|
|
|
|
রাজ্যসভায় আসন ১, দৌড়ে আধ ডজন |
সঞ্জয় সিংহ • কলকাতা |
এ রাজ্য থেকে তাদের প্রাপ্য রাজ্যসভার একটি আসন নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে।
প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দেবী পাল এবং দেবী ঘোষালের নাম তো রয়েছেই। সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক প্রদ্যোৎ গুহ, প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখপত্র ওমপ্রকাশ মিশ্রের নামও। তবে এআইসিসি-র সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত শাকিল আহমেদ শুক্রবার বলেন, “আমার কাছে পাঁচ-ছ’টি নাম এসেছে। সকলেই কংগ্রেসের প্রবীণ ও অভিজ্ঞ নেতা। নামগুলি কংগ্রেস হাইকম্যাণ্ডের কাছে পাঠিয়ে দেব। সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী এঁদের মধ্যে কোনও একজনকে রাজ্যসভার প্রার্থী হিসাবে বেছে নেবেন।” শাকিল আরও জানাচ্ছেন, কংগ্রেস নেতৃত্ব চান, রাজ্যে যে জেলায় দলের কোনও প্রতিষ্ঠিত জনপ্রতিনিধি নেই বা প্রতিনিধির সংখ্য নগণ্য, সেই জেলার কোনও নেতাকে রাজ্যসভার আসনে প্রার্থী করতে।
চলতি মাসেই এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভার ছ’টি আসন শূন্য হচ্ছে। আগামী ২২ জুলাই ওই ছ’টি আসনে ভোট। ৫ থেকে ১২ জুলাই মনোননয়ন জমা নেওয়া হবে। রাজ্য বিধানসভায় সদস্য সংখ্যার বিচারে ওই ছ’টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের প্রাপ্য চারটি, বামেদের একটি এবং কংগ্রেসের একটি আসন। কংগ্রেস তাদের নিজেদের বিধায়ক সংখ্যার জোরেই এ বার একজনকে রাজ্যসভায় পাঠাতে পারে। ফলে জয় ‘নিশ্চিত’ জেনে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরে বিভিন্ন গোষ্ঠী তৎপর হয়ে উঠেছে। দিল্লিতে সর্বভারতীয় নেতৃত্বের কাছে যেমন তদ্বির চলছে, তেমনই প্রণববাবু বা শাকিলের মতো নেতারা দলীয় কর্মসূচিতে কলকাতায় এলে তাঁদের কাছেও কেউ কেউ প্রার্থী হওয়ার আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছেন।
বামেদের আসনটিতে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি। অন্য দিকে, তৃণমূলের প্রাপ্য চারটি আসনের মধ্যে দু’টিতে ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সৃঞ্জয় বসুর নাম কার্যত চূড়ান্ত বলেই দলীয় সূত্রে খবর। বাকি দু’টি আসন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন মহলের মতামত নিচ্ছেন। তিনি দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন।
অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি ও রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার অনুগামীদের একাংশ চাইছেন দলের উত্তর ২৪ পরগনার সভাপতি দেবী ঘোষালকে প্রার্থী করতে। ইতিমধ্যেই প্রদেশ ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর কাছে দেবীবাবুর নাম জমা পড়েছে। শাকিল জানিয়েছেন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবী পালও রাজ্যসভায় প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। পিছিয়ে নেই প্রদ্যোৎবাবুও। প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার জন্য একদা আগ্রহী প্রদ্যোৎবাবু এ দিন সরাসরি বলেন, “আমি রাজ্যসভার সদস্য হতে ইচ্ছুক।” আবার ওমপ্রকাশ তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা, দলে তাঁর অবদান ও অবস্থান জানিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন পাঠিয়ে দিয়েছেন। কংগ্রেসের এক সূত্রে জানা গিয়েছে, রীতেশ দত্ত, মায়া ঘোষের মতো নেতা-নেত্রীরাও প্রার্থী হতে চেয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে দলের একাংশ মনে করছেন, ‘অভিজ্ঞতা ও দলে গ্রহণযোগ্যতা’র নিরিখে প্রদীপবাবুরই রাজ্যসভায় যাওয়া উচিত। তাঁদের ব্যাখ্যায়, রাজ্যসভার সদস্য হলে প্রদেশ কংগ্রেসের
সভাপতি হিসাবেও প্রদীপরবাবুর ‘ধার ও ভার’ অনেকটাই বাড়বে। তার ফলে সাংগঠনিক দিক থেকে দলের ভাল হবে। তবে প্রদীপবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। কারণ, গোটা বিষয়টি চূড়ান্ত হবে দিল্লি থেকে। দলের হাইকম্যান্ডই সিদ্ধান্ত নেবে।” বস্তুত, প্রদীপবাবুর কাছেও রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার আবেদন জানিয়ে দু’তিনজন আবেদন করেছেন। প্রদীপবাবু অবশ্য তাঁদের নাম বলতে চাননি। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমার এক্তিয়ারে নয়। আমি সরাসরি আবেদনগুলি দিল্লিতে পাঠিয়ে দিয়েছি।”
পশ্চিমবঙ্গ থেকে তিনি নিজে কি রাজ্যসভার সদস্য হতে পারেন?
জানতে চাইলে শাকিল বলেন, “একেবারেই নয়! এ রাজ্যে ৩৪ বছর ধরে আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা সিপিএমের সন্ত্রাস-অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছেন। সেই সংগ্রামের অংশীদারদের মধ্যেই কোনও নেতা
রাজ্যসভার সদস্য হবেন।” এখন বিধান ভবনে জল্পনা চলছে, কে হবেন সেই নেতা! |
|
|
|
|
|