|
|
|
|
জোট সরকারের ‘দায়িত্ব’ তাঁদেরও, বললেন প্রণব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে জোট সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতার ‘দায়িত্ব’ কংগ্রেসেরও বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়।
দলীয় কর্মীদের ‘মানুষের দায়বদ্ধতা’র কথা স্মরণ করিয়ে দিতে শুক্রবার ধর্মতলায় প্রদেশ কংগ্রেসের সমাবেশে প্রণববাবু স্পষ্ট বলেন,“পশ্চিমবঙ্গকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে বাংলার মানুষ জোট সরকারকে কঠিন দায়িত্ব দিয়েছে। মনে রাখতে হবে, কংগ্রেস জোট সরকারের শরিক। কে বড়, কে ছোট শরিক মানুষ তা বিচার করে না। সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতা দু’টোই শরিক হিসাবে নিতে হবে। সে ভাবেই কাজ করতে হবে যাতে মানুষ পাঁচ বছর বাদে আবার জোট সরকারকেই সমর্থন করে।” প্রণববাবুর কথায় স্পষ্ট যে, তিনি চান, কংগ্রেস কর্মীরা ‘দায়িত্ব’ নিয়ে দলকে ‘জনমুখী’ করে রাখুন।
বিধানসভা ভোটের পরে রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসেকে আরও ‘প্রাসঙ্গিক’ করার জন্যই এ দিন ধর্মতলায় সমাবেশ করে প্রদেশ কংগ্রেস। সমাবেশে প্রণববাবু, শাকিল আহমেদের মতো সর্বভারতীয় নেতাদের পাশাপাশি প্রদীপ ভট্টাচার্য, মানস ভুঁইয়ার মতো প্রদেশ নেতারা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে দলীয় কর্মীদের কাছে ‘স্পষ্ট বার্তা’ দেন। সমাবেশে উপচে পড়া কংগ্রেস কর্মীদের ভিড় দেখে নেতারাও ‘উদ্দীপ্ত’। বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীকে দেখা না গেলেও রায়গঞ্জের সাংসদ দীপা দাশমুন্সি, মন্ত্রী আবু হেনা, প্রমথনাথ রায়, বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত, নেপাল মাহাতো, নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহ, উত্তর ২৪ পরগনার দেবী ঘোষাল প্রমুখরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজ্যে সিপিএমের ৩৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে জোট সরকার গড়ার জন্য কংগ্রেস নেতারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ধন্যবাদ’ দেন। পাশাপাশি তৃণমূলের ‘প্রবল জনপ্রিয়তা’ ও দলে ‘ভাঙনে’র প্রেক্ষিতে কংগ্রেস কর্মীদের ‘উজ্জীবিত’ করতে রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানসবাবু বলেন, “৩৪ বছরে সিপিএমের অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলায় জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনও বাংলার কিছু কিছ জায়গা থেকে কংগ্রেস কর্মীদের চোখের জল পড়ার খবর আসছে। আমরা কংগ্রেস কর্মীদের বলছি, ভেঙে পড়বেন না। কংগ্রেস করবেন মাথা উঁচু করে। অত্যাচারিত কংগ্রেস কর্মীদের পাশে দাঁড়াবেন।” কংগ্রেস কর্মীদের উপর ‘বড় শরিক’ তৃণমূলের হামলা, দলীয় দফতর দখলের নানা অভিযোগ প্রদীপবাবুদের কাছে আসছে। সেই প্রক্ষিতেই মানসবাবুর বক্তব্য বলে দলীয় নেতাদের অনেকেই মনে করছেন।
দেশজুড়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচারের কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস। সেই প্রচারের অঙ্গ হিসাবেই প্রদেশ কংগ্রেস এ দিন সমাবেশ করেছিল। আদতে এই সমাবেশ ছিল ‘জনমানসে কংগ্রেসের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি’ তুলে ধরা। সেই জন্যই রাজ্যে তাঁদের প্রধান প্রতিপক্ষ সিপিএমকে কড়া আক্রমণ করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রণববাবু তো বটেই, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি, এআইসিসি-র সম্পাদক শাকিল, রামচন্দ্র কুন্তিয়া, দলের নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী আবু নাসের খান চৌধুরী (লেবু), পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব, বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়, অজয় দে প্রমুখ। প্রণববাবু সিপিএমকে কটাক্ষ করে বলেন, “ওরা কখনও সনিয়া গাঁধীর কড়ে আঙুল ধরে। কখনও বিজেপি-র বুড়ো আঙুল ধরে। সেই কারণে জাতীয় রাজনীতির প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সিপিএম নেতারা ভুল সিদ্ধান্ত নেন।” বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের ‘সম্পর্ক’ নিয়ে কটাক্ষ করেন শাকিলও। ঘটনাচক্রে এ দিনই কলকাতায় মূল্যবৃদ্ধি ও দুর্নীতির প্রশ্নে কংগ্রেসের কড়া সমালোচনা করেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা তরুণ বিজয়। তিনি বলেন, “আডবাণী দেশের যুবসমাজের কাছে এই হিংস্র এবং দুর্নীতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় সরকারকে ছুড়ে ফেলার আহ্বান জানাবেন। কংগ্রেসের দেশের শাসনক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকারই নেই। দেশের সুরক্ষার পক্ষেও ওরা বিপজ্জনক।” |
|
|
|
|
|