মমতার নির্দেশে পুলিশ সরাল একুশের হোর্ডিং
রাজনৈতিক রং বিচার না-করে মহাকরণ-সহ বিবাদী বাগ এলাকা থেকে সব দলের হোর্ডিং সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে মহাকরণে ঢোকার মুখে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এই নির্দেশ পুলিশ-কর্তাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ জেনেই এ দিন বিকাল থেকে রাতের মধ্যে ওই এলাকা থেকে সব হোর্ডিং খুলে দেওয়া হয়েছে। কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় সন্ধ্যায় বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই সব হোর্ডিং সরিয়ে ফেলা হবে।”
উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে এ দিন বিকালে মহাকরণ আসার পথে মুখ্যমন্ত্রীর চোখে পড়ে, আশেপাশের এলাকায় তৃণমূলের আসন্ন ২১ জুলাইয়ের ব্রিগেড সমাবেশের প্রচুর হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। মহাকরণের সেন্ট্রাল গেটে গাড়ি থেকে নেমেই মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের এসি বিশ্বনাথ পাণ্ডের কাছে জানতে চান, এই এলাকা কোন থানার মধ্যে পড়ে? সেই সময় এসি-র পাশেই ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (রিজার্ভ ফোর্স) অশোক বিশ্বাস, মহাকরণের ওসি মদন সাঁতরা-সহ অন্যান্য নিরাপত্তা অফিসার। বিশ্বনাথবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, ওই এলাকাটি হেয়ার স্ট্রিট থানার অন্তর্গত। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেন, “আশপাশে কোনও হোর্ডিং থাকবে না। আমার দলের হোর্ডিংও থাকবে না। সব সরিয়ে ফেলতে হবে।” বিশ্বনাথবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, তিনি অবিলম্বে ওই নির্দেশ সংশ্লিষ্ট জায়গায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
মহাকরণ সংলগ্ন এলাকা থেকে সরছে হোর্ডিং।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজীব বসুর তোলা ছবি।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কথা লালবাজারে পুলিশ কর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যায় ডিসি (রিজার্ভ ফোর্স) বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণ এবং আশপাশ এলাকায় নিজের দল-সহ সব হোর্ডিং সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে তা লালবাজারে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই কাজ শুরু করে রাতের মধ্যেই মহাকরণ-সহ বিবাদী এলাকা থেকে তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের হোর্ডিং-সহ সব রাজনৈতিক দলের হোর্ডিংই সরিয়ে ফেলা হয়।
এর আগে কলকাতার মেয়র শোভনবাবু বলেছিলেন, “মহাকরণ থেকে ধমর্তলা হয়ে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত হেরিটেজ এলাকা বলে ঘোষিত। ওই সব এলাকায় বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে (নো-অ্যাড জোন)।” সেইমতো ধর্মতলা চত্বর থেকে বিজ্ঞাপনের সব হোর্ডিং খুলে ফেলা হয়। কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের, বিশেষত তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের হোর্ডিং থেকে গিয়েছিল। রাজনৈতিক হোর্ডিং ছিল মহাকরণ-লালদিঘি-রাজভবন-আকাশবাণী ভবন ইত্যাদি এলাকাতেও। যদিও এই সব এলাকায় রাজনৈতিক হোর্ডিংও থাকবে না বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন মেয়র। তবে ধর্মতলার ক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি ছিল, সেখানে রাজনৈতিক হোর্ডিং লাগানো পুরোপুরি ‘নিষিদ্ধ’ করা হবে না। ‘নিয়ন্ত্রণ’ করা হবে। কারণ, তাঁর কথায়, “এই সব এলাকায় হোর্ডিং লাগানো রাজনৈতিক পরম্পরা। এখানে হোর্ডিং লাগিয়েই রাজনৈতিক দলগুলি ব্যাপক প্রচার চালানোর সুযোগ পায়।” বিষয়টি নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকার পক্ষেও সওয়াল করেছিলেন তিনি।
কিন্তু ওই বৈঠক আর শেষ পর্যন্ত হয়নি। তাই ওই বিষয়ে নির্দিষ্ট নীতি নির্ধারণও হয়নি। অন্য দিকে, মহাকরণ-লালদিঘি-রাজভবন-আকাশবাণী ভবন এলাকাতেও ২১ জুলাইয়ের হোর্ডিং থেকেই গিয়েছিল। যা দেখে এ দিন বিরক্ত হন মমতা। শেষ পর্যন্ত তাঁর নির্দেশেই এ দিন মহাকরণ-সহ বিবাদী বাগ চত্বর থেকে স্বয়ং মমতার কাট-আউট-সহ তৃণমূলের মোট পাঁচটি হোর্ডিং খোলা হয়।
First Page Calcutta Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.