ভাগ্যবান মুষ্টিমেয়
বিধির ফাঁসেই সঙ্কটে প্রতিরোধী যক্ষ্মার বহু রোগী
য্যা খালি পড়ে রয়েছে।
তবু মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর বা বীরভূমের মতো অনেক জেলা থেকে আসা বহু মুমূর্ষু রোগীকে ফিরিয়ে দিচ্ছে কলকাতার কেএস রায় যক্ষ্মা হাসপাতাল। ওঁরা যে শহরের অন্য কোনও হাসপাতালে ভর্তি হবেন, তারও উপায় নেই। কারণ, ওষুধ প্রতিরোধী (মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট, সংক্ষেপে এমডিআর) যক্ষ্মারোগের চিকিৎসা দক্ষিণবঙ্গের আর কোনও সরকারি হাসপাতালে হয় না!
তা হলে ওঁদের কী হবে? কোথায় চিকিৎসা পাবেন ওঁরা?
উত্তর একটাই রেস্ত থাকলে বেসরকারি হাসপাতালে যান। আর পকেটের জোর না-থাকলে? ঈশ্বর ভরসা।
কিন্তু বেড থাকা সত্ত্বেও ওই সব এমডিআর যক্ষ্মারোগীকে কেন ভর্তি করবে না কেএস রায়? ওই রোগের চিকিৎসার জন্যই তো ওখানে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে!
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের খবর, সরকারি নির্দেশের ফাঁসেই খালি শয্যায় সঙ্কটাপন্ন রোগীকে ভর্তি করানো যাচ্ছে না। জলপাইগুড়ির রানি অশ্রুমতী যক্ষ্মা হাসপাতালেও একই অবস্থা। একই বিধির গেরোয় সেখানেও ভর্তি হতে পারছেন না উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহের মতো উত্তরবঙ্গের বেশ ক’টা জেলার বহু এমডিআর যক্ষ্মারোগী।
কী সেই সরকারি নির্দেশ, যার দোহাই দিয়ে কার্যত খালি হাসপাতালের দোরগোড়া থেকে ফিরিয়ে দেওয়া যায় গুরুতর অসুস্থকে?
স্বাস্থ্য দফতরের সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, আপাতত শুধু মাত্র কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার এমডিআর যক্ষ্মারোগীরাই কেএস রায়ে ভর্তি হতে পারবেন। রানি অশ্রুমতীতে চিকিৎসা পেতে পারেন দার্জিলিং-জলপাইগুড়ি-কোচবিহারের রোগীরা। অর্থাৎ সরকারি ফরমান অনুযায়ী, সাকুল্যে
এই পাঁচ জেলার বাসিন্দা না-হলে কোনও এমডিআর যক্ষ্মারোগীর কপালে সরকারি চিকিৎসা জুটবে না!
ঠিক যেমন জোটেনি আরামবাগের মান্নান খানের। এমডিআর যক্ষ্মায় আক্রান্ত মান্নান চিকিৎসার জন্য হত্যে দিয়েছিলেন কেএস রায়ে। কিন্তু হুগলির লোক বলে তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল হাসপাতাল। সংবাদমাধ্যমে ঘটনাটি প্রকাশিত হওয়ার পরে প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘নিয়ম’ শিথিল করে মান্নানকে ভর্তি করা হয় কেএস রায়ে। এখনও সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
কিন্তু মান্নানের মতো হাজারো রোগীর তো একই দুর্ভোগ হচ্ছে! তাঁদের স্বার্থে প্রশাসন কী করছে? তা ছাড়া হাসপাতাল থেকে কোনও মুমূর্ষু রোগীকে ফেরানো যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী যেখানে সাধারণ ভাবে নির্দেশ দিয়েই রেখেছেন, সেখানে এমডিআর যক্ষ্মারোগীদের প্রতি এমন ‘অবিচার’ কেন?
রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা শুভময় দত্তচৌধুরীর ব্যাখ্যা, “কেন্দ্রীয় সরকার এক সঙ্গে সব জেলায় এমডিআর যক্ষ্মারোগীদের জন্য ওষুধ পাঠাতে পারবে না। কারণ, ওই ওষুধ খুব দামি। অন্যান্য জেলায় ধাপে ধাপে এমডিআর যক্ষ্মার চিকিৎসাকেন্দ্র চালু হবে। তত দিন অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই।” স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশ, ২০১২-র মধ্যে রাজ্যের প্রতিটা জেলায় ওই চিকিৎসাকেন্দ্র চালু করতে হবে।
তবে অন্যান্য জেলায় এমডিআর যক্ষ্মার চিকিৎসাকেন্দ্র চালু করতে গিয়ে রাজ্য সরকার বিপত্তিতে পড়ছে। কারণ, কোথাও জায়গাই চিহ্নিত করে উঠতে পারছে না স্বাস্থ্য দফতর। মেডিক্যাল কলেজগুলোর চত্বরে ঠাঁই নেই। নতুন জমি পাওয়াও সমস্যা। এবং জমি-বিতর্ক এড়াতে প্রশাসন এ নিয়ে ‘তাড়াহুড়ো’ করতে অনিচ্ছুক।
ফলে গোটা প্রকল্প বস্তুত বিশ বাঁও জলে! রাজ্যের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য-অধিকর্তা (যক্ষ্মা) শ্যামাপদ বসাকের কথায়, “কল্যাণীতে একটা, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পাঁচ কিলোমিটার দূরে একটা এবং প্রস্তাবিত মুর্শিদাবাদ বা মালদহ মেডিক্যাল কলেজে একটা কেন্দ্র খোলার কথা ভাবা হয়েছিল। কোনওটাই চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। এ দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রক তাড়া দিচ্ছে!” স্বাস্থ্য-সচিবের অফিস থেকে অবশ্য জানানো হয়, সমস্যার সুরাহা চেয়ে দিল্লিকে আর্জি জানিয়েছে রাজ্য।
First Page Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.