|
|
|
|
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় |
ইস্তফা রঞ্জন-সহ দুই কোর্ট সদস্যের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
উচ্চ শিক্ষা দফতর আগেই প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। থুতুকাণ্ডে অভিযুক্ত শিলিগুড়ির ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা ও কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দীকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট সদস্য পদ থেকে সরাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্বও।
পরিস্থিতি বুঝে এবং প্রবল জনমত ও চাপের মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর দু’ঘণ্টা আগে কোর্ট সদস্যের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ওই দু’জন। রবিবার দুপুরে শিলিগুড়িতে পূর্ত দফতরের বাংলোয় উত্তরবঙ্গ
উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উপস্থিতিতে রঞ্জনবাবু ও জয়দীপবাবু ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সেখান থেকেই পদত্যাগী দু’জন তাঁদের ইস্তফার বিষয়টি উচ্চ
শিক্ষা দফতরে জানিয়ে দেন। তা জানানো হয় তৃণমূলের প্রদেশ দফতরেও।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “ওই দু’জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রঞ্জনবাবু প্রাথমিক শিক্ষকের ন্যূনতম যোগত্যা অর্জন করে চাকরি করছেন। জয়দীপবাবু শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। আর শ্রমিক ও প্রাথমিক শিক্ষক পদের ভিত্তিতেই তাঁদের মনোনয়ন দেওয়া হয়। আমরা আন্তর্জাতিক প্রাথমিক বা শ্রমিক সংগঠন নিয়ে পড়াশোনো বা উচ্চ শিক্ষিত কাউকে পাইনি। তবে এই নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। অবাঞ্ছিত কিছু বিষয় সামনে আসার সকলেরই বিড়ম্বনা বেড়েছে। তাই তাঁরা ওই পদ থেকে পদত্যাগ করলেন।” পদত্যাগী দুই তৃণমূল নেতার বদলে কাদের ওই পদে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সে প্রসঙ্গে মন্ত্রীর মন্তব্য, “আমরা দেখছি। যথা সময়ে সব জানানো হবে।”
সম্প্রতি ওই দু’জনকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট সদস্য মনোনয়ন করা হলে রাজ্যের শিক্ষা মহলে হইচই পড়ে যায়। ২০০৯-এ তৎকালীন স্কুল পরিদর্শকের মুখে থুতু ছেটানোর অভিযোগ ওঠে রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে মামলা চলছে। তার জেরে প্রাথমিক শিক্ষক রঞ্জনবাবু সাসপেন্ড হয়ে রয়েছেন। অন্য দিকে, জয়দীপবাবু উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েছেন। তা নিয়ে শিক্ষা মহল-সহ বিদ্বজ্জনদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া নিয়ে আনন্দবাজারে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত
হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বিদ্বজ্জনদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন। বিষয়টি নজরে আসে তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও।
এর পরেই তাঁদের পদত্যাগ করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ দিন ওই দু’জনের ইস্তফাপত্র সাংবাদিকদের পড়ে শোনান গৌতমবাবুই। তিনি জানান, রঞ্জনবাবু পদত্যাগের চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমার মনোনয়নকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একটি অনিচ্ছাকৃত এবং অনভিপ্রেত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নানা বির্তক রয়েছে। এতে গভীরভাবে মর্মামত, দুঃখিত এবং লজ্জিত বোধ করছি। এ ছাড়াও দলের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষা দফতরের সম্মানের স্বার্থে আমার মনোনয়ন পুর্নবিবেচনার আবেদন করছি।’ একই ভাবে জয়দীপবাবুর চিঠির মর্মার্থ, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ বিতর্ক তৈরি হওয়ায় তিনি ব্যক্তিগত বিড়ম্বনায় পড়ার পাশাপাশি দলের ভাবমূর্তি খারাপ হওয়ার প্রশ্ন উঠেছে। তাই ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। |
|
|
 |
|
|