বকেয়া অর্থ চেয়ে রাজ্য চিঠি দিচ্ছে ইনফোসিস, উইপ্রোকে
কেয়া অর্থের দাবি জানিয়ে আগামী সপ্তাহেই ইনফোসিস এবং উইপ্রোকে চিঠি দিচ্ছে রাজ্য।
রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী ও হিডকোর চেয়ারম্যান শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, জমির মোট দামের ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিয়েছে দুই সংস্থাই। কিন্তু ৭৫ শতাংশ টাকা দেওয়া এখনও বাকি। আর এই টাকা মেটানো নিয়েই ওই দুই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে আগামী সপ্তাহে চিঠি দেবে রাজ্য। প্রত্যাশিত ভাবেই এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি দুই সংস্থার মুখপাত্র। তবে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হলে বা নিদেন পক্ষে পুরোপুরি হস্তান্তরযোগ্য জমি দেখালে, টাকা মেটাতে দেরি করা হবে না বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে তারা।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বার শিল্পমহলের মুখোমুখি হওয়ার সময় থেকেই বার বার তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উপর বিশেষ জোর দেওয়ার কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই লক্ষ্যে তৈরি করা হচ্ছে একটি উপদেষ্টা কমিটি। যার নেতৃত্বে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের প্রাণপুরুষ এন আর নারায়ণমূর্তি-কে আনতে চায় রাজ্য। অথচ জমি নিয়ে সেই নারায়ণমূর্তিরই হাতে গড়া সংস্থা ইনফোসিসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তাঁদের মতে, এই একই সমস্যা তৈরি হচ্ছে উইপ্রো-র সঙ্গেও।
এক দিকে রাজ্য প্রশাসনের একটি অংশ মনে করে, জমি বাবদ পুরো অর্থ না দিলে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। শ্যামাপদবাবুর কথায়, “নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জলের লাইন পৌঁছে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে রাস্তা। দেওয়া হয়েছে বিদ্যুতের লাইনও। এখন পুরো টাকা দিয়ে দিলেই যত দ্রুত সম্ভব জমি হস্তান্তর করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “ওই দু’টি জমি ‘ডেভেলপ’ করতে বা পরিকাঠামো গড়া শেষ করতে অল্প কাজই বাকি। এ নিয়ে হিডকোর সঙ্গে আলোচনায় বসুক দুই সংস্থা। তার পর প্রাচীর দিয়ে জমি ঘেরারও অনুমতি দেওয়া হবে।” কিন্তু পুরো অর্থ না-মেটানো পর্যন্ত জমি ‘ডেভেলপ’ করার কাজ শেষ হওয়া সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট জানান তিনি।
উল্টো দিকে, পুরোপুরি হস্তান্তরযোগ্য জমি দেখালেই তারা বাকি দাম মিটিয়ে দিতে তৈরি বলে জানিয়েছে দুই সংস্থা। এর মধ্যে আবার জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই নতুন রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল ইনফোসিস। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, এর মূল লক্ষ্য ছিল রাজারহাটে এ রাজ্যে নিজেদের প্রথম ক্যাম্পাস গড়ে তোলার বিষয়ে সরকারের মনোভাব আঁচ করা। এ জন্য কলকাতায় আসার কথা ছিল ইনফোসিসের গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার-এর দায়িত্বে থাকা চন্দ্রকেতু ঝা এবং ভুবনেশ্বরে সংস্থার প্রধান নিলাদ্রি মিশ্রের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে দাবি, এই বৈঠক করার জন্য একাধিক বার বার্তা পাঠিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটি। কিন্তু বিভিন্ন দফতরের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা সেরে তবেই তাদের মুখোমুখি হতে চায় রাজ্য। যে কারণে এই বৈঠক এখনও হয়ে ওঠেনি। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তাঁকে ইনফোসিসের সদর দফতর বেঙ্গালুরু যাওয়ার আমন্ত্রণও পাঠিয়েছেন সংস্থার অন্যতম শীর্ষ কর্তা ক্রিস গোপালকৃষ্ণন। বরং তাঁর অভিযোগ, টাকা নিয়েও জমি না দিয়ে ইনফোসিস এবং উইপ্রো-কে জলে ফেলে দিয়ে গেছে পূর্বতন বাম সরকারই।
হস্তান্তরযোগ্য জমি দেখালে বাকি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে উইপ্রো-ও। সংস্থা সূত্রে খবর, বর্ষা শুরুর আগেই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিতে চেয়েছিল তারা। আশা ছিল, মে মাসের শেষেই হাতে আসবে জমি। কিন্তু তা হয়নি। তাদের অভিযোগ, প্রকল্পের জমির মধ্যে নালা সরিয়ে দেওয়ার কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এত দিন নালার জল ব্যবহার করে চাষও করা হয়েছে ওই জমিতে। তাই হিডকো-র সঙ্গে আলোচনা করেই ওই ফসল কাটার সুযোগ এবং সময় দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থার দাবি। তারা জানিয়েছে, এই সব সমস্যা মিটলেই বকেয়া টাকা মিটিয়ে জমি হাতে নিতে তৈরি তারা। প্রস্তুত প্রকল্প নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিতেও। কারণ, কর্ণধার আজিম প্রেমজির দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো জুন মাসেই তা শুরু করতে চেয়েছিল তারা।
এই দুই সংস্থার জমি নিয়ে কোনও সমস্যা রয়েছে কি-না, এ প্রশ্নের উত্তরে শ্যামাপদবাবু জানান, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে সরকার আর জমি অধিগ্রহণ করবে না। তবে যে সামান্য জমি এখনও নেওয়া বাকি রয়েছে, তা কথা বলে কিনে নেওয়া হবে।” এ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলেই তাঁর দাবি।
First Page Business Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.