|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
উদ্ধৃতির ‘বর্ণ’ বিপর্যয় |
বইপোকা |
আলোর ফুলকি কেমন? ‘এক অতুলনীয় আলোর ফুল। ভাষা যার বর্ণ, বর্ণনা যার গন্ধ।’ উত্তর পূর্ণেন্দু পত্রীর। কেমন সেই ভাষা? কুঁকড়োর কথা থেকে এই প্রকারে উদ্ধৃত করিতেছেন পূর্ণেন্দু, ‘সকালের শুভ লগ্নটিতে মাটি আর আমি যখন এক হয়ে যাই, আর পৃথিবী আমাকে সুন্দর শাঁখের মতো নিজের নিশ্বেসে পরিপূর্ণ করে বাজাতে থাকে, আমার মনে হয় তখন আমি যেন আর পাখি নই, আমি যেন একটি আশ্চর্য বাঁশি, যার মধ্য দিয়ে পৃথিবীর কান্না আকাশের বুকে গিয়ে বাজাই...’। তাঁহার কিছু মানুষ কিছু বই (দে’জ)-এ উদ্ধৃত অংশটি এই প্রকারই। কিন্তু ইহাই কি আলোর ফুলকির বর্ণময় ভাষা? মূলের সহিত মিলাইয়া দেখিতে গিয়া বুঝিলাম, ‘বর্ণ-বিপর্যয়’ ঘটিয়া গিয়াছে। মূল উদ্ধৃতিটি ছিল: ‘সকালের সেই শুভ লগ্নটিতে মাটি আর আমি যেন এক হয়ে যাই, মাটির দিকে আমি আপনাকে নিয়ে যাই, আর পৃথিবী আমাকে সুন্দর শাঁখের মতো নিজের নিশ্বেসে পরিপূর্ণ করে বাজাতে থাকে, আমার মনে হয় তখন আমি যেন আর পাখি নই, আমি যেন একটি আশ্চর্য বাঁশি, যার মধ্যে দিয়ে পৃথিবীর কান্না আকাশের বুকে গিয়ে বেজেছে...’। কিন্তু ইহা হিমশৈলের উপরিভাগ মাত্র। যে অনন্ত প্রবাহ বঙ্গগ্রন্থে স্থির হইয়া আছে তাহাতে ডুবুরি হইলে দেখা যাইবে এমনই বিস্তর ধ্রুপদী গ্রন্থের পাঠ ঘাঁটিয়া গিয়াছে। তাহাদের বিশ্বাসযোগ্য করিতে হইবে, ‘পরিবর্তন’ করিতে হইবে মূলানুগত্য বজায় রাখিবার জন্যই। আর তাহা করিতে হইলে সর্বাগ্রে প্রুফ সংশোধকদিগের পারিশ্রমিক সম্মানজনক ভাবে বর্ধিত করিতে হইবে। তাহাতে প্রকাশকের লভ্যাংশ সাময়িক কমিবে, কিন্তু আখেরে লাভ বই ক্ষতি হইবে না। |
|
|
|
|
|