|
|
|
|
তৃণমূল শ্রমিক নেতাকে খুনের হুমকি, তদন্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের এক জেলা নেতাকে ফোন করে খুনের হুমকি দেওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানায়, শিলিগুড়ির ওই তৃণমূল নেতার নাম বিজন নন্দী। তিনি ‘জন’ নামে ওই এলাকায় পরিচিত। তাঁর ভাই জয়দীপ নন্দী শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। বুধবার ও বৃহস্পতিবার পর পর দু’দিন রাত ১১টার পরে জনবাবুর মোবাইল নম্বরে ফোন করে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে দুষ্কৃতীরা। ৮ মে রাতে তৃণমূলের ওই নেতার বাড়ি সংলগ্ন একটি বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন ব্যবসায়ী যুবক নিখিল সরকার। ফের ওই এলাকাতেই তৃণমূল নেতাকে খুনের হুমকি দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গৌতম দেব। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার আনন্দ কুমারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই হুমকির পেছনে কারা রয়েছে তা বের করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “কিছুদিন আগেই ওই এলাকাতে এক যুবক খুন হন। এবারে ফের আমাদের এক শ্রমিক নেতাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত যাতে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা যায় সে ব্যপারে উদ্যোগ নিতে বলেছি।” পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার তদন্তে শুরু করেছেন। পুলিশ ওই দুষ্কৃতীর ‘কণ্ঠস্বর রেকর্ড’ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ এগোতে চাইছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার বলেন, “মোবাইল ফোনের উপর নজর রেখে দুষ্কৃতীর গতিবিধি লক্ষ্য করা হচ্ছে। খুব দ্রুত দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা যাবে।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিজন নন্দীকে যে মোবাইল থেকে ফোন করা হচ্ছে সেটি বিহারে রয়েছে। পর পর দু’দিন বিহারের দুটি জায়গা থেকে একই মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। যে মোবাইল নম্বর থেকে ওই ফোন করা হচ্ছে তার সিম কার্ডের মালিকের নাম পেয়েছে পুলিশ। শিলিগুড়ি সংলগ্ন একটি এলাকার এক ব্যক্তির নামে ওই সিম কার্ডটি তোলা হয়েছে। পুলিশ সন্দেহ করছে, জনবাবুর কোনও পরিচিত কেউ ওই ঘটনার পেছনে থাকতে পারে। এলাকায় ইন্ডিয়ান অয়েলের ক্যারিং কনট্রাক্টর হিসেবে পরিচিত বিজনবাবু। এ ছাড়াও এনজেপি এলাকায় সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুকে কোণঠাসা করে তৃণমূলের শ্রমিক ইউনিয়নকে চাঙ্গা করার পেছনে তাঁর ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে তিনি আইএনটিটিইউসির দার্জিলিং জেলা কোর কমিটির সদস্য। সবগুলি দিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিজনবাবু মন্তব্য করতে চাননি। বুধবার রাত ১১টা নাগাদ প্রথম ফোন করে নিখিল সরকার খুনের মামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে তৃণমূলের ওই শ্রমিক নেতাকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। ওই দিন রাত ১২টা পর্যন্ত বার কয়েক ফোন করে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ ফের ওই একই নম্বর থেকে ফোন যায় বিজনবাবুর মোবাইলে। ওই দিন ফোনে বিজনবাবুকে ওই দুষ্কৃতী জানায়, ৩ লক্ষ টাকায় তাঁকে খুন করার সুপারি নিয়েছে সে। ৫ লক্ষ টাকা দিলে সে তৃণমূল নেতাকে খুন করবে না বলে আশ্বাস দেয়। ৫ লক্ষ টাকা দিলে যে সুপারি দিয়েছে তাকেই খুন করা হবে বলে ওই দুষ্কৃতী জানায়। শুক্রবার রাতে ফের ফোন করে বিজনবাবুর মত নেবে বলে জানায়। বৃহস্পতিবারের ওই দুষ্কৃতীর সঙ্গে বিজনবাবুর কথা রেকর্ড করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, নিখিল সরকার খুনের ঘটনায় ২ অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে তুলেছে। বিজনবাবুর ভাই তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী বলেন, “এনজেপি এলাকায় সংগঠন শক্তিশালী করার ব্যাপারে দাদার ভূমিকা রয়েছে। বিরোধী সংগঠন ছেড়ে প্রায় সকলেই আইএনটিটিইউসিতে যোগ দিয়েছেন। এই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক কোনও উদ্দেশ্যে থাকতে পারে বলে সন্দেহ হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|