|
|
|
|
 |
আতঙ্ক গ্রাস করেনি বাজারকে,
সূচকের ওঠাপড়া গণ্ডির মধ্যেই
অমিতাভ গুহ সরকার |
|
গোটা সপ্তাহটা ছিল ভরপুর দুঃসংবাদে। কালকা মেল-সহ জোড়া রেল দুর্ঘটনা, মুম্বইয়ে ত্রিমুখী বিস্ফোরণ, হ্রাসমান শিল্পোৎপাদনের খবর এবং ইনফোসিস ও টি সি এস-এর আশার তুলনায় খারাপ ফলাফল প্রকাশ বাজারকে বেঁধে রেখেছে একটি গণ্ডির মধ্যে। ভাল দিক হল এক সঙ্গে এতগুলি খারাপ খবর সত্ত্বেও বাজার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েনি, সূচক এক ঝটকায় তলিয়ে যায়নি। সপ্তাহভর ওঠাপড়া করে সপ্তাহ শেষে সেনসেক্স থিতু হয়েছে ১৮,৫৬২ অঙ্কে। পরিস্থিতির বিচারে যা খুব খারাপ নয়।
মে মাসে দেশের শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে ৫.৬ শতাংশে, যা গত ৯ মাসের মধ্যে সব থেকে খারাপ। এর ফলে জাতীয় উৎপাদনের হার বছরের প্রথমার্ধে ৮ শতাংশের উপরে ধরে রাখা শক্ত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সুদ বৃদ্ধির ফলেই শিল্পে মন্থরতা এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও মুদ্রাস্ফীতির হার কিন্তু আদৌ কমেনি বরং আরও বেড়েছে। এই কারণে আশঙ্কা, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ফের এক দফা সুদ বাড়াতে পারে ২৬ জুলাই। সুদ বাড়ালে আবার তার প্রতিক্রিয়া পড়বে শিল্পের উপর। এই উভয় সঙ্কট থেকে কী ভাবে বেরিয়ে আসা যায়, তার দিশা কেউই দেখাতে পারছেন না। আসলে উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সমঝোতা করেও মুদ্রাস্ফীতিকে বাগে রাখার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।
স্টেট ব্যাঙ্কের পর গত সপ্তাহে ঋণের উপর সুদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক। সুদের পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে জমা প্রকল্পগুলিতেও। সুদ বৃদ্ধির প্রভাব এখন বেশ স্পষ্ট গাড়ি শিল্পে। গত ২৭ মাসের মধ্যে জুনে গাড়ি বিক্রি বৃদ্ধির হার ছিল সব থেকে কম। এপ্রিলে ১৩ শতাংশ এবং মে মাসে ৭ শতাংশের জায়গায় জুন মাসে গাড়ি বিক্রি বেড়েছে মাত্র ১.৬২ শতাংশ। মন্থরতা এসেছে বাড়ি ও ফ্ল্যাট বিক্রির ক্ষেত্রেও। মনে রাখতে হবে অন্য অনেক শিল্প নির্ভর করে এই দুই শিল্পের উপর।
শেয়ার বাজারের দুর্দিনে সোনা কিন্তু অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে সেনসেক্সকে। মুম্বই সূচক যখন বার বার ১৯ হাজার ছুঁতে ব্যর্থ হচ্ছে, তখন পাকা সোনার দর পৌঁছে গিয়েছে ২৩ হাজারের ওপারে। বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা চলতে থাকলে সোনার দাম চড়াই থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাধারণ নাগরিকদের জন্য ব্যাঙ্কের মেয়াদি জমায় এখন সর্বোচ্চ সুদ পাওয়া যাচ্ছে ৯.২৫ শতাংশ। প্রবীণ নাগরিকেরা পাচ্ছেন অতিরিক্ত ০.৫০ শতাংশ। ব্যাঙ্ক অফ বরোদার ৪৪৪ দিন মেয়াদের ‘উৎসব’ জমা প্রকল্পে সাধারণ নাগরিকদের জন্য সুদের হার ৯.৩৫ শতাংশ। চড়া সুদের জমানায় আবার বাজারে আসতে শুরু করেছে কোম্পানি বন্ড। সুদের হার ১০ শতাংশের কিছু বেশি। বাজারে আছে কোম্পানি জমা প্রকল্পও। সুদের হার ব্যাঙ্কের তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও লগ্নি করার আগে সুরক্ষার দিকটা ভাল করে দেখে নেওয়া উচিত।
ইক্যুইটির বাজারে বেশ কিছু দিন ধরে অনিশ্চয়তা থাকায় আর তেমন লাভের মুখ দেখতে পারছে না ইক্যুইটি নির্ভর মিউচুয়াল প্রকল্পগুলি। তুলনামূলক ভাবে ভাল জায়গায় ঋণ-নির্ভর প্রকল্পগুলি। করদাতাদের কাছে এখন বেশ আকর্ষণীয় ফিক্সড ম্যাচিওরিটি প্রকল্পগুলি, যার চালু নাম ‘এফ এম পি’। ৮ শতাংশে আটকে আছে বেশির ভাগ ডাকঘর সঞ্চয় প্রকল্প। সব দিক থেকে দেখলে ব্যাঙ্ক জমা প্রকল্পগুলিই এখন তুলনায় বেশি আকর্ষণীয়। |
|
|
 |
|
|