|
|
|
|
স্মরণে তারাশঙ্কর |
কাল, রবিবার লাভপুরে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাস্তুভিটে ‘ধাত্রীদেবতা’য় উদ্যাপিত
হবে
তাঁর জন্মতিথি। এখনও তাঁর সৃষ্টি নিয়ে চর্চার শেষ নেই। প্রাক্মুহূর্তে সে রকমই কিছু প্রসঙ্গ।
|
তারাশঙ্করের গান |
জগন্নাথ মুখোপাধ্যায়। |
মূলত ছড়া ও মুসলিম পদকর্তাদের বৈষ্ণব পদাবলির গান গেয়েই পরিচিতি পেয়েছিলেন লাভপুরের বাসিন্দা জগন্নাথ মুখোপাধ্যায়। পরে লেখক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যে এসে লেখকের বিভিন্ন উপন্যাসের গানের সুর দিয়ে গাওয়া শুরু করেন। জগন্নাথবাবুর গান শুনে তৃপ্ত হতেন লেখক তারাশঙ্কর। দেখা হলেই বলতেন, ‘জগা ওই গানের সুরটা বলতো’। ১৯৭৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কলকাতা দূরদর্শনের নিয়মিত শিল্পী জগন্নাথবাবু। তারাশঙ্করের জন্ম শতবর্ষে দূরদর্শন ও কলকাতা বেতারে তারাশঙ্করের লেখা গান নিজের সুরেই গেয়েছিলেন। সেই সময়ে তারাশঙ্করের ২৪টি গানের সংকলিত ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর। কবি নজরুল ইসলাম একবার লাভপুরে গানের জলসায় এসেছিলেন। তাঁর সামনে কবি উপন্যাসের ‘ও বুড়ো বয়সের বৃন্দে’ গানটি গেয়ে সমাদর পেয়েছিলেন জগন্নাথবাবু।
|
|
বাউল সুরে |
কার্তিক দাস। |
লেখক তারাশঙ্করের উপন্যাস থেকে সিনেমা করার সময় অনেক পরিচালক উপন্যাসের গানগুলি নানা সুরকারদের দিয়ে সুর করিয়েছেন। প্রখ্যাত গায়ক-গায়িকারা সেই সব গান গেয়েছেন। ওই সব গানের কয়েকটি বাউল আঙ্গিকে গেয়ে সমাদৃত হয়েছেন লাভপুরের ধনডাঙা গ্রামের প্রখ্যাত বাউল কার্তিক দাস। কোনও অনুষ্ঠানে বাউল গান পরিবেশন করতে গেলে শ্রোতাদের কাছ থেকে আবদার আসে ‘রাইকমল’ সিনেমায় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘মধুর মধুর বংশীবাজে’, ‘ডাকহরকরা’য় মান্নাদের গাওয়া ‘শেষ বিচারের আসায় বসে আছি’ প্রভৃতি গান। এ ছাড়া, লাভপুরের অতুল শিবক্লাব ও বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনীর তারাশঙ্করের বিভিন্ন মঞ্চ ও শ্রুতি নাটকে গান গেয়েছেন কার্তিক দাস বাউল। অতুল শিবক্লাব প্রযোজিত ‘কবি’ নাটকে নিতাই কবিয়ালের ভূমিকায় অভিনয়ও করেছেন তিনি।
|
গল্পের চরিত্রেরা |
প্রচ্ছদে তারাশঙ্কর। |
লেখক তারাশঙ্কর তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে একবার বলেছিলেন, ‘সাহিত্যের এই যজ্ঞভূমিতে সারাজীবন যে আহুতি দিয়েছি, তারে কখনও ফাঁকি দিইনি। কখনও ফাঁকি দিইনি নিজেকে। যা সত্য বলে জেনেছি তাই প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি। চমক দেবার প্রয়াস পাইনি কখনও। অন্তর দেবতার সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করিনি।’ লেখকের কথাসাহিত্যে রয়েছে অসংখ্য চরিত্র। ওই সব চরিত্রাবলীর একটি বৃহৎ অংশ লেখকের চোখে দেখা তাঁর পরিচিত মানুষজন। যেমন তমসা গল্পের ‘পঙ্খে’, জলসাঘর গল্পের ‘বিশ্বম্ভর রায়’, কবি উপন্যাসের ‘নিতাই কবিয়াল’, ঠাকুরঝি এবং বসন, সপ্তপদী উপন্যাসের কৃষ্ণেন্দু ও রীনা ব্রাউন ইত্যাদি। ওই রকম ৫৭টি চরিত্র নিয়ে ‘তারাশঙ্করের কথাসাহিত্য বাস্তবের নরনারী’ নামে গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। গ্রন্থ সম্পর্কে বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র গবেষক ও অধ্যাপক অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য বলেছেন, “তারাশঙ্কর বিষয়ে এমন গবেষণা আজও হয়নি। এটি একটি দুর্লভ কাজ।” |
|
|
|
|
|