মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পরে গত চার দিন ধরে অন্ধকারেই হাতড়াচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে শনিবার রাত আটটা নাগাদ বিহারের কিষানগঞ্জ থেকে সন্দেহভাজন এক যুবককে আটক করল পুলিশ। এরই মধ্যে বিস্ফোরণ নিয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পরে মুম্বইয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সিসিটিভি ফুটেজ স্ক্যান করে এক সন্দেহভাজনের স্কেচ আঁকার কাজ শেষ করেছে মহারাষ্ট্র সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)। দ্রুত ওই ছবি প্রকাশ্যে আনা হবে বলে তারা জানিয়েছে।
|
গত তিন চার দিন ওষুধও খাননি। পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ একেবারেই মিথ্যে। ময়নাতদন্তে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।” বিতর্ক এড়াতে মহারাষ্ট্রের ডিজিপি অজিত পারাসনিস ইতিমধ্যেই ফৈয়জের মৃত্যুর সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দিকে, বিহার পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর একটি দল এক যুবককে গ্রেফতার করে জেরা শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বছর তিরিশের ওই যুবকের নাম রিয়াজুদ্দিন খান ওরফে আকাশ শেখ ওরফে রিয়াজুল সরকার। এক মাস ধরে সে ঘাঁটি গেড়েছিল কিষানগঞ্জের পৌনাখালি থানার মহেশপুর গ্রামে মহম্মদ মেহতাব আলমের বাড়িতে। মেহতাবকেও আটক করে জেরা করছে পুলিশ।
মুম্বইয়ের ঠিকাদারের পরিচয় দিয়ে মাসখানেক আগে মেহতাবের বাড়িতে উঠেছিল রিয়াজুদ্দিন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই সে ব্যক্তিগত কাজে বাইরে চলে যেত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ১০ থেকে ১৪ জুলাই গ্রামে ছিল না রিয়াজুদ্দিন। ১৩ জুলাই পর পর তিনটি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মুম্বইয়ের অপেরা হাউস, দাদার ও জাভেরি বাজার। ঠিক তার পর দিন গ্রামে ফিরে আসে রিয়াজুদ্দিন। তার দু’হাতের তালুতে আগুনে পুড়ে যাওয়ার মতো ক্ষতচিহ্ন ছিল। গ্রামবাসী পুলিশকে বিষয়টি জানান। এই খবরে সন্দেহ গাঢ় হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীরও। তার পরেই অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় রিয়াজুদ্দিনকে।
তবে রিয়াজুদ্দিনকে জেরা করে ঠিক কী জানা গিয়েছে, সে সম্পর্কে মুখে একেবারেই কুলুপ এঁটেছে বিহার পুলিশ। বিহার পুলিশের ডিজি নীলমণি শুধু বলেন, “কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর সন্দেহ হওয়ায় এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই ব্যক্তি গুজরাতি, কন্নড় এবং বাংলা বলতে পারে। ঠিক কী উদ্দেশ্যে কিষানগঞ্জের ওই গ্রামে সে থাকতে শুরু করেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পূর্ণিয়া রেঞ্জের ডিআইজি অমিত কুমার বলেন, “পুলিশের জেরার মুখে ওই যুবক বিভিন্ন রকম তথ্য দিয়েছে। তাতেই সন্দেহ বেড়েছে। আমরা ওর আসল পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছি।” পুলিশ সূত্রের খবর, জেরার মুখে রিয়াজুদ্দিন প্রথমে জানায়, সে গুজরাতের বাসিন্দা। বাবার নাম মালে খান এবং বোনের নাম পায়েল বেগম। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই আবার জানায়, সে মধ্যপ্রদেশের বারুদের বাসিন্দা। হুজির মতো জঙ্গি সংগঠনে সঙ্গে রিয়াজুদ্দিনের কোনও যোগাযোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এটিএস আজ উত্তরপ্রদেশের ভাটকলের বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়েছে। ইন্ডিয়া মুজাহিদিনের বেশ কয়েক জন সদস্য বন্দি রয়েছে ভাটকলের জেলে। এরা আমদাবাদ বিস্ফোরণে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। এটিএস তাদেরও জেরা করতে চায়।
বিস্ফোরণের সূত্রে প্রভাকর বাগরাও নামে এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করেছে মুম্বই পুলিশ। কুরলা থেকে এক ব্যক্তি ওই কনস্টেবলকে সন্ত্রাসের ছক সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রভাকর তাতে কান দেননি বলে অভিযোগ। এই খবর জানার পরেই তড়িঘড়ি তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। |