|
|
|
|
বৈদ্যবাটিতে ফের চালু অপরূপা মাতৃসদন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বৈদ্যবাটি |
সাত বছর তালাবন্ধ থাকার পরে অবশেষে খুলল বৈদ্যবাটির অপরূপা মাতৃসদনের দরজা। শনিবার বৈদ্যবাটি পুরসভা পরিচালিত ওই চিকিৎসাকেন্দ্রটি নতুন করে চালু হল। উদ্বোধন করেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরপ্রধান, তৃণমূলের অজয়প্রতাপ সিংহ জানান, শনিবার থেকেই সাধারণ রোগীদের জন্য বহির্বিভাগ খুলে দেওয়া হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, মূলত প্রসূতিদের জন্য গঠিত ওই চিকিৎসাকেন্দ্রটি তৈরি হয়েছিল ১৮৫৯ সালে। এর দশ বছর পরে বৈদ্যবাটি পুরসভা গঠিত হয়। কয়েক বছর আগে শ্রীরামপুরের তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ প্রয়াত আকবর আলি খোন্দকার তাঁর এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ৫৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। তৎকালীন রাজ্যসভার সদস্য কংগ্রেসের জয়ন্ত ভট্টাচার্য ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। ওই ৬১ লক্ষ টাকায় অপরূপা মার্তৃসদনের পরিকাঠামো ঢেলে সাজে। এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন-সহ আধুনিক নানা যন্ত্রপাতি এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা হয়। নতুন করে তৈরি করা হয় অপারেশন থিয়েটার। এর পরে ২০০৪ সালে নব কলেবরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চলতে শুরু করে। তার পরে বিপত্তি বাধে।
সে সময়ে পুরসভার ক্ষমতা ছিল তৃণমূলের দখলে। সিটু এবং আইএনটিইউসি-র যৌথ সংগ্রাম কমিটি মাতৃসদনের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে। বামপন্থী কাউন্সিলরেরাও তাতে সামিল হন। এর জেরে ২১ দিন ধর্মঘট হয় পুরসভায়। সেই নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা হয়। ডামাডোলের জেরে ওই বছরেরই ২৪ জুন মাতৃসদনটি বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকেই এটি তালাবন্ধ অবস্থায় পড়েছিল। লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে কেনা যন্ত্রপাতিও পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছিল।
গত পুরসভা ভোটের আগে তৃণমূল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ক্ষমতায় এলে তারা মাতৃসদনটি খুলবে। নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট। এর পর থেকেই পুরপ্রধান অজয়প্রতাপবাবু স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি কোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। সাংসদ কল্যাণবাবু একটি অ্যাম্বুলেন্সও দিয়েছেন ওই মাতৃসদনকে। পুরপ্রধান জানান, পুরসভার তরফে একটি মনিটরিং কমিটি করা হবে। ওই কমিটি মাতৃসদনের যাবতীয় কাজের তদারকি করবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ‘অপরূপা মাতৃসদন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন’ নামে চিকিৎসকদের একটি ফোরাম তৈরি করা হয়েছে। ওই অ্যাসোসিয়েশনই পুরসভার সঙ্গে যৌথ ভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালাবে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এত দিন বন্ধ থাকার ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে উপযুক্ত অবস্থায় এনে অন্তর্বিভাগও চালু করা হবে। এ জন্য ৬-৭ সপ্তাহ সময় লাগবে। অন্তর্বিভাগে ২৫টি শয্যা রয়েছে। প্রসূতিদের চিকিৎসা ছাড়াও এখানে ছোটখাটো অস্ত্রোপচারও করা হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। খোলা হবে প্যাথলজিক্যাল সেন্টারও। শনিবার বিকেলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলীয় সাংসদ এবং পুরপ্রধান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তিন তৃণমূল বিধায়ক মুজফ্ফর খান, স্বাতী খোন্দকার এবং তপন মজুমদার। ‘অপরূপা মাতৃসদন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন’-এর’ সভাপতি দীপ্তেন চট্টোপাধ্যায়-সহ বৈদ্যবাটি এবং শেওড়াফুলি শহরের কয়েক জন চিকিৎসক এবং বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও, এলাকার অনেক সাধারণ মানুষও হাজির হন। চিকিৎসাকেন্দ্রটি চালু হওয়ায় এলাকার গরিব মানুষ, বিশেষত দরিদ্র পরিবারের প্রসূতিরা উপকৃত হবেন বলে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি। |
|
|
|
|
|