|
|
|
|
বাজার ফের ঝিমিয়ে, চিন্তায় জেলার হল মালিকেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা• নবদ্বীপ |
‘পাগলু’ এবং ‘শত্রু’র পরে আবার কোনও বড়সর হিট চাইছে মফস্সল গঞ্জের সিনেমা হল মালিকেরা। তাঁদের বক্তব্য, একই সঙ্গে দু’টো ভাল হিট ছবি বাজারে চলে আসায়, বাংলা সিনেমার বাজার আবার তেতে উঠেছিল। সাত সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত প্রায় হাউসফুল থেকেছে একের পর এক সিনেমা হল। কিন্তু এ বার উৎসাহ কিছুটা হলেও কমেছে। নবদ্বীপের একটি সিনেমা হলের মালিক ত্রিলোচন ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলা সিনেমা যেন মরসুমি হয়ে গিয়েছে। একবার এক সঙ্গে দু’টো ভাল ছবি এল তো, তার পরে টানা খরা। এ ভাবে এগোলে কিন্তু চলবে না। গ্রামের মানুষ এ বার চান ভাল সিনেমা নিয়মিত ব্যবধানে আসুক। সে কথা পরিবেশক, প্রযোজকেরা ভাবুন।” আর একটি সিনেমা হলের মালিক রথীন কুণ্ডুর কথায়, “বছরে পাঁচটা হিট সিনেমা না হলে সিনেমা হলের ব্যবসা আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে না।”
দেব এবং জিতের ওই দু’টি সিনেমার সৌজন্যে পরপর বেশ কয়েক দিন টানা হাউসফুল বোর্ড টাঙাতে পেরেছেন হল মালিকেরা। মানুষও আবার সিনেমা হলে ফিরেছেন। কিন্তু সেই উত্তেজনাটা থিতিয়ে যেতেই ফের দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে হল মালিকদের কপালে। তাঁদের কথায়, ওই দু’টি সিনেমাই যে ভাল ব্যবসা করেছে তাই নয়, অনেক দিন পরে বাণিজ্যিক বাংলা সিনেমায় দু’জন হিরোর অনুরাগীও তৈরি হয়েছে। এটাই বাজার ভাল করে দিতে পারে। ‘পাগলু’র পরিবেশক সংস্থার এক কর্তা নিসপাল সিংহ রানে বলেন, “এর আগে এমন কোনও সিনেমা আসেনি, যা অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।” ‘শত্রু’র নিমার্তা সংস্থার সায়ক ভট্টাচার্যেরও দাবি, “প্রথমত এত টাকা বাজেটের বাংলা ছবি হয়েছে বলে মনে হয় না। দ্বিতীয়ত, প্রথম থেকে এমন লাভ আর কোনও বাংলা ছবি আগে কখনও দিতে পারেনি। বলা যেতে পারে বাংলা সিনেমার জগতে এটা একটা নতুন অধ্যায়।” সেই দাবি অনুযায়ী, বাংলা সিনেমার বাজারেও বড় লাভ হওয়ার কথা। কিন্তু হল মালিকদের বক্তব্য, পরপর দু’টো ভাল ছবি হল, বাজার জমে উঠল, কিন্তু বাজারে যদি তারপরে এত বড় ফাঁক তৈরি হয়, তা হলে তো আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে হবে। নদিয়া জেলা সিনেমা হল মালিকদের সংগঠনের সহ সভাপতি রথীন কুণ্ডু বলেন, “অনেক হল জেলায় বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। বাংলা সিনেমায় তেমন কোনও বড় জোয়ার না এলে, সেই সব হল কিন্তু খুলবে না। যাঁরা হল চালাচ্ছেন, তাঁদেরও চিন্তা করতে হবে, সারা বছর কী দেখাবেন!” সুস্মিতা মিত্র বলেন, “বলিউডে সারা বছর ধরেই সিনেমা রিলিজের দিনক্ষণ অনেক হিসেব কষে ঠিক হয়। দীপাবলি বা বড় উৎসবের সময় যেমন বেশি বড় ছবি রিলিজ করে, তেমন অন্য ছবিও থাকে বাকি বছরভর। বাংলায় সেই হিসেব কষে ছবি রিলিজ করার রীতি চাই। তা হলে হল মালিকদের হা পিত্যেস করে বসে থাকতে হবে না।”
সায়কবাবুর অবশ্য দাবি, “বছর তিনেক হল পরিস্থিতিটা বদলেছে। আমরা নিজেরা কিছু সিনেমা হল খুলতে পেরেছি। প্রতিটি লাভজনক ভাবেই চলছে। আরও কিছু হলের দায়িত্বও আমরা নেব।” তিনি বলেন, “‘ওয়ান্টেড’, ‘ফাইটার’, ‘শত্রু’ এই ধরনের ছবি নতুন করে সিনেমা হলে লোক টানতে পেরেছে। এই সব অ্যাকশন ধর্মী সিনেমার পাশাপাশি চলেছে ‘দু’জনে’,‘জামাইরাজা’, ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’র মতো ছবি। তাই হতাশ হওয়ার কোনও কারণই নেই।”
নিসপাল সিংহ রানের কথায়, “আরও ভাল ছবি করতে হবে। নির্ভেজাল বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। তা হলে বন্ধ হলের তালা খুলবে।” |
|
|
|
|
|