বিক্ষোভ বাঁকুড়া মেডিক্যালেও |
ময়না-তদন্তে গররাজি, ঘাটালে প্রহৃত চিকিৎসক |
নিজস্ব সংবাদদাতা• ঘাটাল ও বাঁকুড়া |
ময়নাতদন্তে রাজি না-হওয়ায় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসককে জরুরি-বিভাগের ভিতর থেকে টেনে এনে বেধড়ক মারধর করা হল শুক্রবার। গর্ভস্থ যমজ সন্তান-সহ এক প্রসূতি মৃত্যুর জেরে এ দিনই আবার তুলকালাম বাধল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজেও।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিখোঁজ ঘাটালের রঘুনাথপুরের নেজিবুল হক (৫৬)-এর ঝুলন্ত দেহ এ দিন ভোরে বাড়ির অদূরেই উদ্ধার হয়। নেজিবুলের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঘাটালের ময়রাপুকুরের মর্গে পাঠায় পুলিশ। |
|
কলকাতার পথে জখম চিকিৎসক প্রফুল্ল মণি। নিজস্ব চিত্র |
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক প্রফুল্ল মণির আবার সে সময়ে ডিউটি ছিল মহকুমা হাসপাতালের জরুরি-বিভাগে। তিনি দেহটি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যেতে বলেন। এর পরেই প্রথমে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে উন্মত্ত লোকজন জরুরি-বিভাগে ঢুকে প্রফুল্লবাবুকে চেয়ার থেকে ফেলে টেনে বাইরে এনে লাঠিপেটা শুরু করে। গুরুতর জখম প্রফুল্লবাবুকে ঘাটাল হাসপাতাল থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। হামলাকারীদের হাতে নিগৃহীত হন নার্স ও অন্য কর্মীরাও। চলে ভাঙচুরও। সুপার অনুরাধা দেব বলেন, “সকালে দু’টি ময়নাতদন্ত করেছিলেন প্রফুল্লবাবু। ঘটনার সময়ে তাঁর ডিউটি ছিল জরুরি-বিভাগেই। পুলিশকে সব জানিয়েছি।” হামলাকারীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানান পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি। হাসপাতালে পৌঁছন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্রও। |
|
এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার উত্তেজনা ছড়ায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
গাফিলতির অভিযোগে বিক্ষোভ হয়। জরুরি বিভাগের দরজার পাল্লা ভাঙা হয়। মৃতার শাশুড়ি
রাস্তায় শুয়ে পড়ে অবরোধ করেন। ছবি: অভিজিৎ সিংহ। |
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজেও তুলকালাম বাধে এ দিন দুপুরে। গর্ভস্থ যমজ সন্তান-সহ লেবাররুমেই মারা যান দুর্গা মুর্মু (২২)। এর পরই খাতড়ার রূপাহেড়ির ওই বাসিন্দার বাড়ির লোকজন বিক্ষোভ শুরু করেন। অন্য রোগীর আত্মীয়রাও সামিল হন। জরুরি বিভাগের দরজার পাল্লা ভাঙে। মৃতার শাশুড়ি সুরজমণি মুর্মুর অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্গাকে ভর্তি করার পরে এক জন চিকিৎসক দেখেছিলেন। তার পরে সারা রাতে এক জন নার্সও আসেননি।” চিকিৎসায় গাফিলতির জন্যই স্ত্রী ও দুই সন্তান মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ দুর্গার স্বামী রঞ্জিত মুর্মুরও। তবে হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু’র দাবি, “ওই প্রসূতির হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা ছিল। সকালেই গর্ভে একটি সন্তান মারা যায়। চিকিৎসকেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেও মা ও অন্য শিশুটিকে বাঁচাতে পারেননি।” |
|