|
|
|
|
|
|
|
সৌমিত্রকে নিয়ে তথ্যচিত্র |
ফিরে দেখা |
তখন রেডিয়োর চাকরির ফাঁকে ফাঁকে সৌমিত্র শুটিং দেখতে যান সত্যজিতের ছবির, তখনও সত্যজিৎ সৌমিত্রকে সম্বোধনের সময় ‘আপনি’ বলেন। ‘জলসাঘর’-এর শুটিং, ১৯৫৭, সত্যজিৎ বললেন ‘আপনার সঙ্গে ছবি বিশ্বাসের আলাপ নেই তো? আসুন, আলাপ করিয়ে দিই।’ ছবি বিশ্বাসকে বললেন ‘‘ছবিদা, এঁর নাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ইনিই আমার পরের ছবি ‘অপুর সংসার’-এর অপু।” শোনার পর কেমন অনুভূতি হয়েছিল সে-কথা জানিয়েছেন সৌমিত্র অনেক পরে: “আমার চোখের সামনে যেন ‘জলসাঘর’-এর সেটের ঝাড়লণ্ঠন দুলে উঠলো পায়ের তলায় মাটি নেই, নক্ষত্রদের হাত ধরে উড়ছি।” (পরশ-মানিক, অরুণেন্দ্র মুখোপাধ্যায়)। সৌমিত্রকে নিয়ে ধারাবাহিক কাজ করেছেন অরুণেন্দ্র, বই লিখেছেন, ছবি করেছেন, তাঁকে নিয়ে এ রকম কাজ আর করেছেন অনসূয়া রায়চৌধুরী। এই প্রথম সরকারি ফিল্মস ডিভিশন তৈরি করল একটি তথ্যচিত্র: সৌমিত্র রিভিজিটেড। এর গবেষণার কাজও অরুণেন্দ্ররই। ছবির পরিচালক সন্দীপ রায় প্রয়াত-অভিনেতা দিলীপ রায়ের ভ্রাতুষ্পুত্র, জানালেন ‘কাকা-ই এ-ছবির চিত্রনাট্য করে গিয়েছেন, প্রায়ই বলতেন কবে পুলুকে নিয়ে কাজটা শুরু করবি?’ |
|
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার ছবিতে সৌমিত্রর কর্মময় জীবনের একটা সামগ্রিক চেহারা ধরার চেষ্টা-- ছবি ছাড়াও নাটকে তাঁর অভিনয়, নাটক লেখা-পরিচালনা, কবিতা লেখা, আবৃত্তি, পত্রিকা সম্পাদনা... তবে সবচেয়ে আনন্দ পেয়েছেন সন্দীপ ‘‘পুলুকাকুকে দিয়ে এ-ছবিতে গান গাওয়াতে পেরে। উনি যে গাইতে পারেন অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ জনেরাই জানেন শুধু, সে গোপনতা ভেঙে শেষ পর্যন্ত ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’ গেয়েছেন অনেক অনুরোধের পর।” আর সৌমিত্র জানালেন ‘দিলীপের ভাইপো তো, ছোট থেকে দেখছে, ও জানে আমার কাজকর্মের ধরন।’ আর্কাইভের জন্যে জরুরি এ-ছবিটি দেখা যাবে ১১ জুলাই সন্ধে ৬টায় আইসিসিআর-এর সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে। বিদেশের সরকারি সম্মান পেয়েছেন সৌমিত্র, বিদেশি চলচ্চিত্রকার তাঁকে নিয়ে ছবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারও তাঁকে সম্মানিত করেছে, এ বারে ছবিও করল। রাজ্যের কি কিছুই করার ছিল না?
