|
|
|
|
|
|
|
সঙ্গীত সমালোচনা... |
|
সংহত রাগ-রূপায়ণে |
বারীন মজুমদার |
সেনিয়া ঘরানার প্রখ্যাত সেতার বাদক ও গুরু উস্তাদ মুস্তাক আলি খানের শতবর্ষ উপলক্ষে জি ডি বিড়লা সভাঘরে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর আয়োজন করেছিল ‘ইউম্যাক’। অনুষ্ঠান বিলম্বে শুরু হওয়ার কারণে সামগ্রিক ভাবে শিল্পীদের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করতে হয়। শতবর্ষ পালনের উৎসব। তাই প্রারম্ভিক কিছু আচার অনুষ্ঠানের পর মূল আসর শুরু হল তরুণ শিল্পী প্রতীক চৌধুরীর সেতার বাদন দিয়ে। শুরুতেই পণ্ডিত কুমার বসুকে বিশেষ ভাবে সম্বর্ধিত করলেন সেনিয়া ঘরানার শিল্পী পণ্ডিত দেবু চৌধুরী। প্রতীক হলেন দেবু চৌধুরীর পুত্র ও শিষ্য। |
|
এ ছাড়াও মুস্তাক আলি খানের কাছেও তাঁর শিক্ষার সুযোগ হয়েছিল যাঁকে তিনি ‘দাদাগুরু’ বলতেন। যথার্থ বাদন ক্রিয়া সম্পর্কে প্রতীক যথেষ্ট সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর বাজনা বেশ সুরেলা, রেওয়াজি ও ধ্বনি মাধুর্যে ভরা। তিনি বাদন শুরু করলেন সান্ধ্যকালীন রাগ ঝিনঝোটি দিয়ে। সীমিত পরিসরে আলাপ পর্বটি নিষ্পন্ন হলেও বিন্যাস পরিকল্পনার নিরিখে তা ছিল সুগঠিত। শিল্পীর সুরেলা ও সংহত রাগ-রূপায়ণে, অলঙ্কারের বৈচিত্রে এই অংশটি উপভোগ্য হয়ে ওঠে। পরবর্তী বেহাগ রাগে সাড়ে আটমাত্রার ছন্দে ছোট ছোট রচনাগুলি ও তিন তালের মধ্যলয় ও দ্রুত গত দু’টির পরিচ্ছন্ন উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের সামগ্রিক সৌন্দর্য অব্যাহত ছিল। তবলা সহযোগিতায় পণ্ডিত কুমার বসু ছন্দের ব্যাপারটিকে মনোহর ও আকর্ষণীয় করে তুলেছিলেন। তাঁর ডান হাতের সুরেলা ঠেকা ও লয়কারি পৃথক উল্লেখের দাবি রাখে। বর্ষাকাল। তাই বর্ষা ঋতুর রাগ মেঘমল্লার দিয়ে যখন খেয়াল শুরু করলেন শেষ শিল্পী রাশিদ খান রাত তখন ন’টা। রাশিদের কণ্ঠে ইতিপূর্বে বহু বার এই রাগটি ও বন্দিশগুলি শোনার সুযোগ হলেও এ দিনও তার উপভোগ্যতায় কোনও বাধা ঘটেনি। এ দিনও তাঁর সেই শৈলীগত আভিজাত্য বজায় ছিল। তাঁর গায়নে তানকারির প্রতি বিশেষ পক্ষপাতিত্ব এবং সরগমের চমকপ্রদ বিন্যাস এক শিল্পসৌন্দর্য গড়ে তোলে। তাঁকে তবলা এবং হারমোনিয়ামে সহযোগিতা করেন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জ্যোতি গোহ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মধুমন্তী মৈত্র। |
|
|
|
|
|