পরিকল্পিত চক্রান্ত, বললেন বিমান
প্রকাশ্যে ওঠবোসের সাজা তিন মহিলাকে, ভর্ৎসিত তৃণমূল নেতা
ভিযোগ, পুরসভার লোহালক্কড় চুরি করছিলেন ওঁরা। তাই ‘শাস্তি’ হিসেবে এক জন অন্তঃসত্ত্বা-সহ তিন মহিলাকে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবোস করালেন রামপুরহাট পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান তৃণমূলের আব্বাস হোসেন। রবিবারের এই ঘটনার নিন্দা করেছে পুলিশ-প্রশাসন। ঘটনার নিন্দায় শুধু সিপিএম নয়, সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় ও দলের অন্য নেতারাও।
কোন অধিকারে আইন হাতে তুলে নিলেন ভাইস-চেয়ারম্যান? এ ক্ষেত্রে অবশ্য ‘জনতা’কেই দেখিয়ে দিয়েছেন নেতা। আব্বাস হোসেনের দাবি, “আমি চেয়েছিলাম পুলিশে যেতে। কিন্তু উপস্থিত জনতাই বলে পুলিশে যাওয়ার দরকার নেই। কান ধরে ওঠবোস করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হোক। আমি জনতার কথাই শুনেছি।”
মন গলেনি কান্নায়। রামপুরহাট পুরসভা চত্বর থেকে লোকালক্কড় চুরির অভিযোগে ধৃত তিন মহিলাকে ওঠবোস করাচ্ছেন
উপ-পুরপ্রধান আব্বাস হোসেন (বাঁ দিকে)। রেহাই পাননি এক অন্তঃসত্ত্বাও। রবিবার সব্যসাচী ইসলামের তোলা ছবি।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ পুরসভা চত্বর থেকে লোহা-লক্কড় ‘চুরি’ করার অভিযোগে ধরা হয় ওই তিন মহিলাকে। ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, “বেশ কিছু দিন ধরেই পুরসভা চত্বর থেকে লোহা-লক্কড় চুরি যাচ্ছে। এ দিন আমরা ৮ জন মহিলাকে চুরি করতে দেখি। তাদের ধাওয়া করে ৩ জনকে ধরা সম্ভব হয়।” ধরা পড়ে তিন মহিলা কাতর অনুরোধ করতে থাকেন, “আমাদের ছেড়ে দিন। আমরা চুরি করিনি। আর কোনও দিন এ দিকে আসব না।” কিন্তু তাতে কান না দিয়ে শুরু হয় ‘বিচার’।
পুলিশকে না ডেকে ভাইস-চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই ঠিক হয়, সকলের সামনে কান ধরে ওঠবোস করতে হবে ‘দোষীদের’। ওঠবোস শুরু করেন তিন মহিলা। তাঁদের এক জন যে অন্তঃসত্ত্বা, খানিক পরে তা টের পান আব্বাস। তখন তাঁকে রেহাই দেওয়া হয়। বাকি দু’জনকে প্রায় দশ মিনিট ওঠবোস করানো হয়। ‘আর কোনও দিন এই চত্বর আসব না’ বলে প্রতিশ্রুতি আদায় করে ছাড়া হয় তাঁদের। ঘটনার কথা জানার পরে রামপুরহাটের এসডিপিও সুখেন্দু হিরার প্রতিক্রিয়া, “ভাইস চেয়ারম্যান কাজটা ঠিক করেননি।”
দলেরই এক নেতার এ-হেন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ করে বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, “অত্যন্ত অন্যায়। এটা তো জমিদারি আমল নয় যে, যে কেউ নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে শাস্তি দেবে! ভাঙা লোহার থেকে ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, তাঁর গর্ভস্থ সন্তান অনেক বেশি মূল্যবান।” তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসীরই ঘটনার প্রতিবাদ করা উচিত ছিল। অভিযুক্ত আব্বাস হোসেন আমার দলের লোক হলেও আমি ঘটনার প্রতিবাদ করছি।” রামপুরহাটের বিধায়ক ও তৃণমূলের বীরভূম জেলা শাখার চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “উনি অপরাধ করেছেন। আমি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।” তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন রামপুরহাটের পুর-চেয়ারম্যান নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় সরব স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বও। দলের রামপুরহাটের নেতা সঞ্জীব বর্মন বলেন, “এই ঘটনাকে ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই। পুরসভার লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি হচ্ছে। ভাইস-চেয়ারম্যানের সে দিকে নজর দেওয়া উচিত। তাতে শহরবাসীর লাভ হবে।”
Previous Story Purulia Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.