বেহাল কাঁচা রাস্তা মেরামতের জন্য বারবার পঞ্চায়েতে দরবার করে লাভ হয়নি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এক হাঁটু কাদা জমেছে। রাস্তা বসে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লক সদর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছেন চণ্ডীপুর অঞ্চলের গৌরীপুর, কাজিজান, দ্বিনগর ও সিহর গ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত তিন হাজার বাসিন্দা। তবু পঞ্চায়েত কর্তাদের কেউ ফিরে তাকায়নি। তাই এ বার দুর্ভোগ কাটাতে আর প্রশাসনের সাহায্যের আশায় বসে না থেকে তাঁরা ঘাম ঝড়িয়ে নিজেরাই প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করে দৃষ্টান্ত গড়লেন। বিভিন্ন বাড়ি থেকে চাঁদা তুলে ইঁট, সুড়কি ও বালি কিনে শুক্রবার স্বেচ্ছাশ্রমে ওই রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়। রাস্তার খানাখন্দ ভরাট করে সকাল থেকে দিনভর হইহই করে কাজ করেন তাঁরা। বাসিন্দাদের ওই উদ্যোগের খবর পেয়ে আরএসপি পরিচালিত তপন গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, “খুব ভাল কাজ। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকা করার জন্য জেলা পরিষদে আবেদন করেছিলাম।” |
এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বেহাল রাস্তার সমস্যা আজকের নতুন নয়। প্রায় দশ বছর থেকে তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এর আগে একবার দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার হাসপাতাল মোড়ের দিক থেকে মাত্র ১০০ মিটার এলাকায় ইঁট বিছানো হয়। অজ্ঞাত কারণে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু বলেন, “স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি বেহাল রাস্তাটি মেরামতের কাজ করতে পারতো। কেন তা হয়নি খোঁজ নিয়ে দেখব।” তপন দিঘির পশ্চিমপাড়ে ব্লক হাসপাতাল থেকে তপন চণ্ডীপুর অঞ্চলের কাজিভাগ পর্যন্ত ওই রাস্তার উপরে নির্ভরশীল গৌরীপুর, কাজিজান, দ্বিনগর ও সিহর ছাড়াও পাশের রামচন্দ্রপুর, মুরারীপুর, দাউচা এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা। ওই রাস্তা দিয়ে তাঁরা ব্লক সদর, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজে যাতায়াত করেন। অলোক সরকার, সুদেব দাসের মতো স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তা মেরামতের জন্য বিভিন্ন মহলে কয়েক দফায় আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। তাই এ বার আর আবেদন না-করে নিজেরা রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করেছেন। রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দারা জানান, বেহাল রাস্তার জন্য রাতে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হয় না। চাষিরা সময় মতো খেতের ফসল নিয়ে হাটে যেতে পারেন না। সমস্যা মেটাতে তাঁরা চাঁদা তুলেছেন। |