|
|
|
|
|
|
|
সেই লেজেন্ডই রয়ে গেলেন |
কেউ বলে তাঁর ছিল আদি-অকৃত্রিম বাঙালি লুক। তা বোধ হয় নয়। আসলে বাঙালি
পুরুষদের যে রূপটা আমরা দেখতে চাই, সেটাই হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সুচিত্রা ভট্টাচার্য
|
তখন আমি খুবই ছোট। প্রয়াত শ্যামমোহন চক্রবর্তীর ‘শিশুতীর্থ’র সদস্য হিসেবে তপন সিংহের ‘কাবুলিওয়ালা’য় মিনি-র বন্ধু সাজার সুযোগ মিলেছিল। এবং মিনির দু’পাশে খরবায়ু বয় বেগে নেচে আমরা দু’বোন তখন টালিগঞ্জের প্রতিষ্ঠিত চাইল্ড এক্সট্রা! ফের ডাক পেয়েছি ‘হারানো সুর’-এ। তা তখন তো অত উত্তম-সুচিত্রা বুঝি না, শুটিংয়ে গিয়ে কে নায়ক, কে নায়িকা তা নিয়েও তেমন মাথাব্যথা নেই। তবে আমার মা, আর আমাদের এক তুতো দাদা গিয়েছিল সঙ্গে, তারা কিন্তু উত্তম-সুচিত্রাকে চর্মচক্ষে দেখবে বলে বেজায় উত্তেজিত। মা তো তখন উত্তমকুমার বলতে অজ্ঞান। উত্তমকুমারের বই এলেই দেখতে ছুটছে বাবার সঙ্গে। আমরা ভাইবোনরা বাড়িতে কী কুরুক্ষেত্র ঘটাব, তা নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই, উত্তম-সুচিত্রার সিনেমায় যেতেই হবে। কোথায় যেন কবে বাবার সঙ্গে উত্তমকুমারের দেখা হয়েছিল। বোধ হয় কোনও নেমন্তন্ন বাড়িতে। সিগারেটের প্যাকেটের ভেতরের কাগজটায় উত্তমকুমারের একটা সই এনেছিল বাবা, সেই অটোগ্রাফ যেন মা-র কাছে হিরেজহরত। আর আমার ওই তুতো দাদাটিও ছিল উত্তমকুমারের দারুণ ভক্ত। যাকে বলে ডাই-হার্ড ফ্যান।
তো সে-দিন চলছিল ‘হারানো সুর’-এর শেষ দৃশ্যের শুটিং। উত্তমকুমার ‘রমা, রমা’ বলে ডাকতে ডাকতে প্রচণ্ড স্পিডে বেরিয়ে আসছেন ক্যামেরা জোনের বাইরে, ঘুরে একটি প্যাসেজে গিয়েও মোমেন্টাম থামেনি, হঠাৎই মিনি অ্যাক্সিডেন্ট। মা আর তুতো দাদাটি তখন ঢুকছে ফ্লোরে, দুম করে তুতো দাদার সঙ্গে উত্তমকুমারের ক্ল্যাশ। প্রায় মুখোমুখি কলিশান। উত্তমকুমার তো তাড়াতাড়ি সরি-টরি বলে চলে গেলেন, কিন্তু আমার সেই দাদার অবস্থাটি তখন দেখার মতো। বিলকুল ভেবলে গেছে। চোখের পাতা পড়ছে না, মুখে বাক্যিটি নেই... যাকে বলে ভাবোন্মাদ দশা। বাড়ি ফিরেও ঘোর কাটে না তার, সারাক্ষণ বুকে হাত বোলাচ্ছে। পাক্কা সাত দিন নাকি স্নান পর্যন্ত করেনি, পাছে উত্তমকুমারের স্পর্শটুকু ধুয়ে যায়।
|
|
