|
|
|
|
রঘুনাথপুরে জয় বালাজি প্রকল্প |
কাজের দাবিতে বিক্ষোভ, বন্ধ পাঁচিলের কাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথপুর |
এলাকাবাসীর বাধায় কাজ থমকে ছিল প্রায় দেড় মাস। ফের কাজ শুরু হওয়ার একদিন পরেই মঙ্গলবার আবার বন্ধ হয়ে গেল রঘুনাথপুরে জয় বালাজি শিল্প গোষ্ঠীর প্রস্তাবিত প্রকল্পের কাজ। এ দিন প্রকল্পের সীমানা প্রাচীর তৈরির কাজ চলার সময় প্রকল্পে কাজ দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্য দিকে, এ দিনই সামাজিক প্রকল্পে গ্রামের রাস্তা নির্মাণ-সহ বেশ কিছু দাবিতে রঘুনাথপুরে ডিভিসি’র প্রকল্প এরিয়ায় যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করেন দু’টি গ্রামের বাসিন্দারা। ফলে প্রকল্পে পৌঁছতে পারেননি কর্মীরা। সারাদিন কাজ বন্ধ ছিল ডিভিসিতেও।
রঘুনাথপুর ১ ব্লকের নতুনডি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৩৮০০ একর জমিতে ইস্পাত, সিমেন্ট ও বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার কথা জয় বালাজি গোষ্ঠীর। কাজ শুরুর প্রথম থেকেই বারেবারে সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাদের। প্রকল্পে দ্রুত কর্মসংস্থান করতে হবে এবং যতদিন না কর্মসংস্থান হয় ততদিন প্রকল্পের জন্য অধিগৃহীত জমিতে চাষ করতে দিতে হবেএই দাবিতে মে মাসের শেষ সপ্তাহে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন ‘নতুনডি অঞ্চল জমিহারা কমিটি’র নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দারা। জুন মাসে একই দাবিতে কমিটির তরফে স্মারকলিপিও দেওয়া হয় রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের কাছে। এর পর, হুড়রা মৌজাতে অধিগৃহীত কয়েকশো একর জমিতে চাষও শুরু করেন গ্রামবাসী। এই ঘটনার পর থেকেই কাজ বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার ফের কাজ শুরু হলে বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন হুড়রা গ্রামের বাসিন্দারা। শিল্পগোষ্ঠীর কর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ঘেরাও করে রাখা হয় তাঁদেরও। জয় বালাজি শিল্প গোষ্ঠীর ডেপুটি ম্যানেজার উজ্জ্বল গুরু বলেন, “সোমবারই ফের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। এ দিনও যথারীতি কাজ শুরু হয়। তবে গ্রামবাসী কাজ বন্ধ করে দেন।”
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় হুড়রা গ্রামের শতাধিক নারী-পুরুষ ঘেরাও করে রেখেছেন প্রকল্প কর্মীদের। তাঁদের বক্তব্য, “চার বছর আগে জমি নেওয়া হয়েছে। অথচ এখনও আমরা কাজ পাইনি। কাজের ব্যবস্থা না করলে প্রকল্পের কাজ করতে দেওয়া হবে না।” তাঁদের কথায়, “পাশেই ডিভিসি তাদের বিদ্যুৎকেন্দ্রে নির্মাণকাজের সময় কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে ভাবে স্থানীয় বেকার কৃষক ও জমিহারাদের অগ্রাধিকার দিয়েছিল, সেই মডেল অনুযায়ী কাজ করুক জয় বালাজিও।” শিল্প গোষ্ঠীর পাল্টা দাবি, কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় ও জমিহারাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। উজ্জ্বলবাবুর কথায়, “প্রয়োজনীয় জমির অর্ধেকই এখনও হাতে পাওয়া যায়নি। তাই মূল প্রকল্পের কাজ শুরু করা এখনই সম্ভব নয়। বিরাট সংখ্যক গ্রামবাসীকেও তাই এখনই কাজ দেওয়া সম্ভব নয়। আপাতত মাটি ভরাট, প্রাচীর নির্মাণ প্রভৃতি যে সব কাজ চলছে তাতে প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি শ্রমিক জমিহারাদের থেকেই নেওয়া হচ্ছে।” তাঁর ক্ষোভ, “গ্রামবাসীদের দাবি মেনে অধিগৃহীত জমিতে চাষ করার ক্ষেত্রেও আপত্তি জানানো হয়নি। তবুও বাস্তব অবস্থা না বুঝেই বারে বারে কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন গ্রামবাসী। অথচ প্রশাসনের তরফে যে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত তা নেওয়া হচ্ছে না।”
রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক আবিদ হোসেন বলেন, “গ্রামবাসী ও জমিহারাদের বিক্ষোভের জেরে জয় বালাজি গোষ্ঠীর প্রকল্পে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে গ্রামবাসী ও শিল্পগোষ্ঠী’র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। উভয়েই নিজের নিজের বক্তব্য জানিয়েছে। আমরা সমাধান সূত্র বার করার চেষ্টা করছি।”
অন্য দিকে, সামাজিক প্রকল্পে ডিভিসিকে গ্রামে রাস্তা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে। এই দাবিতে রঘুনাথপুরে নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যাওয়ার মূল রাস্তা অবরোধ করলেন স্থানীয় ঘুটিতোড়া ও ক্ষুদিরমহল গ্রামের বাসিন্দারা। সকাল থেকে প্রায় ছ’ঘন্টা অবরোধ চলে। পরে ডিভিসি’র আধিকারিকেরা গিয়ে গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করার পর অবরোধ উঠে যায়। |
|
|
|
|
|