|
|
|
|
তৎপর রেলকর্মীরা, হাসপাতালে ভর্তি হলেন অসুস্থ যাত্রী |
শুভাশিস সৈয়দ • বহরমপুর |
রেলের মানবিক মুখ। ট্রেনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়া যাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হল রেলের পদস্থ আধিকারিকদের সাহায্যে। অন্তত রেলের অফিসারদের তৎপরতায় এ বারের মতো বেঁচে গেলেন ওই যাত্রী।
শুক্রবার পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখার বহরমপুর-কলকাতা ধনধান্য এক্সপ্রেসে যাচ্ছিলেন শুভেন্দু কুণ্ডু। কৃষ্ণনগর স্টেশন ছাড়ার পরে বুকের বাঁ দিকে ব্যথা শুরু হয় তাঁর। সেই সঙ্গে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। রানাঘাট স্টেশন ছাড়ার পরে কষ্ট বাড়তে থাকে। ট্রেনের এসি কামরায় থাকায় বাকি যাত্রীরা বুঝতে পারছিলেন না কী করা উচিত। রেলের কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষক প্রদীপকুমার সরকারকে জানানো হয়। তিনিও কর্তৃপক্ষকে জানান। সে সময়ে যাত্রীদের তরফে টেলিফোনে বিষয়টি জানানো হয় কৃষ্ণনগরের সহকারি স্টেশন ম্যানেজার রজত বসুকে। তিনি শিয়ালদহ কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি জানান। তারপরেই রেলের অফিসারেরা তৎপর হন।
ইতিমধ্যেই যাত্রী অসুস্থতার খবর পেয়ে রেল হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ কর্মীরা অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে কাঁচরাপাড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করতে থাকেন। যদিও ট্রেনটির কাঁচরাপাড়া স্টেশনে থামার কোনও কথা নয়। তা সত্ত্বেও জরুরি ভিত্তিতে ট্রেনটিকে কাঁচরাপাড়া স্টেশনে দাঁড় করিয়ে এসি কামরায় উঠে আসেন চিকিৎসক ও রেলের কর্মীরা। চিকিৎসক অসুস্থ ওই যাত্রীকে পরীক্ষা করার পরে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। ট্রেন থেকে নামিয়ে শুভেন্দুবাবুকে কাঁচরাপাড়া রেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত পর্যন্ত তিনি সুস্থ আছেন বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “এ ধরণের খবর সাধারণত সঠিক সময়ে আমাদের কাছে এসে পৌঁছয় না। যখন জানতে পারা যায় তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সময়মতো খবর পেয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা গিয়েছে। তবে এটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এর আগেও এই ধরণের দায়িত্ব আমরা পালন করেছি।”
শুভেন্দুবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসার জন্যই তিনি ট্রেনে কলকাতা যাচ্ছিলেন। তাঁর কোনও সঙ্গী ছিল না। কৃষ্ণনগরের সহকারি ম্যানেজার তথা ইআরএমসি-র কৃষ্ণনগর শাখার সম্পাদক রজত বসু বলেন, “খবরটি শুনেই চাকদহ ও রানাঘাট স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। চাকদহ স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়ানোর কথা নয়। তা সত্ত্বেও যাত্রী-স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে ট্রেনটিকে ওই স্টেশনে ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে ওই যাত্রী যে কামরায় ছিলেন, সেই এসি কামরায় উঠে রেলের কর্মীরা রোগীর কথা মত ওষুধ দিয়ে আসেন।”
অসুস্থ ওই যাত্রীকে কাঁচরাপাড়া স্টেশনে যখন ট্রেনের কামরা থেকে স্ট্রেচারে করে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন প্ল্যাটফর্মে নিত্যযাত্রীদের ভিড় জমে যায়। তাঁদের মুখেও ছিল রেল দফতরের কর্মীদের কাজের প্রশংসা। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীরবাবু বলেন, “কাঁচরাপাড়া স্টেশনের পাশাপাশি ওই রোগীর জন্য নৈহাটি ও কলকাতা স্টেশনে চিকিৎসক ও অ্যাম্বুল্যান্স রাখা ছিল। কাঁচরাপাড়া স্টেশনে ওই রোগীকে নিয়ে গিয়ে রেল হাসপাতালে ভর্তি করানোয় তার আর প্রয়োজন হয়নি।” |
|
|
|
|
|