|
|
|
|
যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন দিল্লির |
হলদিয়ায় ড্রেজিংয়ে ভর্তুকির দিন কি শেষ, উদ্বেগ বন্দরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বছরেই লাগছে তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো কোটি টাকার ভর্তুকি!
হলদিয়া বন্দরের নাব্যতা বজায় রাখতে এই বিপুল অর্থের ‘ঠেকা’ দিয়ে হুগলি নদীতে ড্রেজিং চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। কিন্তু তা আর কত দিন?
এই নিয়ে উদ্বিগ্ন কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান মদনলাল মিনা। তাঁর উদ্বেগের কারণ, হুগলি নদীতে ড্রেজিংয়ের পিছনে বিশাল ভর্তুকির ‘সার্থকতা’ সম্পর্কে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে জাহাজ মন্ত্রক তো বটেই, এমনকী যোজনা কমিশনও! শুক্রবার বণিকসভা ‘বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স’ আয়োজিত ‘ইস্ট কোস্ট পোর্টস ভিশন ২০২০’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় মিনা বলেন, “ভর্তুকি বন্ধ হয়ে গেলে হলদিয়ার যে কী হবে, ভাবতেই পারছি না!”
কিন্তু কেন্দ্রের এ হেন মনোভাবের কারণ কী?
|
|
কারণের একটা আঁচ মিলেছে বন্দর চেয়ারম্যানের কথাতেই। নিজের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে মিনা বলেন, ২০০২-এ তিনি যখন হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান, তখন সেখানে নদীর নাব্যতা ছিল ৯ মিটার। সেটাই আজ কমে দাঁড়িয়েছে ৭ মিটারে!
এবং এই পরিস্থিতিতে দিল্লির মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, হলদিয়া বন্দরকে সচল রাখতে বছর-বছর ৩০০-৩৫০ কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়াটা কার্যত ভস্মে ঘি ঢালারই সামিল। বস্তুত হলদিয়ায় ড্রেজিং খাতে ভর্তুকি নিয়ে কেন্দ্রের আপত্তি নতুন নয়। কিন্তু টাকাটা যে সত্যি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, বন্দর চেয়ারম্যান এই প্রথম প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন সেই আশঙ্কার কথা।
তা হলে উপায় কী?
মিনা বলেন, স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কয়েকটি সমাধান-সূত্র তাঁদের মাথায় আছে। দেখা গিয়েছে, হলদিয়ার কিছু দূরে শালুকখালিতে নদীর গভীরতা ৯ মিটার। সেখানেই চারটি জেটির ‘হলদিয়া-২’ ডক গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রকল্পটির জন্য দরপত্র ডাকা হবে মাস ছয়েকের মধ্যে। অন্য দিকে ডায়মন্ড হারবারে কন্টেনার টার্মিনাল গড়তে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের
জমি কলকাতা বন্দরকে হস্তান্তরের প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্মতি জানিয়েছে। জমিটি এ মাসেই বন্দরের হাতে আসবে বলে চেয়ারম্যানের আশা। এখানেও ৯ মিটার নাব্যতা পাওয়া যাবে।
তা ছাড়া রয়েছে সাগরদ্বীপে পুরোদস্তুর নতুন বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব। যার জন্য দ্বীপে জমি অধিগ্রহণ না-করে নদীর বুকেই পলি ফেলে দু’হাজার একর নতুন জমি তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন মিনা। হলদিয়ার নাব্যতা বজায় রাখতে অকল্যান্ড ও জেলিংহ্যাম চর থেকে যে পলি তোলা হয়, সেটাই এখন সাগরদ্বীপের লাগোয়া নদীতে ফেলে নতুন জমি তৈরা করা হবে।
নাব্যতা-সঙ্কটে ভুগছে হলদিয়া, অথচ দেশের পূর্ব উপকূলের বন্দরগুলোর গুরুত্ব ক্রমেই বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল শিপিং বোর্ডের চেয়ারম্যান পি ভি কে মোহন। এ দিন আলোচনাসভায় তিনি বলেন, ক’বছরের মধ্যে শুধু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে সচল রাখতে বছরে যে কুড়ি কোটি টন কয়লা আমদানি করতে হবে, তার বেশিটাই আসবে পূর্ব উপকূলের বন্দর মারফত। শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া-র চেয়ারম্যান সব্যসাচী হাজরার বক্তব্য, ছোট (নন-মেজর) বন্দরের গুরুত্বও দিন দিন বাড়ছে। গুজরাত-মহারাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গিয়েছে।
তথ্য বলছে, গুজরাতে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে ৪০টি বন্দর। মহারাষ্ট্রে ৫৩টি।
পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য কলকাতা-হলদিয়া ছাড়া কিছু নেই! |
|
|
|
|
|