|
|
|
|
ষড়যন্ত্র, বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি |
চান্দামারিতে কংগ্রেসের দফতর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা উদ্ধার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
চান্দামারিতে দলীয় দফতর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা উদ্ধারের ঘটনার ‘ষড়যন্ত্র’ ফাঁস করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছে কোচবিহার জেলা কংগ্রেস। শুক্রবার দলের তরফে জেলাশাসকের কাছে ওই আর্জি জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন দলের নেতৃত্ব। কোচবিহার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “চান্দামারি এলাকায় আমাদের অফিস থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা, গুলি উদ্ধারের ঘটনা স্রেফ দলের সুনাম নষ্টের জন্য ষড়যন্ত্র মাত্র। দলের কর্মীরা অফিসে মাটির মেঝেতে বোমা পুঁতে রাখলে কেউ সেখানে থাকতেন না। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলি দলের নয়। সবদিক খতিয়ে দেখে আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছি।” কোচবিহারের জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র জানান, কংগ্রেসের দাবিপত্রটি রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরে পাঠানো হবে। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনের পরে চান্দামারির ওই অফিস তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। তার আগে সেটা খোলামেলা ছিল। সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া লোকজন ছক কষে দলীয় দফতরের মাটির মেঝেতে বোমা সহ অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল। ঘটনার পিছনে তৃণমূলের একটি অংশের মদত রয়েছে। দলের জেলা সভাপতি বলেন, “সিপিএম-ফরওয়ার্ড ব্লকের লড়াইয়ে চান্দামারিতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনেক অভিযোগ ছিল। সেই সমস্ত অস্ত্র ১৫ দিন আগে চালু করা দলীয় দফতরে লুকিয়ে রাখা হয়। পুলিশ নিরেক্ষ নয়। তাই তৃণমূলের কথায় কাজ করেছে।” একই সঙ্গে জেলা সভাপতি অভিযোগ করেন, দলীয় দফতরে অস্ত্র লুকিয়ে রাখার খবর পুলিশকে যে দিয়েছে তাঁকে ঠিকঠাক জেরা করা হলে প্রকৃত তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হবে। তা ছাড়া ৩১ জন মিলে জায়গা বাছাই করে অস্ত্র লুকিয়ে রাখবে এটাও কংগ্রেস নেতৃত্ব বিশ্বাসযোগ্য মনে করছেন না। তাঁদের মতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “ঘটনাটি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর মতো নয়। তাই তাঁকে জানানো হয়নি।” এ দিকে জেলা তৃণমূলের তরফে চান্দামারির ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কংগ্রেসের তোলা অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দলের অন্য নেতা আবদুল জলিল আহমেদ বলেন, “চান্দামারির ঘটনায় কংগ্রেসের সন্ত্রাস সৃষ্টির রাজনীতি প্রকাশ্যে চলে এসেছে। অস্ত্র কেনার টাকা কোথা থেকে আসছে সেটা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব। বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব বিষয়টি আড়াল করতে পারবেন না।” কোচবিহার জেলা পুলিশ কর্তারাও কংগ্রেসের তোলা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখানে পক্ষপাতিত্বের কিছু নেই। কংগ্রেস অফিস থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে জন্য সেটা বলা হয়েছে। ওই ঘটনায় ধৃত ৩১ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত করা হচ্ছে।” পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার কালভার্ট তৈরি নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল সমর্থকদের গোলমালের সময় বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল। ২০ জন জখম হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ চান্দামারি কংগ্রেস অফিস থেকে ২টি দেশি পিস্তল, ১৯ রাউন্ড কার্তুজ, ৩টি ম্যাগাজিন ও ২টি তাজা বোমা উদ্ধার করে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “ওই সমস্ত অস্ত্র, বোমা উদ্ধারের সঙ্গে আমাদের দলের কর্মীদের কোনও যোগাযোগ নেই। কংগ্রেসের তরফে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|