|
|
|
|
মালগাড়ির ধাক্কা খুঁটিতে, রেল চলাচল বিপর্যস্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
দ্রুত বেগে চলা মালগাড়ির খোলা ‘ডালা’র ধাক্কায় বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়ায় তার ছিঁড়ে বিপর্যস্ত হল ট্রেন চলাচল। সোমবার মাঝরাতে পূর্ব রেলের গ্র্যান্ড কর্ড লাইনে খানা ও তালিত স্টেশনের মাঝখানে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বেশ কিছু ট্রেন বাতিল হয়, আটকে পড়ে বহু দূরপাল্লার ট্রেন। মঙ্গলবার বিকেলের পরে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক।
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল থেকে হাওড়ার দিকে যাওয়া মালগাড়িটি ফাঁকা ছিল। চলতে চলতে একটি রেকের ডালা যে খুলে গিয়েছে, চালক বা গার্ড তা প্রথমে দেখতে পাননি। ওভারহেড তারের খুঁটিতে সেটির ধাক্কা লেগে আগুনের ফুলকি ওঠে। তখনই গার্ডের নজরে পড়ে, লাইনের ধারে একটি ‘পোর্টাল পিলার’ হেলে পড়েছে। তিনি মালগাড়ি থামিয়ে দেন। কিন্তু তত ক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। বর্ধমানের স্টেশন ম্যানেজার অসীমকুমার রায় বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ফাঁকা মালগাড়িটি তুলনায় দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। গতির কারণেই ঝাঁকুনিতে একটি রেকের ডালার হুক খুলে যায়। সেটিরই ধাক্কা লাগে পোর্টাল পিলারে। খুঁটিটি হেলে পড়ায় প্রচুর বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে যায়।” |
|
মালগাড়ির এই খোলা ডালাটিই ধাক্কা খেয়েছিল বিদ্যুতের খুঁটিতে। তারই জেরে
দিনভর
বিপর্যস্ত হয় ট্রেন চলাচল। মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন উদিত সিংহ। |
সোমবার রাত ১টা নাগাদ এই দুর্ঘটনার পরেই আপ হাওড়া-মোকামা এক্সপ্রেস, কবিগুরু এক্সপ্রেস, গৌড় এক্সপ্রেস, কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস, গোমো প্যাসেঞ্জার, ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস, বিধান এক্সপ্রেসের মতো বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন আটকে পড়ে। পরে কয়েকটিকে ব্যান্ডেল-কাটোয়া লাইন দিয়ে সাঁইথিয়া-অন্ডাল রেলপথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বাতিল হয় ডাউন শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস। ভোর থেকে অন্তত ১০ জোড়া বর্ধমান-আসানসোল লোকাল এবং বর্ধমান-রামপুরহাট লোকাল বাতিল হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। রাত থেকেই তার ও খুঁটি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছিল। বর্ধমান স্টেশন সূত্রে দাবি করা হয়, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আপ লাইন এবং সওয়া ১০টা নাগাদ ডাউন লাইন চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ৩টে পর্যন্ত অসংখ্য যাত্রী বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের অপেক্ষায় বসে রয়েছেন। মাঝে-মধ্যে একটি-দু’টি ট্রেন চলছে।
সকাল থেকেই বর্ধমান স্টেশনে দাঁড়িয়ে কলকাতা-চিত্তরঞ্জন এক্সপ্রেস। ট্রেনের যাত্রী নির্মল ধর বলেন, “কলকাতা স্টেশন থেকে উঠেছি। বর্ধমানেই আটকে রইলাম প্রায় ১০ ঘন্টা।” আর এক যাত্রী আব্দুল পাইক বলেন, “জরুরি কাজে চিত্তরঞ্জন যাচ্ছিলাম। সব বানচাল।” মেরামতির কাজ দেখতে ঘটনাস্থলে যান ডিআরএম (হাওড়া) বরুণ ভরতওয়ার। পরে মালগাড়িটিকে বর্ধমানের রেল ইয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কী করে, কার গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা, তা নিয়ে ডিআরএম মন্তব্য করতে চাননি। |
|
|
|
|
|