প্রায় পাঁচ মাস ধরে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অ্যাকাউন্টস ম্যানেজারের পদ ফাঁকা থাকায় জননী সুরক্ষা যোজনায় সরকারি আর্থিক সাহায্য পাচ্ছেন না প্রসূতিরা। অবিলম্বে ওই পদে নিয়োগ না করা হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কংগ্রেস, সিপিএম ও করণদিঘি নাগরিক সমিতি। তাদের অভিযোগ, প্রতিদিন ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রসূতি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতাল সংলগ্ন ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে যোজনার আর্থিক বরাদ্দ নিতে এসে ঘুরে যাচ্ছেন। করণদিঘি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রামকৃষ্ণ ঘোষ বলেন, “গত ফেব্রুয়ারি মাসে ওই পদাধিকারী প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক পদে চাকরি পেয়ে অক্যাউন্ট ম্যানেজার পদ ছেড়ে যান। সেই থেকে প্রশাসনিক জটিলতায় প্রসূতিদের জননী সুরক্ষা যোজনায় আর্থিক সাহায্য বিলি করা যাচ্ছে না। যোজনা তহবিলে টাকার অভাব নেই। সমস্যার কথা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিধান মিত্র বলেন, “বিএএম ছাড়া জননী সুরক্ষা যোজনার আর্থিক সাহায্য বিলির এক্তিয়ার কারও নেই। বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ওই পদে নিয়োগ করা যায়নি। জুলাই মাসের মধ্যে ওই পদে নিয়োগ করে যোজনার আর্থিক সাহায্য বিলি করা হবে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ বছরের ঊর্ধ্বে বিপিএল তালিকাভূক্ত প্রসূতিরা সরকারি হাসপাতালে প্রসব করলে দু’দফায় জননী সুরক্ষা যোজনায় ১ হাজার টাকা পান। পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে হাতুড়েদের কাছে প্রসবের ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ওই প্রকল্প চালু করে। করণদিঘি ব্লকের ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ডালখোলা পুরসভা এলাকার প্রসূতিদের প্রসব করানোর জন্য করণদিঘি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রতি মাসে গড়ে ১১০ জন প্রসূতির প্রসব হয়। তার মধ্যে ৮০ শতাংশ বিপিএল তালিকাভুক্ত হওয়ায় তাঁরা জননী সুরক্ষা যোজনার আওতায় পড়েন। বিএএমের চাকরি ছেড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরিতে যোগ দেন অঙ্গিরা সেনগুপ্ত। সেই থেকে টাকা বিলি বন্ধ রয়েছে। অথচ ওই তহবিলে কয়েক লক্ষ টাকা পড়ে আছে জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা জানান। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য দফতরের গফিলতির জেরেই প্রসূতিরা সরকারি আর্থিক সাহায্য পাচ্ছেন না। দ্রুত সমাধান না হলে আন্দোলনে নামা হবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব পাল বলেন, “বিএএম নিয়োগের দাবি তুলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে।” |