উত্তমকুমার নামক মিথটির সম্পর্কে ওটাই আমার প্রথম চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা। মানুষটিকে পর্দায় দেখেছি অবশ্য তারও অনেক পরে। টিন-এজে পৌঁছে। এমনিতে তখন আমাদের হলে গিয়ে সিনেমা দেখার কোনও সিন ছিল না। দেওয়াই হত না দেখতে। কপালে জুটত বড় জোর ‘লালুভুলু’, ‘মানিক’, ‘বাদশা’, কিংবা ‘শ্রীশ্রীমা’...। তবে দুর্গাপুজোর ভাসানের পর রাস্তায় সাদা পর্দা টাঙিয়ে যে বায়োস্কোপ দেখানো হত, সেখানে দেখেছি উত্তমকুমারকে। সুচিত্রা সেনকেও। ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘শাপমোচন’, ‘পথে হল দেরি’...। কিন্তু ওই ঢেউ ঢেউ পর্দায় কিছুই তেমন স্পষ্ট বোঝা যেত না। সংলাপের সঙ্গে বিশ্রী ক্যারকেরে আওয়াজ আর ছায়া ছায়া কিছু মানুষ নড়াচড়া করত শুধু। আমার ধারণা ছিল, ওই রকম ছায়া ছায়া দেখায় বলেই বোধ হয় সিনেমাকে ছায়াছবি বলে।
অর্থাৎ তখনও উত্তমকুমার আমার চোখে স্বমহিমায় আসেননি। এলেন আরও পরে। ষাটের দশকের শেষে, সত্তর দশকের গোড়ায়...। উত্তমকুমার তখন খ্যাতির মধ্য গগনে। ম্যাচিয়োরিটির চূড়ায়। মায়াবী প্রেমিক সাজেন কম, বেশির ভাগ ছবিতেই তিনি ব্যক্তিত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করছেন, তবু কী রোমান্টিক! ‘আমি সে ও সখা’, ‘নগরদর্পণে’, ‘অমানুষ’, ‘স্ত্রী’, ‘মেমসাহেব’, ‘চৌরঙ্গি’, ‘হার মানা হার’, ‘আলো আমার আলো’... কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি! তখন নেশার মতো টানছেন তিনি। চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে যাচ্ছে সিনেমায়। ছুটছি ষাটের দশকের উত্তমকুমারকে দেখতে। পঞ্চাশের দশকেরও। |
যত দেখছি, তত মুগ্ধ হচ্ছি। টের পাচ্ছি, আমার মা কেন মোহিত হয়েছেন, কেন আমার দিদিমার বয়সিরাও তাঁকে সেলুলয়েডের পর্দায় দেখতে আকুল।
পরে, তিনি যখন আর নেই, তাঁর ছবি দেখতে বসে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছি, কী এমন তাঁর বিশেষত্ব ছিল, যা দিয়ে ঠাকুমা থেকে নাতনি, দাদু থেকে নাতি, সবাইকে আবিষ্ট করে রাখা যায়। রূপবান তো তিনি নিঃসন্দেহে, তবে বাংলা ছায়াছবির জগতে সব চেয়ে রূপবান তো নন। কণ্ঠস্বর তাঁর সুন্দর, তবে তার চেয়েও গাঢ় পরিশীলিত কণ্ঠ আমরা পেয়েছি রুপোলি পর্দায়। অভিনয়েও ছবি বিশ্বাস, তুলসী চক্রবর্তী, কিংবা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, কেউ তাঁর চেয়ে পিছিয়ে নেই। তা হলে কী এমন রসায়ন ছিল যে, এখনও টিভিতে তাঁর ছবি দেখানো হলে চ্যানেল ঘোরাতে পারি না?