|
প্রয়াণ |
এ দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার। যা ভাবত সেটাই করত, অসম্ভব ওরিজিনাল। শিল্পের শর্ত মেনে চলত, কখনও সমঝোতা করত না। সদ্যপ্রয়াত মণি কল সম্পর্কে বলছিলেন মৃণাল সেন। মণি কল কাশ্মীরি, জন্ম রাজস্থানে। ষাটের দশকের শেষে ‘ভুবন সোম’-এর মতোই তাঁর প্রথম ছবি উসকি রোটি ভারতীয় ভিন্ন ধারা বা সমান্তরাল সিনেমার পথ-নির্দেশক হয়ে ওঠে। দুবিধা, ঘাসিরাম কোতোয়াল, নজর, ইডিয়ট তাঁর বিখ্যাত ছবিগুলির কয়েকটি। সিদ্ধেশ্বরী ও আরও দু’-একটি তথ্যচিত্র দেখিয়ে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবে নন্দন। ১২ জুলাই বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নন্দন-৩-এ ছবিগুলি দেখানোর আগে তাঁর চলচ্চিত্র-জীবনের নানা দিক নিয়ে বলবেন গৌতম ঘোষ অশোক বিশ্বনাথন অমিতাভ চক্রবর্তী সুভদ্র চৌধুরী শেখর দাশ বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং মৈনাক বিশ্বাস ও সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়।
|
রান্নার খোঁজে |
তিনি রাঁধেন। আর তা নিয়ে বইও লেখেন। আদতে কলকাতার বাসিন্দা সঞ্চয়িতা ভট্টাচার্য আলম বিশ্বের নানা ‘অচেনা’ খাবারের রেসিপি নিয়ে লিখেছেন ট্রাভেলিং ফ্লেভারস্। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে স্নাতকোত্তর করার পরে ফ্যাশন নিয়ে ডিপ্লোমা করেছেন। এর পরে সোজা জার্মানি। সেখানে গথিক ইনস্টিটিউট থেকে জার্মান ভাষা শিখে নেমে পড়লেন রান্নার জগতে। ২০০১-এ কলকাতায় প্রথম রেস্তোরাঁ খোলেন তিনি। লন্ডনে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেখানকার বিখ্যাত কয়েকটি রেস্তোরাঁয় হাতে-কলমে কাজও শেখেন। তার পরে কলকাতায় আরও একটি রেস্তোরাঁ কিন্তু রান্না নিয়ে গবেষণা থেমে থাকেনি তাঁর। সঞ্চয়িতাদেবীর কথা, “রান্নার সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রতিটি জাতির স্বতন্ত্র পরিচয়। সে কারণে প্রতিটি দেশের কূটনৈতিক মিশনে রান্না এখন অপরিহার্য।” নানা দেশ ঘুরে রান্নার রেসিপি সংগ্রহ করা তাঁর নেশা। সে বিক্ষোভে উত্তাল মিশর হোক অথবা গ্রিস। সেই রান্নার বই নিয়ে ২২ জুলাই পাঠক-শ্রোতাদের মুখোমুখি হবেন তিনি, এলগিন রোডের ক্রসওয়ার্ডে। প্রতিটি রেসিপি-র পিছনে লুকিয়ে রয়েছে কোনও বিশেষ ঘটনা। আর তা শুনতেই উৎসুক সকলে।
|
হেরিটেজ কুইজ |
এ দেশে আয়করের ধারণার সূচনা এই জুলাই মাসেই। আর সেটা এই শহরেই। ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী তখন কলকাতা। ভারতের তখনকার ভাইসরয়ের প্রথম ফিনান্সিয়াল মেম্বার জেমস উইলসন ২৪ জুলাই ১৮৬০ আয়করকে সম্পদ সংগ্রহের একটি পদ্ধতি রূপে চালু করেন। সেই ঘটনা মনে রেখে ভারতে আয়করের সার্ধশতবর্ষ পালন গত বছরই শুরু করেছিল আয়কর বিভাগ। গত বছর জুলাই মাসেই এ শহরে এক শিল্পশিবির দিয়ে দেশব্যাপী উদ্যাপন শুরু হয়েছিল। এ বার এ শহরে আয়কর নিয়ে স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে ‘হেরিটেজ কুইজ’। ৯ জুলাই আইসিসিআর-এর সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন সূচনা করলেন কুইজের।
