হাড়োয়ায় বাম প্রতিনিধি দল
পরিস্থিতি জানাতে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে, হুমকি আন্দোলনের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার ‘পরিস্থিতি’ জানাবেন বামেরা। অপেক্ষা করবেন সাত দিন। মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা না নিলে হবে আন্দোলন (কলকাতা অচল করে হলেও)। শুক্রবার হাড়োয়ায় গিয়ে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র।
হাড়োয়ায় বর্গাদার ও পাট্টাদারদের জমি তৃণমূল জোর করে দখল করছে এবং বাম কর্মী-সমর্থকদের উপরে অত্যাচার করছে এমন অভিযোগ আগেই করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। প্রতিবাদে দিল্লিতে এবং রাজ্যে তাঁরা প্রচারে নামবেন বলেও জানিয়েছেন। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন বিকেলে সূর্যকান্তবাবুর নেতৃত্বে বাম বিধায়কদের এক প্রতিনিধিদল হাড়োয়ায় যায়। এলাকার ছ’আনি মুচিখোলা বাজারে একটি সভাও করা হয়। প্রতিনিধি দলে সূর্যকান্তবাবু ছাড়াও প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর, প্রাক্তন সাংসদ অমিতাভ নন্দী, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, নারায়ণ মণ্ডল, বিশ্বনাথ কারক, অপর্ণা গুপ্ত, রঞ্জিত চৌধুরী প্রমুখ ছিলেন। হাড়োয়ায় পৌঁছনোর আগে কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বাম-প্রতিনিধিদের কালো পতাকা দেখান।
সূর্যকান্ত মিশ্রের কাছে অত্যাচারের কথা বলছেন সোনা বিবি ও আসমাতারা বিবি। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
হাজারখানেক মানুষের উপস্থিতিতে সভায় সূযর্কান্তবাবুর অভিযোগ, “হাড়োয়ায় বর্গাদার, পাট্টাদারদের জমি কেড়ে নিচ্ছে তৃণমূল। অস্ত্র খোঁজার নামে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের দলের কর্মী-সমর্থকদের উপরে অত্যাচার করছে।” তাঁর দাবি, “সমস্ত দেখে গেলাম। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সব জানাব। সাত দিন অপেক্ষা করব। উনি কোনও ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনে নামব। তাতে কলকাতা অচল হলে হবে।”
সূর্যকান্ত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রশাসন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবে। কিন্তু হাড়োয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিরপেক্ষ নয়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ও কাজে কোনও মিলই নেই। আমরা ক্ষমতায় এসে জমিদার জোতদারদের কাছ থেকে জমি নিয়ে গরিব মানুষকে দিয়েছিলাম। ওঁরা এসে তা গরিব মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছেন।” বিরোধী দলনেতার ‘কটাক্ষ’, “এটাই কি মুখ্যমন্ত্রীর ‘মা-মাটি-মানুষের সরকার’-এর ছবি? ওরা ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন’ তৈরি করছে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনদের’ হাত থেকে কারও রেহাই মিলবে না।”
দলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে সূর্যকান্ত বলেন, “এখানে আজ চক্রান্ত করে গরিবদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এটা আমরা মানব না। মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব। কাজ না হলে, আমাদের লড়াইয়ে নামতে হবে।” ওই বাম নেতার দাবি, “ভোটের পরে রাজ্যে আমাদের ২৫ জন খুন হয়েছেন। ওঁকে (মুখ্যমন্ত্রী) বার বার চিঠি দিয়ে সব জানিয়েছি। উনি এক বারই উত্তর দিয়েছেন, ‘বিশদে সব জানান’।”
এ দিন সূর্যকান্তবাবুর কাছে তাঁদের উপরে তৃণমূলের ‘অত্যাচারের কাহিনি’ জানান হাড়োয়ার খাটরা গ্রামের সোনা বিবি ও আসমাতারা বিবি। তাঁদের অভিযোগ, “সিপিএম করি, এই দোষে তৃণমূলের লোকজন আমাদের ঘরবাড়িতে লুঠপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘেরি লুঠ করে। পুলিশ অস্ত্র খোঁজার নামে ঘরে ঢুকেছিল। পুলিশের পিছনেই ওরা ছিল। আমরা এখন পথে পথে ঘুরছি। খাওয়ার সংস্থান নেই।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর দাবি, “এক সময় সিপিএম হাড়োয়ায় পাট্টা দিলেও জমির দখল দেয়নি। রাজ্যে পরিবর্তন আসায় পাট্টা পাওয়া সেই মানুষই জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে, গণ্ডগোল হচ্ছে। এর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।”
Previous Story South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.