরি রামনগর এলাকায় তাঁরা থাকেন। রাত তখন প্রায় দেড়টা। খাওয়াদাওয়া শেষে শুতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। ঘরের আলোও নিভিয়ে ফেলা হয়েছিল। আট বছরের ছেলে আমানতকে নিয়ে চাঁদ ততক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছেন। কেবল, এক বছরের মেয়ে নাবিদা কান্নাকাটি করছিল বলে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন মায়া। আচমকাই বিকট একটা শব্দ হতে তিনি ‘কৌন? কৌন?’ বলে চিৎকার করে ওঠেন। তার মধ্যেই ঘরে ঢুকে আসে দুই দুষ্কৃতী। বোঝা যায়, দরজার খিল ভাঙতেই ওই বিকট শব্দ হয়েছিল। দুষ্কৃতীদের এক জন মায়ার মুখ চেপে ধরলে তিনি গোঙাতে শুরু করেন। আর সেই শব্দেই ঘুম ভাঙে চাঁদের। বিছানা ছেড়ে তিনি উঠে দাঁড়াতেই অন্য দুষ্কৃতী তাঁর মাথায় গুলি চালিয়ে দেয়। তবে বাড়ির কোনও কিছুই খোয়া যায়নি। গুলিবিদ্ধ হয়ে চাঁদ পড়ে যেতেই দুই দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। |
চাঁদ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র। |
মায়ার কথায়, “আলো জ্বালিয়ে দেখি, বিছানা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তখনও ও বেঁচে ছিল। আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও প্রতিবেশীদের কেউই এগিয়ে আসেননি। বিজয়নগর থানায় ফোনে খবর দিতেও অনেক সময় লেগে যায়। পুলিশ যতক্ষণে এসে পৌঁছয়, ততক্ষণে উনি মারা গিয়েছেন।”
রাতেই গলসির বাড়িতে ফোন করে আত্মীয়দের খবর দেন মায়া। চাঁদের ভাইপো মেহবুব মণ্ডল বলেছেন, “রাতে আমার মোবাইলে কাকিমা ফোন করে প্রচণ্ড কান্নাকাটি শুরু করেন। বুঝতে পারি, কাকাকে খুন করা হয়েছে।” |
|
ময়নাতদন্তের পরে দেহটি যাতে বন্দুটিয়া গ্রামে নিয়ে আসা যায়, তার জন্য গলসি থানা থেকে নথিপত্র জোগাড় করে দিল্লি যাচ্ছেন মেহবুব।
গ্রামে চাঁদের বাড়িতে পাওয়া গেল তাঁর দুই ভাই লাল ও হিরণ মণ্ডলকে। তাঁরা বলেন, “বছর দেড়েক আগে গ্রামের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে চাঁদ সপরিবারে গাজিয়াবাদ চলে যায়। ওখানে ও ভালই রোজগার করছিল। একটা ছোট বাড়িও বানিয়েছিল। তার মধ্যেই এই ঘটনা। জানি না, ও কার, কী ক্ষতি করেছিল যে ওকে এ ভাবে খুন করা হল!”
রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়েছিলেন বিজয়নগর থানার ইন্সপেক্টর অনিলকুমার। ফোনে তিনি বলেন, “চাঁদের দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে। তবে, প্রাথমিক ভাবে আমাদের অনুমান, সম্ভবত চাঁদকে খুন করতেই ওই দু’জন বাড়িতে ঢুকেছিল। আপাতত ওঁর পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওঁর স্ত্রীকেও দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” |
|
|
|
|
|