|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা জলাভূমি |
মাছ ও চাষের জল পরীক্ষায় নতুন গবেষণাগার শহরে |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়• কলকাতা |
পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকায় মাছের চাষ বিজ্ঞান সম্মত করতে এ বার নাটার ভেড়িতে তৈরি হল বিশেষ গবেষণাগার। সেখানে মাছ ও মাছ চাষের জল পরীক্ষা হবে। উপকৃত হবেন মৎস্যজীবীরা। ভেড়িতে চাষ হওয়া মাছ কতটা স্বাস্থ্যসম্মত, তা-ও জানা যাবে। জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন, কঠিন বস্তু, পিএইচ লেভেল, মাটির বিভিন্ন পরীক্ষা, জীবাণু নিয়ে গবেষণা ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস বোঝা-সহ নানা কাজকর্ম হবে ওই গবেষণাগারে।
সমগ্র পূর্ব কলকাতা জলাভূমি থেকে বছরে ১২ হাজার মেট্রিকটন মাছ উৎপন্ন হয়। কিন্তু সেই মাছ যে জলে চাষ হয়, তার অধিকাংশেই এসে মেশে সমগ্র কলকাতার বর্জ্য। শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে বর্জ্য পদার্থ এসে এই সব ভেড়ি এলাকায় পড়ে। ফলে সেই জলে নানা ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া চলতেই থাকে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু তার জেরে মাছ চাষের জল কিংবা মাছ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা জানার কোনও পরিকাঠামো এ পর্যন্ত তৈরি হয়নি সেখানে। অথচ সেখান থেকে শহরের বিভিন্ন অংশে প্রতি দিন কয়েকশো টন মাছ বিক্রির জন্য যাচ্ছে। |
|
নাটার ভেড়ির গবেষণাগার। অর্কপ্রভ ঘোষ |
পূর্ব কলকাতার জলাভূমিগুলিতে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পরিবেশ প্রতিস্থাপনের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্ট’ (সেফ) জানাচ্ছে, জল-দূষণের জেরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ক্রমেই লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। পূর্ব কলকাতায় মৌরলা চাষের পরিবেশ আছে। তবুও ওই মাছের মৃত্যুর হার এখন ৯০ শতাংশ। তার কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সেফ-ই ওই গবেষণাগারের দায়িত্বে রয়েছে। সংস্থার কর্ণধার দীপায়ন দে বলেন, “এই ধরনের গবেষণাগার আরও হওয়া প্রয়োজন। পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে ২৭২টি ভেড়ি রয়েছে। অথচ সেগুলির মৎস্যচাষিদের বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে চাষের বিষয়ে তেমন ধারণা নেই। ফলে অনেক সময়েই ভেড়ির মাছ মরে ভেসে ওঠে। ক্ষতিগ্রস্ত হন চাষিরা। কিন্তু কী ভাবে এর জন্য আগাম ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা জানেন না তাঁরা।”
গত ৫ জুন, পরিবেশ দিবসে ভারত সরকার অনুমোদিত গবেষণা কেন্দ্র ‘সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (সিফরি)-এর সঙ্গে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে সেফ-এর। চুক্তি মতো পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে গবেষণায় পরিকাঠামোগত সহায়তা করবে সিফরি।
সেফ-এর দাবি, অনেক চেষ্টা চালিয়ে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সাত ধরনের মাছ পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, গুলেবেলে, দেশি ট্যাংরা, সরপুঁটি, বাটা, মৌরলা, কালবোষ এবং ভ্যাদা মাছ। খোলসে, রায়না এবং পুঁটির বিভিন্ন প্রজাতি ফিরিয়ে আনার জন্যও এই গবেষণাগারে চেষ্টা করা হবে বলে জানান সেফ-এর সদস্যরা। |
|
|
|
|
|