|
|
|
|
পঃবঙ্গের ‘কোণঠাসা’ বামেদের পাশে ত্রিপুরার কমরেডরা |
আশিস বসু • আগরতলা |
পশ্চিমবঙ্গের কমরেডদের পাশে দাঁড়ালেন ত্রিপুরার বামপন্থীরা। গত ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই---টানা এক সপ্তাহ ধরে মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রার মাধ্যমে বঙ্গের কমরেডদের জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ করে ‘সংহতি সপ্তাহ’ পালন করল ত্রিপুরার বামফ্রন্ট।
সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক বিজন ধরের কথায়, “পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই সিপিএম তথা বাম-কর্মীদের লাগাতার হামলার ঘটনার প্রতিবাদেই এই সংহতি সপ্তাহ পালন করা হল। খুন, জখম, সন্ত্রাসের যে ‘রাজনীতি’ পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে, তার প্রতিবাদে ত্রিপুরার মানুষ পথে নেমেছে। এই আন্দোলনে সমস্ত বাম দলই সামিল হয়েছে।”
গত সাত দিনে রাজ্যের প্রায় ১২৫টি জায়গায় মিছিল ও প্রতিবাদী বিক্ষোভ সভার মাধ্যমে ত্রিপুরার সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের সব শরিক দল পশ্চিমবঙ্গের বাম সমর্থক ও কর্মীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও আন্দোলন চলেছে আঞ্চলিক স্তরেও। রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রসের জোট সরকারের আমলে বামপন্থীদের উপর যে সন্ত্রাস চলছে রাজ্যের মানুষ একযোগে তার প্রতিবাদ করেছে।
গত কাল আগরতলায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। প্রকৃত পক্ষে গত সাত দিন ধরে সিপিএমের তথা বামফ্রন্টের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে রাজ্য উত্তাল হয়ে উঠেছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর ঘোষণা করেছেন, ‘‘পশ্চিবঙ্গের ‘সন্ত্রাসের রাজনীতি’-র প্রতিবাদে প্রয়োজনে এ রাজ্যে লাগাতার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’’
সমাবেশে বাম নেতারা বলেন: পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ এবং আক্রান্ত বাম কর্মীদের পাশে দাঁড়াতেই ত্রিপুরায় পালিত হল ‘পশ্চিমবঙ্গ সংহতি সপ্তাহ’। এ প্রসঙ্গে পুরনো স্মৃতি উস্কে দিলেন বিজনবাবু। তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালে ত্রিপুরাতে বামফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলেও একই রকম সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। সে সময় ত্রিপুরাতেও বামপন্থীদের উপর নেমে আসে চরম আক্রমণ। পশ্চিমবঙ্গেও নয়া শাসক জোটের লক্ষ্যই হল, নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর বামপন্থীদের ‘পুনর্জাগরণ’ প্রতিহত করা। রাজ্যের জনগণকে সম্ভাব্য সব রকম উপায়ে ‘সন্ত্রস্ত’ করা। গ্রামে গঞ্জে ‘অস্ত্র’ উদ্ধারের ‘মিথ্যা অজুহাতে’ বামপন্থীদের উপর আক্রমণ তাই তীব্রতর করা হচ্ছে।
প্যারাডাইস চৌমুহনিতে বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিতি ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সভাপতি ব্রজগোপাল রায়, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রশান্ত কপালি ও আরএসপি নেতা কালীপদ ভট্টচার্য। তাঁরা জানান, সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থীরা ঘুরে দাঁড়াবে। ১৯৮৮-১৯৯২, এই পাঁচ বছরে কংগ্রেস জোট সরকার ত্রিপুরায় কমিউনিস্টদের মুছে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল। তাদের সে চেষ্টা ব্যর্থ করে আবার বামফ্রন্ট সরকার এ রাজ্যে ক্ষমতাসীন হয়ে গত ১৮ বছর ধরে রাজ্যপাট সামলাচ্ছে। বাম নেতাদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিস্টদের আক্রমণ করে, সন্ত্রাস চালিয়ে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট তাদের নির্মূল করার যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তা বাস্তবায়িত হবে না। |
|
|
|
|
|