|
সংরক্ষণের উদ্যোগ |
সভ্যতা এগিয়ে চলে নিজের পথ ধরে, পেছনে পড়ে থাকে তার পদচিহ্ন। মানুষ বোধহয় সব সময় তা ফিরেও দেখে না। ফলে আজ যা সহজলভ্য, কাল তাই-ই হয়ে ওঠে দুষ্প্রাপ্য। সমাজ ইতিহাস নিরীক্ষণে যার প্রয়োজন মনে রাখা জরুরি। বিচ্ছিন্ন ভাবে এ বিষয়ে কাজ করছেন অনেকেই, তাদেরই কয়েকজনকে এ বার একসূত্রে গেঁথে দিলে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ফর দ্য আর্টস। সংস্থাটি চলচ্চিত্র বই শিল্পকর্ম দলিল প্রদর্শনী ও বিভিন্ন উপস্থাপনায় সহায়তা করে থাকে। এ পর্যন্ত আই এফ এ ২৮৫টি প্রকল্পে সাহায্য করেছে। ২০০৬ থেকে শুরু করে আই এফ এ-বাংলা উদ্যোগে ৯টি বিষয় অনুদানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই সব তথ্য খুব শীঘ্রই ছেপে অথবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে হাজির করা হবে। সম্প্রতি আকার প্রকার গ্যালারিতে পাঁচ কৃতী অনুদান প্রাপক উপস্থাপন করলেন তাঁদের কাজ। ছিলেন সুরজিৎ সেন (ফকিরি গান ও কথোপকথন), কমল সাহা (১৭৯৫-২০০০, বাংলা নাটকের নথি), শুভেন্দু দাশগুপ্ত (দুই বাংলার ব্যঙ্গচিত্রের ইতিহাস), ইন্দিরা বিশ্বাস (১৯৩০-১৯৫০ বেতার জগৎ-এর প্রবন্ধ) ও স্কুল অব উইমেনস স্টাডিজ, যাদবপুর (১৮৮০-১৯৭০, বাংলার মহিলাদের আলোকচিত্র নথিভুক্তি)।
|
প্রভু আমার... |
তাঁর জন্মদিন রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনের আগের দিন, ২৪ বৈশাখ। সে জন্যই রবীন্দ্রনাথ তাঁর নাম রেখেছিলেন পূরবী। এগারো বছর বয়সে প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কাছে। তার পরে হেমন্ত মুম্বই চলে গেলে ‘জর্জদা’ দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে শিখেছেন অনেক দিন। পঁচাত্তরে পড়েছেন দু বছর আগে। এখনও নিয়মিত রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চা করে চলেছেন ‘ফুল্লরা’ সংস্থায়। রবীন্দ্রসার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে সম্প্রতি তাঁর সিডি ‘প্রভু আমার প্রিয় আমার’ (মিউজিক ২০০০) প্রকাশিত হল। ন’টি গান, সবকটিই জর্জদা-র কাছে শেখা, জানালেন পূরবী।
|
ব্যতিক্রম |
ভারতীয় ইংরেজি উপন্যাসের জয়জয়কার সত্ত্বেও ভারতীয় ইংরেজি সাহিত্য-সমালোচনাকে স্বীকৃতি জানাতে পশ্চিমি পণ্ডিতরা তেমন প্রস্তুত নন। অন্যতম ব্যতিক্রম ফরাসিবিদ বলে সমধিক পরিচিত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান চিন্ময় গুহ-র টি এস এলিয়ট সম্পর্কিত গবেষণা গ্রন্থ হোয়্যার দ্য ড্রিমস ক্রস: টি এস এলিয়ট অ্যান্ড ফ্রেঞ্চ পোয়েট্রি। বইটি বিশ্ববিখ্যাত ইংরেজ সমালোচক স্যর ফ্রাঙ্ক কারমোড, এলিয়ট এস্টেটের ডিরেক্টর জন বডলি, এলিয়টের নামের সঙ্গে ওতপ্রোত ফেবার অ্যান্ড ফেবারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পেয়েছে। রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্তের ভাষায়, ‘দ্য বুক ইজ ট্রুলি ওরিজিনাল।’ অক্সফোর্ড, ওয়রউইক, ম্যানচেস্টার ও উরসটার বিশ্ববিদ্যালয় চিন্ময়কে এলিয়ট-বিষয়ে একক বক্তৃতায় আহ্বান করে। ইতিপূর্বে ফরাসি ভাষায় অধিকারের জন্য দেরিদার প্রশংসা পেয়েছেন চিন্ময়, পেয়েছেন ফরাসি সরকারের ‘শ্যভালিয়ে’ উপাধি, কিন্তু ইংরেজি সাহিত্যে এই স্বীকৃতিও নিশ্চয় কম নয়! এলিয়ট-বিষয়ক সেই গুরুত্বপূর্ণ বইটির নতুন সংস্করণ প্রকাশ করলেন ম্যাকমিলান।
|
মহাগ্রন্থ |
হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে সেই দেড়শোর স্মরণ। হাজার মানে, হাজার পৃষ্ঠা। আকারে রীতিমতো মহাগ্রন্থ ‘পশ্চিমবঙ্গ’ পত্রিকার রবীন্দ্রস্মরণ সংখ্যা। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাজীবন, পল্লিজীবন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সৃজনজীবন ইত্যাদি নানা দিকে প্রবন্ধ লিখেছেন বিশিষ্টজনেরা। আছে গীতাঞ্জলি-র শতবর্ষ নিয়ে ক্রোড়পত্র। ঠাকুরবাড়ির কুলপরিচয়, রবীন্দ্রজীবনপঞ্জি, নির্বাচিত রবীন্দ্রগ্রন্থপঞ্জি-র মতো জরুরি অনুষঙ্গ তো আছেই। আছে নানা উৎস থেকে নেওয়া অজস্র ছবি। তবে ছবিগুলি আর একটু বড় আকারে যত্নে মুদ্রিত হলে ভাল হত। এবং, সরকারি ভর্তুকি-র রীতি বজায় রেখে ঢাউস সংকলনটির মূল্য দুশো টাকা।
|
প্রস্তুতি পর্ব |
১৬ মে ২০১১ কলকাতার এক বালিকা বিদ্যালয়ে জ্বলে উঠল ১২২টি প্রদীপ। অশীতিপর প্রবীণা থেকে শুরু করে সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ নবীনারাও মেতে উঠলেন সেই প্রদীপ প্রজ্জ্বলনে। তাঁরা সবাই যে ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়ের প্রাক্তনী। যখন মেয়েদের পড়াশোনা করাটা ছিল রীতিমতো বিদ্রোহ, তখন কয়েকজন আদর্শবাদী ব্রাহ্ম যুবক মেতে উঠেছিলেন এক বালিকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে যেখানে সর্বাত্মক শিক্ষার সুযোগ পাবে মেয়েরা। শিবনাথ শাস্ত্রী, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, নীলরতন সরকার প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব জড়িত ছিলেন ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয় সৃজনপর্বে। এটি যথার্থ শিক্ষালয়ের রূপ পেল লেডি অবলা বসুর সম্পাদিকা-পর্বে। পাঠ্যসূচি-বহির্ভূত নানা বিষয়ে মেয়েদের পারদর্শী করে তোলার চেষ্টা সব সময়ই ছিল। এই শিক্ষালয়ে ছিল সংগীতশিক্ষার ব্যবস্থা, যার প্রথম শিক্ষাগুরু উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। ড্রিল, ব্যায়াম তো ছিলই; বিপ্লবী পুলিনবিহারী দাস লাঠি ও ছোরাখেলা শেখান। যুযুৎসু শেখানোরও ব্যবস্থা ছিল। শুক্রবারের শেষ ক্লাসটি ছিল বিনোদনের ক্লাস। ছাত্রী নলিনী দাস স্থাপন করলেন এক অন্তরঙ্গ ক্লাব, নাম ‘আজগুবিয়া’। ১৯৩০-এ তৈরি হয় মন্তেসরি বিভাগ। এই বিভাগের শিক্ষিকাদের লেডি অবলা বসু পাঠিয়েছিলেন মাদাম মন্তেসরির কাছে শিক্ষা নিতে। এই শিক্ষালয় ১২৫ বছরে পা দেবে ২০১৪-এ। ১৬ মে প্রতিষ্ঠা দিবসে শুরু হল তারই প্রস্তুতি। উদ্দেশ্য, হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনা।
