বিভিন্ন এলাকায় জুনের প্রথম বন্যার পরে যে আন্ত্রিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা এখন নিয়ন্ত্রণে বলেই দাবি করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি, ফের বন্যা হতে পারে, এই আশঙ্কা থেকে আগাম পদক্ষেপও করা হচ্ছে। মজুত করা হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র। তৈরি রয়েছে মেডিক্যাল টিম। প্রথম বর্ষায় বিস্তীণর্র্ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় ১০৪০ জন আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সের মানুষই আছেন। তাঁদের কেউ কেউ এখনও চিকিৎসাধীন। সর্দি-কাশিতে অসুস্থ হয়েছিলেন ১২৮৯ জন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্রের বক্তব্য, “অতিবৃষ্টি হলে বন্যার আশঙ্কা থাকছেই। তাই আগাম সব ধরনের প্রস্তুতি সারা হচ্ছে। প্রথম বারের বন্যায় জল নামার পরে বিস্তীণর্র্ এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরাও কাজ করছেন।” আক্রান্ত গ্রামবাসীরা স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বক্তব্য, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে সাব-সেন্টারগুলিকেই সতর্ক করা হয়েছে।” প্রথম বর্ষায় অতিবৃষ্টি এবং বাঁধ ভেঙে জেলার ডেবরা, দাসপুর, ঘাটাল, কেশপুরের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। দু’-তিন দিন ধরে জল জমে থাকার ফলে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। অনেকে আন্ত্রিকে আক্রান্ত হন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “আক্রান্তদের শরীরে রোগের প্রাথমিক লক্ষণ মাত্র দেখা গিয়েছে। গোড়ায় চিকিৎসা শুরু হওয়ার ফলে পরিস্থিতির আর অবনতি হয়নি।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলায় আন্ত্রিকে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল ডেবরাতেই। এখানে সব মিলিয়ে ৭৯৮ জনের শরীরে আন্ত্রিকের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয়। বর্ষা এলে সাপের উপদ্রবও বাড়ে। এ বারও তাই হয়েছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত ২২ জন সর্পদষ্ট হয়ে চিকিৎসাধীন।
বর্ষার শুরুতেই স্বাস্থ্য দফতর একটি ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করেছে। এলাকা প্লাবিত হলে, রোগের প্রাদুর্ভাব হলে কী ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে, তারই বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে সেখানে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন। প্রথম দফার বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ৩৪টি মেডিক্যাল টিম জেলা জুড়ে কাজ করেছে। |