|
|
|
|
|
নাগরিক উদ্যোগেই প্রেসিডেন্সি
ফের এগোবে, বিশ্বাস অমর্ত্যের
নিজস্ব সংবাদদাতা |
|
এক সময় নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে হিন্দু কলেজের এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি হয়েছিল।
সময়ের সঙ্গে তার নাম বদলে হয়েছে প্রেসিডেন্সি কলেজ। ক্রমে তা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছে।
প্রায় ২০০ বছর পরে ফের নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই প্রেসিডেন্সির উন্নয়নের পথ নির্ধারিত হচ্ছে। এ ভাবেই যেন প্রেসিডেন্সির একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ হল বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
প্রেসিডেন্সির জন্য রাজ্য সরকারের গড়া মেন্টর গ্রুপের মুখ্য উপদেষ্টা অমর্ত্যবাবু। শুক্রবার সন্ধ্যায় টাউন হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রেসিডেন্সি নিয়েই এক দফা কথা হয় তাঁর। আলোচনায় ছিলেন মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুগত বসু। পরে অমর্ত্যবাবু বলেন, “প্রেসিডেন্সি যখন হিন্দু কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল, তখন সেটা ছিল একটা নাগরিক উদ্যোগ। ডিরোজিও এবং আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলে ঠিক হত, কলেজ কী ভাবে চলবে। এখন ফের নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টা ফিরে আসছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা হল? |
|
ভাল তো: অমর্ত্য সেনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার টাউন হলে। অশোক মজুমদার |
অমর্ত্যবাবু বলেন, “কোন ভাবনা থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রেসিডেন্সির জন্য মেন্টর গ্রুপ গড়েছেন, সেটাই ওঁর কাছে জেনেছি। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য আর কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, মেন্টর গ্রুপ যা পরামর্শ দেবে, তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।”
জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে মেন্টর গ্রুপের প্রথম বৈঠক বসার কথা। অগস্টে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রেসিডেন্সি নিয়ে প্রথম রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা মেন্টর গ্রুপের। অমর্ত্যবাবু এ দিন বলেন, “আমি মেন্টর গ্রুপের সদস্য নই, উপদেষ্টা। সুগতেরা যখন যেমন উপদেশ চাইবেন, আমি দেব।” পরক্ষণেই রসিকতা করে বলেন, “উপদেশ না-চাইলে অবশ্য ওঁদের কোনও ভাবে শাসাব না।”
তবে এ দিনই মেন্টর গ্রুপের উদ্দেশে কয়েকটি উপদেশ দিয়েছেন ওই প্রবীণ অর্থনীতিবিদ। অমর্ত্যবাবু বলেন, “কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হওয়ায় এখন প্রেসিডেন্সির অনেক দিক নিয়ে ভাবার দরকার আছে। যেমন গবেষণা। এটা নিয়ে মেন্টর গ্রুপের ভাবার দরকার আছে।” পাশাপাশি প্রেসিডেন্সির কাউন্সিলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার জন্য মেন্টর গ্রুপকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেন, “প্রেসিডেন্সির একটি কাউন্সিল আছে, উপাচার্য আছেন। সেটা ভুলে গেলে চলবে না। ওঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। যৌথ ভাবে ভাবতে হবে, কী করে প্রেসিডেন্সির ভিত্তি দৃঢ় করা যায়। কী ভাবে কাজের গতি বাড়ানো যায়।”
প্রেসিডেন্সির মানের অবনতি নিয়ে নানা কথা শুনলেও এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অমর্ত্যবাবু। তাঁর কথায়, “এই ব্যাপারে বলতে গেলে তথ্য-পরিসংখ্যানের যথেষ্ট বিশ্লেষণ প্রয়োজন, যা আমি করিনি।” তবে তিনি বলেন, “শুধু প্রেসিডেন্সিকে দেখলেই চলবে না। রাজ্যের উচ্চশিক্ষার নানা দিক কী ভাবে উন্নত করা যায়, সেটাও মাথায় রাখতে হবে।” অমর্ত্যবাবুর মতে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমানে বেসু), আইআইটি, আইআইএম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানও যথেষ্ট ভাল।
সুগতবাবুও অনেকটা একই কথা বলেন এ দিন। তাঁর কথায়, “প্রেসিডেন্সিকে বিচ্ছিন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে না-দেখে রাজ্যের উচ্চশিক্ষার অঙ্গ হিসেবে দেখাই ভাল। প্রেসিডেন্সির উন্নয়ন তাই অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে। তাতে রাজ্যে উচ্চশিক্ষার সার্বিক চিত্রটাই ভাল হতে পারে।” উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু আগেই জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্সির মেন্টর গ্রুপ যে-সব পরামর্শ দেবে, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও সেগুলি প্রয়োগ করার চেষ্টা করবে রাজ্য সরকার। |
|
|
|
|
|