|
ইচ্ছে |
|
নক্ষত্র সমাবেশই বটে! সুচিত্রা ভট্টাচার্যের কাহিনি নিয়ে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর নিবেদন ইচ্ছে, তাতে রূপম ইসলাম তাঁর গান নিয়ে সশরীরে উপস্থিত। মা-ছেলের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে ছবি। মা-র চরিত্রে সোহিনী সেনগুপ্ত জানালেন ‘আমার অভিনয়ে সব মা-রাই সম্ভবত নিজেদের খুঁজে পাবেন, আবার হয়তো লজ্জাও পাবেন। ছেলের প্রতি মা-র ভালবাসাটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে যা হয়...।’ আর বাবা-র চরিত্রটা করতে বেশ মজাই লেগেছে ব্রাত্য বসুর: ‘মা-ছেলের টেনশনটাকে প্রশমিত করাই আমার কাজ। নতুন প্রজন্মের সঙ্গে বোঝাপড়াও এটা।’ সোহিনী-ব্রাত্য দু’জনারই অসাধারণ পারফরমেন্স, জানালেন এ ছবির যুগ্ম-পরিচালক নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে দ্বিতীয় জন: ‘ছবিটা করতে গিয়ে মনে হচ্ছিল যেন নিজের জীবনের কথা... আমার সঙ্গে আমার মা-র সম্পর্কটা খুঁজে পাচ্ছিলাম...এত ভিতরের কথা কী ভাবে লিখলেন সুচিত্রাদি!’ ১৫ জুলাই কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি।
|
কেনিয়ার শিল্প |
আফ্রিকার মানুষদের শিল্পকৃতি প্রসঙ্গে আচার্য সুনীতিকুমার লিখেছিলেন, ‘ইহার মধ্যে আফ্রিকার কালো মানুষের যে-বিশিষ্ট মানবিকতা বিদ্যমান, তাহা-ই আমাকে বেশি করিয়া আকুল করে।’ ও দেশের সহজ সরল অথচ নান্দনিক শিল্পবস্তুর কদর এখন বিশ্ব জুড়ে। সুদূর কেনিয়া থেকে এমত শিল্পসামগ্রী এখন এ শহরের সাশা বিপণিতে। ওখানকার শিল্পীদের তৈরি কাঠের মূর্তি, মুখোশ, পাথরের মূর্তি, কাঠের বাটি-চামচ-ছোট থালা-ট্রে অথবা গয়নাগাঁটি নিয়েই এই প্রদর্শনীটি সাজানো। সঙ্গে রয়েছে সাশা-র নিজস্ব সংগ্রহ থেকে বেতের সামগ্রীও। ‘কেন অ্যান্ড কেনিয়া’ শীর্ষকে প্রদর্শনীটি সম্প্রতি উদ্বোধন করেন তনুশ্রীশঙ্কর, চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত, রোজ ১০-৭টা।
|
অন্য কণিকা |
|
যে গানে তিনি বিশ্ববন্দিত সেই রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে এক বার লিখতে বলা হয়েছিল তাঁকে। সেই লেখায় ছিল এমন একটি লাইনও, ‘রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে আমি কী লিখব? আমি তো শুধু তাঁর দুয়ারে নিত্য ভিক্ষা নিতে যাই।’ ঠিকই, রবীন্দ্রসঙ্গীতেই নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘মোহর’ নামটি জড়িয়ে গিয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গেই। কিন্তু তার বাইরেও ছিলেন এক অন্য কণিকা। অতুলপ্রসাদ-রজনীকান্তের গান, এমনকী কীর্তনেও বেজে উঠেছে কণিকা-কণ্ঠ। হরেন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অতুলপ্রসাদের গান, কমল দাশগুপ্তের কাছে নজরুলগীতি এবং জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের কাছে শিখেছেন ভজন। দুষ্প্রাপ্য রেকর্ডে ছিল সে সব, বিচ্ছিন্ন ভাবে ক্যাসেটেও প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু এ বার রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে সেই সব গান নিয়ে সঙ্গীতশিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পূর্ণ রূপটিকে ধরতে চেয়েছে সারেগামা। সেই লক্ষ্যে প্রকাশিত হল ‘মিউজিক্যাল জার্নি উইথ কণিকা’ নামে তিনটি সিডি-র একটি সংগ্রহ। ছবি: পরিমল গোস্বামী, হিমানীশ গোস্বামীর সৌজন্যে। |
|
|
|
গবেষক |
প্রয়াণের পর কেটে গেছে চার দশক, কিন্তু আজও তাঁর লেখা প্রায় প্রতিটি গ্রন্থই আগ্রহীদের পরম সম্পদ। বরিশালের চলিশা গ্রামে ২৭ মে ১৯০৩ সালে জন্ম যোগেশচন্দ্র বাগলের। বাবা জগদ্বন্ধু, মা তরঙ্গিণী দেবী। কলকাতার সিটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা। ২৬ বছর বয়সে রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকায় যোগ দেন। সহকর্মী তখন ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সজনীকান্ত দাস, নীরদ চৌধুরীর মতো ব্যক্তিত্ব। ৩৭ বছর বয়সেই প্রথম গবেষণাগ্রন্থ ভারতের মুক্তিসন্ধানী রচনা করেন। একে একে ইংরাজি ও বাংলায় হিস্টরি অব দ্য ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, পেজেন্ট রিভোলিউশন ইন বেঙ্গল, হিস্টরি অব দ্য গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্টস, মুক্তির সন্ধানে ভারত, ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা, কলিকাতার সংস্কৃতি কেন্দ্র, হিন্দুমেলার ইতিবৃত্ত, বঙ্গ সংস্কৃতির কথা, ডিরোজিও তাঁর স্মরণীয় সৃষ্টি। ১৯৩৫ সালে তিনি ‘দেশ’ পত্রিকায় বিবিধ আন্তর্জাতিক বিষয়ে কলম লিখতেন। ১৯৬১ সালে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারালেও, ১৯৭২-এ প্রয়াণের আগে পর্যন্ত অনুলিখনের মাধ্যমে সমাপ্ত করেন পাঁচটি নতুন গবেষণাগ্রন্থ। ১৯৬০-এ নব ব্যারাকপুরের বাড়িতে গড়ে তোলেন ‘সাহিত্যিকা’ সংস্থাটি। ২০০৩-এ তাঁর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে স্থানীয় পুরসভা তাঁর নামে একটি রাস্তার নামকরণ করেছেন, বাড়িতে স্থাপন করেছেন যোগেশচন্দ্রের একটি ব্রোঞ্জমূর্তি। ‘সাহিত্যিকা’র সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘সুবর্ণরেখা স্মারক গ্রন্থ’-এ পুনর্মুদ্রিত হয়েছে বাংলার নব্য সংস্কৃতি। তাঁর স্মৃতিকথা জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে (দে’জ) সম্প্রতি প্রকাশিত। অবশ্যই এই গ্রন্থ এক বড় প্রাপ্তি। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের রামপ্রাণ গুপ্ত পুরস্কার, শিশিরকুমার ঘোষ স্মৃতি পুরস্কার ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক পেয়েছেন তিনি। আশার কথা, পুত্র প্রশান্ত বাগলের উদ্যোগে সম্প্রতি যোগেশচন্দ্রের বেশ কয়েকটি গ্রন্থ আবার প্রকাশিত হচ্ছে। |
|
|
|
|
|
|
|