জানি না। সত্যিই জানি না। এক এক সময়ে মনে হয় তাঁর মধ্যে এমন একটা আদি অকৃত্রিম বাঙালি লুক ছিল, যেটা আমাদের ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট করে। কিন্তু তাঁর ছবি দেখতে দেখতে বুঝেছি, ধারণাটা বোধ হয় পুরোপুরি ঠিকও নয়। আসলে বাঙালি পুরুষদের যে রূপটা আমরা দেখতে চাই, বোধ হয় সেটাই হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সে-দিক দিয়ে ভাবলে তিনি ছিলেন বাঙালিদের স্বপ্নের পুরুষ। মেয়েদের কাছেও। ছেলেদের কাছেও। তাঁকে দেখলেই মনে হয় তিনি যেন খুব কাছের মানুষ। আবার পরক্ষণে মনে হয়, উঁহু, কাছের মানুষটি যেমন হলে ভাল লাগত, সেই রূপটাই যেন তিনি। তরুণী যাঁকে প্রেমিক হিসেবে কল্পনা করে শিহরিত হয়, বয়স্করা যাঁকে স্বচ্ছন্দে খাবার ঘরে ডেকে ভাত বেড়ে দিতে পারে, আবার সাহেবি কেতায় ডাইনিং টেবিলে যাঁকে ফুড সার্ভ করলেও মোটেই বেমানান লাগে না। ছোট ভাই এমনই এক দাদার ওপর যেন নির্ভর করতে চায়। নিজের অজান্তেই বাঙালি পুরুষ নকল করে যাঁর চাহনি, যাঁরা হাঁটা, যাঁর বাচন ভঙ্গি। একমাত্র সেই ভুবন ভোলানো হাসিটি বুঝি কেউ অনুকরণ করতে পারল না। এখানেই তিনি যেন জিতে গেছেন। হয়ে উঠেছেন বাঙালির একমাত্র ম্যাটিনি আইডল।
উত্তমকুমারের আর একটা গুণও আমায় ভারী বিস্মিত করে। যদি তাঁর অভিনীত ছবিগুলোকে ধারাবাহিক ভাবে অনুরসণ করি, তা হলে দেখতে পাব এক জন নভিস শিল্পী কী ভাবে নিজেকে পরিণত করে তুলেছেন। গড়ছেন নিজেকে, ক্রমাগত গড়ছেন। বদলাচ্ছেন আমূল। ধরা যাক সেই ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। তুলসী চক্রবর্তী, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, জহর রায়, মলিনা দেবী, নবদ্বীপ হালদারের মাঝে উত্তমকুমার নামের নায়কটি তো প্রায় এক জন এলেবেলে আর্টিস্ট। তেমন ভাবে চোখেই পড়ে না। ‘অন্নপূর্ণার মন্দির’ বা ‘মন্ত্রশক্তি’তেও তথৈবচ হাল। এক সময়ে তো উত্তমকুমারের নামই হয়ে গিয়েছিল ফ্লপ মাস্টার জেনারেল। সেই মানুষটিই পরে পর্দার এক অকিঞ্চিৎকর কোণেও দৃশ্যমান হলে দৃষ্টিটা তাঁর ওপরেই গেঁথে থাকে। ‘বনপলাশীর পদাবলি’তে উত্তমকুমারের কতটুকুই বা রোল? তবে হল থেকে বেরিয়েও উদাসের কথা মনে পড়বেই। ‘মায়ামৃগ’তেও তো নায়ক-নায়িকাকে ছাপিয়ে উত্তমকুমারই মন কেড়ে নেন। ‘চৌরঙ্গি’র স্যাটা বোসকেই বা কে মুছতে পারবে স্মৃতি থেকে? আর যেখানে তিনি নায়ক, সেখানে তো লাজবাব। ‘শুন বরনারী’র হোমিও হিমু, ‘সপ্তপদী’র কৃষ্ণেন্দু, ‘গৃহদাহ’র মহিম, ‘নায়ক’-এর অরিন্দম তো এক একটা কলোসাল অ্যাচিভমেন্ট। |
