|
|
|
|
রেশন দোকান পরিদর্শনে গিয়ে ‘অসঙ্গতি’ পেলেন খাদ্য পরিদর্শক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাজনগর |
রেশন দোকানে টাঙানো থাকে না বিপিএল তালিকা। রেশনে প্রাপ্য জিনিসপত্র ঠিকমতো মেলে না। এমনকী মালপত্র নিলেও রসিদ পাওয়া যায় না। রেশন গ্রাহকদের একাংশের পক্ষ থেকে এ রকমই একগুচ্ছ অভিযোগ জমা পড়েছিল বিডিও-র কাছে। বিডিও-র নির্দেশে সেই রেশন দোকান পরিদর্শনে এসে সেই সব অভিযোগের সারবত্তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন ব্লক খাদ্য পরিদর্শক।
শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে রাজনগর ব্লকের আলিগড় রেশন দোকানে। ব্লক খাদ্য পরিদর্শক অরুণ ভান্ডারি বলেন, “এলাকার কিছু গ্রাহক বিডিও-কে যে-সব অভিযোগ করেছিলেন, সেগুলি অনেকাংশেই ঠিক। এই রেশন দোকান পরিদর্শন করে হিসাবপত্র-সহ বিভিন্ন বিষয়ে অসঙ্গতি চোখে পড়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিগড়ের এই রেশন দোকানটি কোনও ডিলারের অধীনে নেই। সেটি চলে ‘লার্জ সাইজ মাল্টিপারপাজ কো-অপারেটিভ সোসাইটি’ বা ‘ল্যাম্পস’-এর পরিচালনায়। ল্যাম্পসের তরফে শুভঙ্কর ঘোষ নামে এক কর্মীকে রেশন দোকান চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজনগর ব্লকের গাংমুড়ি-জয়পুর পঞ্চায়েতের আলিগড়, খুুড়িগড়, কালাপাহাড়ি, ভুরাবালি-সহ ৮-১০টি গ্রামে ৬০০টি পরিবার এই রেশন দোকানের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু কিছু দিন ধরে গ্রাহকদের একাংশ শুভঙ্করবাবুর দোকান চালানোর পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তুলছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সমীর মণ্ডল, ভূদেব কেরানি, পরেশ কিস্কু, চম্পা সরেনদের অভিযোগ, “রেশন-পণ্য ঠিকমতো পাওয়া যায় না। জিনিস নেওয়ার পরে শুভঙ্করবাবু অধিকাংশ সময়ই রসিদ দেন না। আমরা আপত্তি করলেও তিনি শোনেন না। সে জন্যই বিডিও-কে বিষয়টি জানানো হয়েছিল।”
শনিবার সকাল থেকে তৃণমূলের সমর্থনে কিছু গ্রাহক এই সব অভিযোগে ওই রেশন দোকানে বিক্ষোভ শুরু করেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা উত্তম চৌধুরীর দাবি, “সিপিএম পরিচালিত এই ল্যাম্পস এলাকার রেশন দোকান পরিচালনার দায়িত্ব নিলেও ঠিকমতো তা পালন করছে না। আমরা এর বিরোধিতা করছি।” বিক্ষোভ চলাকালীন রেশন দোকানে হাজির হন ব্লক খাদ্য পরিদর্শক। শুভঙ্করবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে ল্যাম্পসের ম্যানেজার অনিরুদ্ধ মণ্ডল গ্রাহকদের কোনও অভিযোগই মানেননি। তাঁর পাল্টা দাবি, “এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওই রেশন দোকান থেকে সময়মতো ও নিয়মমাফিক রেশন-পণ্য দেওয়া হয়। রসিদও পান গ্রাহকেরা। আর যে সময় খাদ্য পরিদর্শক পরিদর্শনে এসেছিলেন, সেই সময় দোকান থেকে রেশন বিলি করা হচ্ছিল। কাজের সময় হিসেবপত্রে কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়তেই পারে।”
বিপিএল তালিকা না টাঙানো প্রসঙ্গে অনিরুদ্ধবাবুর বক্তব্য, “এটা প্রশাসনের পক্ষ থেকেই টাঙানোর কথা। বহুবার আবেদন করেও তালিকা না পাওয়ায় তা টাঙানো যায়নি।” একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, অধিকাংশ গ্রাহকই পরিষেবা নিয়ে সন্তুষ্ট। দু-চার জন রাজনৈতিক ‘ইন্ধনে’ অভিযোগ করছেন। |
|
|
|
|
|