|
|
|
|
সিপিএম পরিবারের বধূকে গণধর্ষণ, ধৃত ৩ তৃণমূল-কর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল |
প্রয়াত সিপিএম নেতার স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল তিন জনকে। ধৃত তিন জনই এলাকায় তৃণমূল-কর্মী বলে পরিচিত।
ঘটনাটি খানাকুলের শশাপোতা গ্রামের। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই নানা ঘটনায় বারেবারেই উত্তপ্ত হয়েছে এই গ্রাম। মারপিটও হয়েছে সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে। সিপিএমের বহু লোক ঘরছাড়া হয়েছেন। এরই মধ্যে সোমবার রাতে এই ধর্ষণের ঘটনা।
ওই মহিলা নিজেকে ‘কট্টর সিপিএম সমর্থক’ বলে দাবি করেছেন। বছর পঁয়তাল্লিশের ওই মহিলার দুই মেয়ে বিবাহিতা। ছেলে বাইরে থাকেন। মহিলা বলেন, “মদ খেয়ে তৃণমূলের ছেলেরা প্রায়ই ঘরের দরজা ধাক্কাধাক্কি করত। কুপ্রস্তাব দিত। সোমবার রাত ৯টা নাগাদ ঘরে আগুন দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কয়েক জন দরজা খুলতে বাধ্য করে। ৫০০ টাকা চায়। কেন টাকা দিতে হবে প্রশ্ন করাতে আমার ছেলের বয়সী ওই ছেলেগুলো চড়াও হয়। আমার সঙ্গে নোংরামি করে।” |
|
পুলিশি হেফাজতে অভিযুক্তেরা। মোহন দাস |
বৃহস্পতিবার রাতে থানায় কয়েক জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। এত দেরিতে কেন এলেন থানায়? মহিলার যুক্তি, “প্রতিবেশীদের ঘটনার কথা বলেছিলাম। সকলে মুখে কুলুপ এঁটে থাকারই পরামর্শ দেয়। থানায় নিয়ে যাওয়ার মতো লোক নেই গ্রামে। বৃহস্পতিবার গ্রামের তিনটি ছেলে অবশেষে আমার সঙ্গে থানায় যেতে রাজি হয়।” মহিলা জানান, খানাকুল থানায় পৌঁছলে বাইরে তাঁকে ডেকে নেন তৃণমূলের কয়েক জন। গ্রামে আলোচনার মাধ্যমে সব কিছু ‘মিটিয়ে নিতে’ বলেন। গ্রামে ফিরে যান ওই মহিলা। তাঁর কথায়, “তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, আমাকে অভিযোগ করতে দেবে না ওরা। এরপরেই পলাশপাইয়ের চকমাধুরী গ্রামে বাপের বাড়ি চলে যাই।” সকলকে ঘটনার কথা বলেন। বিষয়টি জেনে আরামবাগের সাংসদ সিপিএমের শক্তিমোহন মালিক মহিলার কাছে আসেন। তাঁরই উদ্যোগে পুলিশ মহিলার বাপের বাড়িতে গিয়ে অভিযোগ নথিভুক্ত করে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল-কর্মী গোবিন্দ মাকাল, কৈলাশ কাঁজি ও মধুসূদন রঙকে। কার্তিক কাঁজি নামে আর এক অভিযুক্তের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সিপিএমের খানাকুল জোনাল কমিটির সম্পাদক আজিজুল হক বলেন, “খানাকুলের ইতিহাস কলঙ্কিত করছে তৃণমূল। নিন্দার ভাষা নেই।” অন্য দিকে, তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ রহমান বলেন, “অভিযুক্তেরা তৃণমূলের কি না, জানা নেই। তবে যে দলেরই হোক না কেন, কঠোর শাস্তির দাবি করছি।” শুক্রবার আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয় ওই মহিলার। ধৃতদের এ দিন আরামবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সকলকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। |
|
|
|
|
|