এই পথ কিন্তু তিনি সহজে পেরোননি। দক্ষতার এই শিখরে পৌঁছনোর পিছনে যে বিপুল নিষ্ঠা, পরিশ্রম, অধ্যবসায় ছিল, ভাবলে চমকে উঠতে হয়। আমার তো মনে হয়, এ সব ব্যাপারে এখনকার শিল্পীদের কাছে তিনি এক জন শিক্ষকও বটে। শুনেছি, উচ্চারণে সামান্য জড়তা ছিল বলে তিনি নাকি অভিনয় জীবনের প্রথম দিকে দু’গালে সুপুরি রেখে কথা বলা অভ্যেস করতেন। তখনকার নিউ এম্পায়ার-লাইট হাউস-মেট্রোয় তাঁর জন্যে নাইট শো-এ স্পেশাল জায়গা রাখা থাকত। ওই সময়ে তো সিডি-ডিভিডি’র বালাই ছিল না, তাই ভাল হলিউড ছবি এলে তিনি হলে গিয়ে দেখবেনই। প্রয়োজনে একাধিকবার। আধুনিক সিনেমাটিক অভিনয় রপ্ত করার জন্যে এ যেন একলব্যের মতো সাধনা। সত্যজিৎ রায়ের মতো খুঁতখুঁতে পরিচালককেও বলতে হয়েছিল, ‘নায়ক’ দেখতে গেলে ডিরেকশানে অনেক গলতি চোখে পড়ে, কিন্তু উত্তমবাবুর অভিনয়ে কোনও ত্রুটি আমি খুঁজে পাইনি! আজকাল তো পেশাদার শব্দের অর্থ দাঁড়িয়েছে স্রেফ টাকার বিনিময়ে কোনও ভাবে কাজটা উতরে দেওয়া। উত্তমকুমারের কাছে কিন্তু পেশাদার শব্দের অর্থ ছিল ভিন্ন। টাকার বিনিময়ে নিজেকে সম্পূর্ণ নিংড়ে দেওয়া। শুনেছি, অসম্ভব সময়জ্ঞান ছিল তাঁর, কখনও সেটে দেরি করে আসেননি। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগে নাকি মুনি-ঋ
ষির মতো ধ্যানস্থ হতেন। মান্না দে-র এক সাক্ষাৎকারে শুনছিলাম, উত্তমকুমারের সঙ্গে মুম্বইতে তাঁর দেখা হয়েছে... উত্তমকুমার সেখানে মান্না দে-কে বলছেন, এ বারকার ছবিতে গানগুলো যা কঠিন গেয়েছেন... রেকর্ড করে নিয়ে এসেছি মুম্বইতে, সারাক্ষণ শুনছি, আর প্র্যাক্টিস চালাচ্ছি...। লিপ মেলানোটাও যাতে নিখুঁত হয়, সেটার প্রতিও বাংলার এক নম্বর নায়কের কী গভীর মনোযোগ! নাহ্, ভাবা যায় না। অকল্পনীয়।
উত্তমকুমারের দু’একটা ছবির কথা উল্লেখ না করে পারছি না। ওগুলো আমার বড্ড প্রিয়। যার এক একটা সংলাপ এখনও আমার বুকে বাজে। তা সংলাপ তো সব সময়ে পরিচালকের বা চিত্রনাট্যকারের, কিন্তু তা জ্যান্ত হয়ে ওঠে তো অভিনেতারই উচ্চারণে, নয় কি? যেমন ধরা যাক ‘নগরদর্পণে’। ওখানে একটা ডায়ালগ ছিল... খেলার মাঠে ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছে মানুষ, শুনে উত্তমকুমার বলছেন, তার পরেও খেলাটা হল? আর তোরা বসে বসে সেটা দেখলি?... কত দিন আগে সিনেমাটা দেখেছি, এখনও বাক্য দুটো যেন ধাক্কা