চাপান-উতোর
পড়ে আছে স্ট্যান্ড
কাজ শেষ হয়ে গেলেও চালু হয়নি বাস স্ট্যান্ড। ফলে সমস্যাটা রয়েই গিয়েছে। তার উপর অভিযোগ, কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি স্ট্যান্ডটি এখন জবরদখলকারীদের কবলে। জায়গার সমস্যায় ভুগছে পুরনো স্ট্যান্ডটি। যদিও কয়েকটি রুটের বাস অনুমতি ছাড়া ওখান থেকে ছাড়ে। এই হাল টিকিয়াপাড়ার বাস স্ট্যান্ডের। এর কারণ হিসেবে বাসিন্দারা দায়ী করেছেন সরকারি বিভিন্ন দফতরের চাপান-উতোরকেই।
বর্তমান টিকিয়াপাড়া বাস স্ট্যান্ডটি ইস্ট-ওয়েস্ট রোড এবং নটবর পাল রোডের মোড়ের কাছে চ্যাটার্জিপাড়ায়। অপরিসর ওই জায়গায় টিকিয়াপাড়া-সল্টলেক রুটের মিনিবাস এবং সিটিসি-র টি-৮ বাস দাঁড়ায়। বাস ঢোকা এবং বেরনোর সময় সমস্যা হয়। সব ক’টি বাস এক সঙ্গে ঠিকমতো দাঁড়াতে পারে না। অনেক সময় সিটিসি-র বাসগুলি ইস্ট-ওয়েস্ট রোডের উপরই দাঁড়িয়ে থাকে। সিটিসি-র টি-৮ রুটের ইন্সপেক্টর সুহাসকুমার বসু বলেন, “আমাদের এই রুটে ২০-২৫টি বাস চলে। বাস স্ট্যান্ডে বাসগুলির ঘোরাতে অসুবিধা হয়। এই স্ট্যান্ডে মিনিবাসের সংখ্যাও প্রচুর। ফলে যানজট হয়ে যায়। রাতেও বাসগুলি স্ট্যান্ডে ঢুকতে পারে না।” তা ছাড়া টিকিয়াপাড়া স্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ডটির দূরত্বও অনেক।
নতুন বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি হয়েছে টিকিয়াপাড়া স্টেশনের পাশেই। হাওড়া উন্নয়ন সংস্থা বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি করেছে। এইচআইটি সূত্রে খবর, ২০০৩-এ এইচআইটি ইস্ট-ওয়েস্ট রোডের পাশে এই নতুন বাস স্ট্যান্ড তৈরি শুরু করে। ২০০৬-এ কাজ শেষ হয়েছে। খরচ পড়েছে প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু এখনও উদ্বোধনই হয়নি।
ছবি: রণজিৎ নন্দী
নতুন বাস স্ট্যান্ডে বাস ঢোকা এবং বেরনোর জন্য আলাদা চ্যানেল করা হয়েছে। একটি টিকিটঘর ও ক্যান্টিন করা হয়েছে। পুরো স্ট্যান্ডে ভেপারের আলো লাগানো হয়েছে। শৌচাগার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে জলের সংযোগ দেওয়া হয়নি। রয়েছে বাস-বেও। স্ট্যান্ডের বাস ছাড়াও ইস্ট-ওয়েস্ট রোড দিয়ে যাওয়া বাসগুলি বাস-বে দিয়ে যাতায়াত করবে। এর ফলে যাত্রীরা নিরাপদে বাসে ওঠানামা করতে পারবেন। বাস-বের জন্য নটবর পাল রোড থেকে ইস্ট-ওয়েস্ট রোডের সমান্তরাল একটি রাস্তা করা হয়েছে। এর জন্য খরচ পড়েছে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। কিন্তু অভিযোগ, বাস স্ট্যান্ডটি এখন লরি, ম্যাটাডরের গ্যারাজে পরিণত হয়েছে। এখানে লরিতে মালপত্র ওঠান-নামান হয়। গজিয়ে উঠেছে ঝুপড়ি।
কিন্তু ৫ বছর কেটে গেলেও বাস স্ট্যান্ডটি চালু হল না কেন?
মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “পুরসভাকে বাস স্ট্যান্ড হস্তান্তর করা হয়নি। ওখানে কিছু স্থানীয় সমস্যা আছে। বিদ্যুৎ খরচ কে বহন করবে তা নিয়েও জটিলতা আছে। আরও কিছু সমস্যাও আছে। আমি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে যত তাড়াতাড়ি বাস স্ট্যান্ডটি চালু করার ব্যবস্থা করব। অন্য স্ট্যান্ডের কিছু বাসকেও টিকিয়াপাড়া থেকে ছাড়া হবে। যাত্রীরা টিকিয়াপাড়া থেকেই বাসে কলকাতা যেতে পারবেন।”
এইচআইটি-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার শিখরেশ দত্ত বলেন, “আমরা বাস স্ট্যান্ড তৈরি করে দিয়েছি। কিন্তু বাস স্ট্যান্ডটি চালু করা জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব। এ বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে অনেক আলোচনা হয়েছে। পুলিশের নির্দেশ মতো আমরা পাঁচিল করে দিয়েছি। এইচআইটি-র তরফে বাস স্ট্যান্ড হস্তান্তর করার জন্য জেলাশাসক, পুর কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
জেলাশাসক সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ বলেন, “বাস স্ট্যান্ড তৈরির পরে পুরসভাকে হস্তান্তরের করতে হয়। সেটা না হলে জেলা প্রশাসন কিছু করতে পারবে না। হস্তান্তরের পরে বাস স্ট্যান্ড চালু করা সম্ভব। নতুন বাসরুটের বিষয়টি পরে ভাবা হবে।” এইচ আইটি সূত্রে খবর, জেলা প্রশাসন না জানালে হস্তান্তর সম্ভব নয়।

চার পেরিয়ে
চার বছর পূর্ণ হল নিবেদিতা সেতুর। সেই উপলক্ষে গত ৪ জুলাই বালি টোল প্লাজায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল দ্বিতীয় বিবেকানন্দ সেতু টোলওয়ে সংস্থা। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনার সঙ্গে জাতীয় সড়কের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ৬.১ কিমি দৈর্ঘ্যের এই সেতু তৈরি করা হয়েছে। দক্ষিণেশ্বর থেকে শুরু হয়ে গঙ্গার উপর দিয়ে সেতুটি বালি রাজচন্দ্রপুর টোলপ্লাজা হয়ে ২ ও ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগস্থলে গিয়ে মিশেছে। ২৭ বছরের জন্য সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে দ্বিতীয় বিবেকানন্দ সেতু টোলওয়ে সংস্থা। এ দিনের অনুষ্ঠানে সেতুর বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন প্রজাতির বাহারি গাছের চারা রোপণ করা হয়। টোলওয়ে সংস্থা সূত্রে খবর, সেতুর বিভিন্ন অ্যাপ্রোচ রোড ও অন্যান্য অংশে সবুজায়ন করার জন্যই এই বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি। এ দিন ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া এবং টোলওয়ে সংস্থার বিভিন্ন কর্তা উপস্থিত ছিলেন।
Previous Story

Howrah

Next Item




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.