মারে হৃদয়ে। কিংবা ‘নায়ক’-এর সেই মুহূর্তটা... আকণ্ঠ মাতাল হিরো ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে বাইরের হাওয়া খাচ্ছে... অপেশাদার মহিলা সাংবাদিকটি সামনে এসে দাঁড়াল... তীব্র যন্ত্রণায় তীক্ষ্ন এক ঠাট্টা ছিটকে এল হিরোর গলা থেকে এই হল আপনার নায়ক, বুঝলেন মিস আধুনিকা! মনে হয় না কি একটা মাত্র সংলাপেই নিজেকে পুরোপুরি উজাড় করে দিলেন উত্তমকুমার? আরও আছে, আরও অনেক আছে। ভুলতে কি পারি ‘ছদ্মবেশী’র সেই গৌরহরিকে? ‘দেয়ানেয়া’র হৃদয়হরণকেও কি ভোলা যায়? একই সঙ্গে মনে পড়ে না কি ‘শঙ্খবেলা’র নিবিড় রোমান্স? নিঃসন্দেহে অনেক সিনেমাতেই গানের একটা বড় ভূমিকা ছিল, তবে দৃশ্যগুলোতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছেন তো উত্তমকুমারই। রোমান্স, কৌতুক, দাপুটে মেজাজ, অনাবিল সরলতা, সব কিছু মিলিয়ে মিশিয়ে তিনি তো নিজেকেই নিজে অভিনয়ের একটা অ্যাকাডেমি বানিয়ে ফেলেছেন।
আর একটা কথা তো বলতেই হয়। উত্তমকুমারকে ঘিরে এক অদ্ভুত রহস্যের বাতাবরণ ছিল। তাঁর আগে কিংবা পরে আর কোনও বাংলার নায়ককে ঘিরে কিন্তু ওই ম্যাজিক বলয়টি ছিল না। আর এটি তিনি সচেতন ভাবে নির্মাণ করতে পেরেছিলেন। পর্দার নায়ককে খোলা হাটের ভিড়ে কখনও নামিয়ে আনেননি। এতেই হয়তো তাঁকে নিয়ে একটা কৌতূহল রয়ে গিয়েছে। আর ক্রমশ তিনি হয়ে উঠেছেন কল্পমানুষ। ছিলেন লিভিং লেজেন্ড। সেই লেজেন্ডই রয়ে গেলেন। মৃত্যুর একত্রিশ বছর পরেও।
উত্তমকুমারের মৃত্যুদিনটা এখনও ভীষণ ভাবে মনে আছে। তখন আমি সবে একটা সরকারি চাকরিতে ঢুকেছি। অফিসেই হঠাৎ শুনলাম, তিনি আর নেই। সঙ্গে সঙ্গে ঝুপ করে যেন আকাশটা নিভে গেল। শহর জুড়ে ঘনিয়ে এল শোকের মেঘ।
তাঁর শেষ যাত্রার মিছিলটাও স্মরণে আছে। কত মানুষ যে সে-দিন নেমেছিল রাস্তায়। সবাই ভাবছে, পর্দার কোনও নায়ক নয়, তার এক আপনজন যেন চলে গেলেন। আমার ছোট ভাই বেণু, ওরফে মিলন তো কেঁদেকেটে একসা। খালি পায়ে হাঁটল মিছিলে, গেল শ্মশান অবধি। এবং পাক্কা এগারো দিন অশৌচ পালন করল। এখনও সে উত্তমকুমারের মৃত্যুদিনে নিরামিষ খায়। একত্রিশ বছর পরেও। ভাবতে খারাপ লাগে আমাদের সেই উত্তমকুমারের শবদেহ রবীন্দ্রসদন চত্বরে আনতে দেওয়া হয়নি। সরকারের তরফ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোরও কোনও বন্দোবস্ত ছিল না। অবশ্য তাতে কিছু আসে যায় না। তিনি আছেন। বাঙালির অন্তরে আছেন। থাকবেনও।
|
ছবি: সুমন চৌধুরী |
|
|
|
|
|